পাকিস্তানের প্রাদেশিক সংসদে নিজেদের ক্ষমতা দেখালো পিটিআই (ভিডিও)
দলের প্রধান নেতা ইমরান খান রয়েছেন কারাগারে, এরপরও সংসদে নিজেদের দাপট দেখালেন পিটিআই সদস্যরা।
গতকাল এক ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয় দেশটির ১৬তম জাতীয় পরিষদের উদ্বোধনী অধিবেশন। এরপর নবনির্বাচিত এমপিদের শপথ পাঠ করান বিদায়ী স্পিকার রাজা পারভেজ আশরাফ।
শপথ অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানপন্থিদের স্লোগানে হঠাৎ উত্তাল হয়ে উঠে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট। ইমরান খানের নামে স্লোগান শুরু করেন তার দল সমর্থিত স্বতন্ত্র এমপিরা। শপথ নেওয়ার পর তারা একযোগে ‘কয়েদি নাম্বার ৮০৪’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
নতুন শপথ গ্রহণকারী আইনপ্রণেতাদের মধ্যে রয়েছেন মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) চেয়ারম্যান নওয়াজ শরীফ, প্রেসিডেন্ট শেহবাজ শরীফ, পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি, কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলি জারদারি ও জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম, ফজলের (জেইউআই-এফ) চেয়ারম্যান মাওলানা ফজলুর রহমানসহ দলগুলোর নির্বাচিত নেতারা। পিটিআই প্রার্থীদের হট্টগোলের মাঝেই শপথ নেন তারা।
তবে এত কিছুর মাঝেও থেমে নেই পিটিআই। সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের সাথে জোট করেছে ইমরানের দল। আর এবার সেই সুন্নি ইত্তেহাদের নেতাই স্পিকার নির্বাচিত হলেন।
আরও পড়ুন: সংকটে থাকা পাকিস্তানকে আরও ঋণ দিচ্ছে চীন, বন্ধুত্ব নাকি ফাঁদ?
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া (কেপি) পরিষদের স্পিকার হয়েছেন সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের সদস্য বাবর সেলিম খান সোয়াতি। ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন তিনি। বাবর সেলিম সোয়াতি ৮৯ ভোট পেয়ে প্রাদেশিক সংসদের স্পিকার নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) মনোনীত প্রার্থী এহসানুল্লাহ মিয়াখেল। তিনি পেয়েছেন মাত্র ১৭ ভোট।
১৯৬২ সালের ৩ জুন মানসেহরার সোয়াতি জাতির প্রভাবশালী জাহাঙ্গীরি পরিবারে জন্ম সেলিমের। তার বংশপরিচয় বেশ উজ্জ্বল। তার পূর্বপুরুষ সুলতান জাহাঙ্গীর গাবরি ছিলেন সোয়াত সালতানাতের শাসক। সেলিম ব্রিটিশ শাসনামলের মানসেহরার চতুর্থ খান নামে পরিচিত জাগিরদার জুম্মাহ খান সোয়াতির নাতি, জাগিরদার জামান খান সোয়াতির নাতির ছেলে। শিখ শাসনামলে জামান খান মানসেহরার তৃতীয় খান নামে পরিচিত ছিলেন।
রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে সেলিম বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি পিটিআইয়ের হাজারা অঞ্চলের আঞ্চলিক ও জেলা প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের সময় ইমরান খান পিটিআই প্রতিষ্ঠা করলে তাকে প্রাদেশিক একটি আসন দেন। সুযোগটি তিনি সফলভাবে কাজে লাগান। পরে তিনি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন।
পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হচ্ছেন তা জানা যাবে আগামী রবিবার। দেশটির জাতীয় পরিষদ সচিবালয় সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যম ডন জানিয়েছে, আগামী ৩ মার্চ পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের (এনএ) জারি করা তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থীরা শনিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। ওইদিনই কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষ হবে।
সংসদে দাপট দেখানোর পাশাপাশি মাঠের আন্দোলনেও সরব থাকার সিদ্ধান্তে অটল আছে ইমরান খানের দল পিটিআই। নির্বাচনে কারচুপির বিরুদ্ধে ২ মার্চ দেশব্যাপী বিক্ষোভের আহ্বান জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব ওমর আইয়ুব। প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) শাহবাজ শরিফকে মনোনীত করেছে। অপরদিকে ওমর আইয়ুব খানকে মনোনীত করেছে পিটিআই।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: