যে কারণে ‘সুপার টুইসডে’ যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ দিন
প্রতীকী ছবি
ঘনিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেণ্ট নির্বাচন। আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন 'সুপার টুইসডে'। তবে এই সুপার টুইসডে কেনো এতো গুরুত্বপূর্ণ? কি হয় দিনে? কেনই বা এই দিনের নাম সুপার টুইসডে হলো? এসব নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খায় অনেকের মনে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে হলে প্রার্থীকে আগে নিজ দলে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হয়। জিতে আসতে হয় অঙ্গরাজ্যগুলোর প্রাথমিক বাছাই পর্বে। সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধিত ভোটাররা নিজ দলের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেন। এরপরই দলের সম্মেলনে বিজয়ী প্রার্থী দলের মনোনয়ন পান। সুপার টুইসডেতে অর্থাৎ এদিন একসঙ্গে এক ডজনের বেশি অঙ্গরাজ্যের প্রাইমারি ও ককাসে ভোট হয়। ভোট দেন লাখো নিবন্ধিত ভোটার। অর্থাৎ এদিন যিনি সবচেয়ে বেশি প্রাথমিক বাছাইয়ে জয় পাবেন, নিশ্চিতভাবে তিনিই এগিয়ে থাকবেন দলীয় মনোনয়নে।
মূলত মার্চ মাসের প্রথম মঙ্গলবারকেই সুপার টুইসডে হিসেবে গণ্য করা হয়। আর এই সুপার টুইসডের বিষয়ে প্রথম ভাবনাটা আসে ডেমোক্র্যাটদের শিবির থেকেই। ১৯৮৮ সালেই একসাথে অনেকগুলো অঙ্গরাজ্যে প্রথম প্রাইমারি নির্বাচনের প্রস্তাব দেন কয়েকজন ডেমোক্র্যাট। এরপর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে প্রচলন ঘটে সুপার টুইসডের।
অতীতের নির্বাচন গুলোতেও দেখা গেছে সুপার টুইসডেতেই অনেকটা ইঙ্গিত পাওয়া যায় কে হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। যেমনটা হয়েছিলো গত নির্বাচনেও। সেই নির্বাচনের আগে সুপার টুইসডের ১০টি অঞ্চলেই জয় পেয়েছিলেন জো বাইডেন। পরবর্তীতে তিনি ডেমোক্র্যাটিক মনোনীত প্রার্থী হয়েছিলেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সাধারণ নির্বাচনে জিতেছিলেন।
তবে এবারের সুপার টুইসডেতে উত্তেজনা অনেকটাই কম। উভয় দলই ইতোমধ্যে তাদের মনোনীত প্রার্থীদের সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেয়েছে। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী নিকি হ্যালি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকলেও প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছেন। এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র একটি প্রাইমারিতে জয়ের দেখা পেয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতোমধ্যেই প্রাথমিক ভোটের প্রতিযোগিতা থেকে ২৪৪ জন প্রতিনিধির ভোট জিতেছেন, তাই মনোনয়ন পেতে তার আরও প্রায় ১০০০ জনের প্রয়োজন। তবে সুপার টুইসডেতে তার সে লক্ষ্যে পৌঁছানোর সম্ভাবনা না থাকলেও তিনি সম্ভবত কয়েকশ প্রতিনিধির ভোট জিতবেন, যা তাকে নিয়ে যাবে বিজয়ের কাছাকাছি। ট্রাম্প এই মাসেই রিপাবলিকান প্রাইমারি শেষ করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ডেমোক্র্যাটিক মনোনয়নের জন্য বাইডেনের কোনও সত্যিকারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই। তার প্রধান প্রতিপক্ষ ডিন ফিলিপস এবং মারিয়ান উইলিয়ামসন এখন পর্যন্ত কোনো প্রাইমারি জিততে পারেননি।
ডেমোক্র্যাটরা সামাজিকভাবে একটু উদারপন্থী এবং বড় ধরনের সরকারি অর্থ বিনিয়োগ করার পক্ষে। অন্যদিকে রিপাবলিকানরা সামাজিকভাবে একটু রক্ষণশীল হয়ে থাকে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে তারা আবার পুরনো দিনে ফেরত নিতে চায়। সুপার টুইসডে ছাড়াও মার্চে সাউথ ক্যারোলিনা প্রাইমারি ও মিশিগান প্রাইমারি অনুষ্ঠিত হবে।
বিভি/এমআর
মন্তব্য করুন: