টানা তিনবার লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হওয়া কে এই সাদিক খান (ভিডিও)
``ব্রিটিশ মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে যুক্তি দিয়ে বক্তব্য তুলে ধরতে পারে এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম, আমি গর্বিত কারণ আমি তেমনই একজন ব্রিটিশ মুসলিম``। ২০১০ সালে গার্ডিয়ান পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছিলেন সাদিক খান। আর এবার ব্রিটিশ মুসলিম হিসেবে গড়লেন নতুন রেকর্ড। তৃতীয়বারের মতো লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হলেন মিস্টার খান।
যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের মেয়র পদে টানা তৃতীয়বারের মতো জয়ী হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন লেবার পার্টির প্রার্থী সাদিক খান। তিনিই লন্ডনের প্রথম নেতা, যিনি টানা তিনবার এই পদে জয়ী হয়েছেন। নির্বাচনে ১৪টি নির্বাচনী এলাকার মধ্যে নয়টিতেই জিতেছেন তিনি। সাদিক খান ২ লাখ ৭৬ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী সোসান হলকে হারিয়েছেন। আর এই জয়ের মধ্যে দিয়ে আরও শক্ত অবস্থানে চলে গেলো লেবার পার্টি।
৫৩ বছর বয়সী সাদিক খান ছিলেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সুবিধা বঞ্চিত এক পরিবারের ছেলে। তার বাবা ছিলেন বাস ড্রাইভার এবং মা জীবিকা নির্বােহর জন্য সেলাইয়ের কাজ করতেন। সাদিক খান তার বাব-মায়ের আট সন্তানের একজন। দক্ষিণ পশ্চিম লন্ডনের ছোট্ট একটি তিন-কামরার ফ্ল্যাটে গাদাগাদি করে থাকতে হতো তাদের। স্থানীয় একটি সরকারি স্কুলে পড়তেন সাদিক। সেখানেই ১৫ বছর বয়সে তিনি রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়েন এবং লেবার পার্টিতে যোগ দেন।
সাদিক লেখাপড়ায় যেমন ভালো ছিলেন তেমনি ভালো ছিলেন, ফুটবল, বক্সিং এবং ক্রিকেট খেলাতেও। কিন্তু বর্ণবাদী মন্তব্য শুনতে হতো বলে মাঠে গিয়ে খেলা দেখতেন না তিনি। আইনের ছাত্র ছিলেন সাদিক খান। পড়াশোনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব নর্থ লন্ডনে। ১৯৯৪ সালে তিনি একটি সংস্থায় মানবাধিকার আইনজীবী হিসাবে যোগ দেন। ওই বছরই তার স্ত্রী সাদিয়া আহমেদের সঙ্গে তার পরিচয় ও বিবাহ হয়। সাদিয়াও আইন পড়তেন এবং কাকতালীয়ভাবে তিনিও বাসচালকের কন্যা।
২০০৪ সালে আইনজীবীর কাজ ছেড়ে তিনি পুরো সময়ের জন্য রাজনীতিতে নেমে পড়েন। রাজনীতিতে বিভিন্ন দলে তার সমসাময়িকরা বলেছেন সাদিক খান ``খুবই বুদ্ধিদীপ্ত`` এবং ``একগুঁয়ে`` ব্যক্তি। তার সাথে যুক্তি দিয়ে পেরে ওঠা খুবই কঠিন।
২০১৬ সালে লন্ডনের মেয়র পদে নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেন সাদিক খান। সে বছরের ৯ মে কনজারভেটিভ পার্টির জেক গোল্ডস্মিথকে হারিয়ে প্রথমবার লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর ২০২১ সালে কনজারভেটিভ পার্টির সোন বেইলিকে পরাজিত করে মেয়র পদ ধরে রাখেন সাদিক। ২০১৮ সালে টাইম ম্যাগাজিনে বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় জায়গা করে নেন জনপ্রিয় এই মুসলিম নেতা।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: