মার্কিন অস্ত্রনীতিতে নতুন মোড়, লাভবান কে? (ভিডিও)
দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম বড় আন্তর্জাতিক সফর মধ্যপ্রাচ্য দিয়েই শুরু করলেন ট্রাম্প। এই সফরে সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে একাধিক বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি।সফর চলাকালীন ট্রাম্প ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারেন-- এমন গুঞ্জন মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক সূত্রের দাবি, ট্রাম্প এমন একটি ঘোষণা দিতে পারেন, যাতে যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিবে। তবে বাস্তবতা হলো, ফিলিস্তিন নয়; বরং মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশগুলোতে অস্ত্র বিক্রি ও বিনিয়োগের দিকেই বেশি নজর দিচ্ছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের এ সফরের আগেই বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির চুক্তি অনুমোদন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর এসব অস্ত্র ক্রয় করবে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলো। মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে প্রায় দেড় বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির চুক্তি অনুমোদন করেছে। এই চুক্তিটি মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন সফরের আগে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রস্তাবিত চুক্তির অধীনে আমিরাতকে ছয়টি সিএইচ-৪৭এফ চিনুক হেলিকপ্টার, এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশ এবং বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করা হবে।
আমিরাতের চেয়ে একধাপ এগিয়ে আছে সৌদি আরব। ট্রাম্পের সফরের প্রথম দিনেই সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগ ফোরাম অনুষ্ঠিত হবে। এতে অতিথি হিসেবে থাকার কথা রয়েছে ব্ল্যাকরক, আইবিএম ও কোয়ালকমের মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীদের। ধারণা করা হচ্ছে এ সফরে ট্রাম্প প্রশাসন সৌদি আরবের সাথে $১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের অস্ত্র চুক্তি ঘোষণা করতে পারেন। এই চুক্তির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ২০০টি অত্যাধুনিক এফ-১৫ এক্স যুদ্ধবিমান। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের মিসাইল সিস্টেম, হারকিউলিস পরিবহন বিমান, কমব্যাট ও ট্রান্সপোর্ট হেলিকপ্টার কেনার আলোচনা চলছে।
বড় অস্ত্র চুক্তির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে কাতারও। যার মধ্যে ড্রোন এবং অন্যান্য আধুনিক সামরিক প্রযুক্তি থাকতে পারে। জানা গেছে সফরে কুয়েত, বাহরাইন, কাতার ও ওমানের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র নির্মাতা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন। গুঞ্জন উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রকে একটি উড়ন্ত প্রাসাদ তথা রাজকীয় বিমান উপহার দিতে যাচ্ছে কাতার। যেটি মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিমানবহর ‘এয়ার ফোর্স ওয়ানে’ যুক্ত হতে পারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। এসব দেশে তার সন্তানদের একাধিক ব্যবসা ও আবাসন প্রকল্প আছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই অঞ্চলের দেশগুলো ট্রাম্পের লেনদেনভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতিকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থে সুবিধা নিচ্ছে। অন্যদিকে ট্রাম্প প্রশাসন এই অঞ্চলে ইরানের প্রভাব মোকাবিলা করতে উপসাগরীয় এসব দেশগুলোর নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: