পাকিস্তানে হামলায় যেসব ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে ভারত

পাকিস্তানে হামলায় ভারতের ৮০টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয়। কিন্তু পাক বিমান বাহিনী সাফল্যের সাথে ওই হামলা প্রতিহত করেছে। ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ওই অভিযানের ব্যাপারে ইসলামাবাদের কাছে আগে থেকেই গোয়েন্দা তথ্য ছিল। এক বিবৃতিতে এসব কথা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।
বুধবার দেশটির পার্লামেন্টে বক্তব্যকালে শেহবাজ শরিফ আরো বলেন, ভারতের হামলার মুখে সংযত আচরণ করেছে পাকিস্তান। হামলায় অংশ নেওয়া বিমানের মধ্য থেকে মাত্র পাঁচটিকে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। সেনারা চাইলে ১০টি যুদ্ধবিমানও ভূপাতিত করতে পারতো।
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারও একই কথা বলেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার দিনগত রাতে ভারতীয় বিমান বাহিনীর ৭৫ থেকে ৮০টি যুদ্ধবিমান পাকিস্তানে হামলায় অংশ নেয়। এর মাঝে ৫টি যুদ্ধবিমান ও দুটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়। পাক বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ স্বাধীনতা দেয়া হলে ভারতের জন্য তার ফল আরো ভয়াবহ হতো বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অপারেশন সিঁদুরে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় আঘাত হানতে সক্ষম অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বিভিন্ন সমরাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। ভারতের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী সম্মিলিতভাবে ওই হামলা চালায়। হামলায় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন স্কাল্প ক্রুজ মিসাইল, হ্যামার প্রিসিশন–গাইডেড মিসাইল ও আত্মঘাতী ড্রোন ব্যবহার করা হয়। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের সক্ষমতা নিয়ে ফলাও করে সংবাদ পরিবেশন করছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো।
স্কাল্প মিসাইলকে স্টর্ম শ্যাডোও বলা হয়। এটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে আকাশ থেকে নিক্ষেপ করা হয় স্টর্ম শ্যাডো। সুরক্ষিত বাঙ্কার ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস করার জন্য ব্যবহার করা হয় এই ক্ষেপণাস্ত্র।
সাধারণত রাফালের মতো অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানে মোতায়েন করা হয় স্কাল্প ক্রুজ মিসাইল। এগুলোর ওজন প্রায় ১ হাজার ৩০০ কেজি। অস্ত্রভাণ্ডারে এই ক্ষেপণাস্ত্র যুক্ত হওয়ায় রাডার ফাঁকি দিয়ে শত্রুপক্ষের সীমান্তের ভেতরে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার সক্ষমতা অর্জন করে ভারতীয় বাহিনী।
এদিকে হাইলি অ্যাজাইল মডুলার মিউনিশন এক্সটেন্ড রেঞ্জ–এর সংক্ষিপ্ত রূপ হলো- হ্যামার। এটিও আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র। মধ্যম পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে স্থির বা চলমান যে কোনো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। জিপিএস, লেজার টার্গেটিং, ইনফ্রারেড ইমেজিংসহ বিস্তৃত ফিচার আছে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাবস্থায়।
অভিযানে অংশ নিয়েছিল- আত্মঘাতী ড্রোন ‘কামিকাজে’। সাধারণত নজরদারি, লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার কাজে ব্যবহার করা হয় এসব ড্রোন। স্বয়ংক্রিয়ভাবে বা রিমোটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে হামলা চালানো যায় এসব ড্রোনে। হ্যামার ও স্কাল্প মিসাইল ব্যাবহারের ফলেই ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের গভীর অঞ্চল পর্যন্ত হামলা চালাতে সক্ষম হয় বলে জানাচ্ছেন বিশ্লেষকরা।
বিভি/এইচজে
মন্তব্য করুন: