এবার লেবাননে ইসরাইলের হামলা, নতুন করে যুদ্ধ শুরুর শঙ্কা

ছবি: সংগৃহীত
গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলি বর্বর হামলা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি এদিকে, যুদ্ধবিরতির ভেতরই লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম জানান, তার দেশ একটি নতুন যুদ্ধের শঙ্কার ভেতর রয়েছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, লেবাননের পঞ্চম বড় শহর টায়ারে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন। আল-জাজিরার একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এদিকে, ইসরাইলের এই নৃশংস হামলার পর সেখানে কার্যকর যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
হামলার পর সেখানে থাকা প্রতিরোধ বাহিনীকে টার্গেট করা হয়েছে বলে দাবি করে ইসরাইলি বাহিনী। এদিকে, লেবাননের প্রধানমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, লেবানন সীমান্তে আবারও ইসরাইলের সামরিক অভিযান শুরু হলে, তা লেবানীজ জনগণের জন্য দুঃখজনক পরিণতি বয়ে আনবে। এছাড়া, ইসরাইলের প্রাণঘাতী আক্রমণের কারণে গত ৪ মাস আগে প্রতিরোধ বাহিনীর সঙ্গে যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল, তা বিপদগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মূলত ৪ মাস আগে হওয়া যুদ্ধবিরতির পর লেবাননে এটিই ইসরাইলের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা। ইসরাইলি বাহিনী দাবি করেছে, ইসরাইলের মেটুলাকে টার্গেট করে ৩টি রকেট ছোঁড়া হয়েছিল। ফলে, টায়ারে প্রতিরোধ বাহিনীকে টার্গেট করে হামলা চালানো হয়। তবে, ইসরাইলে হামলার দায় অস্বীকার করেছে প্রতিরোধ বাহিনী।
এদিকে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কাছ থেকেও বাড়তে থাকা বিরোধিতার সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিরোধ বাহিনী। গত বছর লেবাননে বিধ্বংসী ইসরাইলি আক্রমণের জন্য তারা প্রতিরোধ বাহিনীকে দায়ী করেছিল। লেবাননের মন্ত্রী মিশেল মেনাসা বলেন, রকেট হামলার বিষয়ে লেবাননের সেনাবাহিনী তদন্ত শুরু করেছে।
এদিকে যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, সব লেবানী ভূমি থেকে প্রত্যাহার না করায় ইসরাইলকে দীর্ঘস্থায়ী সংঘর্ষের জন্য দায়ী করেছে লেবানন। চুক্তির অধীনে জানুয়ারি মাসের ভেতর ইসরাইলের প্রত্যাহারের জন্য একটি সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে, ইসরাইল তা ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত রাখে। ইসরাইলি বাহিনী ততদিন লেবাননের ৫টি স্থানে অবস্থান করে বেশ কয়েকটি হামলা চালায়। যদিও তারা তাদের দাবিতে প্রতিরোধ বাহিনীকে টার্গেট করার কথা বলেছিল, তবে অসংখ্য এসব প্রাণঘাতী হামলা প্রায়ই বেসামরিকদের উপরই করা হয়।
এদিকে, দেশকে অস্থিতিশীল করার ও সহিংসতা পুনরায় উদ্দীপ্ত করার প্রচেষ্টার নিন্দা জানিয়েছেন লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন। এছাড়া, তিনি সংঘর্ষের তীব্রতা প্রতিরোধের জন্যও আহ্বান জানান।
অপরদিকে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, তারা লেবাননের প্রতিরোধ বাহিনীর বিরুদ্ধে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালীভাবে আক্রমণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। নেতানিয়াহু বলেন, তাদের ভূখণ্ডে যা কিছু ঘটছে তার জন্য লেবানন সরকারকে দায়ী বলে মনে করে ইসরাইল।
লেবানন- ইসরাইলপরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, এমন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। এদিকে, পরিস্থিতি শান্ত করতে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিরোধ নিরসন কমিটির সাথে লেবানন কর্মকর্তারাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে, এমনটি জানিয়েছে আল-জাজিরা।
আল-জাজিরার সাথে এক সাক্ষাৎকারে হামাদ বিন খলিফা ইউনিভার্সিটির রাজনীতি বিশ্লেষক সুলতান বারাকাত সতর্ক করে বলেন, যতদিন পর্যন্ত ইসরাইলি দখল অব্যাহত থাকবে, ততদিন এই প্রতিরোধ চলতেই থাকবে।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: