যুক্তরাষ্ট্রে গুলিতে ইসরাইলি দূতাবাসের দুই কর্মী নিহত, ইহুদিবিদ্বেষ থেকেই হামলা—বললেন ট্রাম্প

ছবি: সংগৃহীত
এবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে ইসরাইলি দূতাবাসের দুই কর্মী। ২১ মে রাতে ক্যাপিটাল জিউইশ মিউজিয়ামের বাইরে গুলিবিদ্ধ হন তারা। যাদেরকে গুলি করা হয় তারা মিউজিয়াম থেকে একটি ইভেন্ট শেষ করে বের হচ্ছিলেন। মার্কিন কর্তৃপক্ষের বরাতে খবরটি জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। এই হামলাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে।
এই ঘটনায় একজন পুরুষ ও একজন নারী প্রাণ হারিয়েছেন। ইসরাইলি দূতাবাসের এক মুখপাত্র নিশ্চিত করেন, এই দুই কর্মীকে ইভেন্টে অংশগ্রহণ করার পর গুলি করা হয়। গুলিটি চালানো হয় জিউইশ মিউজিয়াম, এফবিআই-এর ফিল্ড অফিস ও মার্কিন অ্যাটর্নি অফিসের একটি নিকটবর্তী স্থানে। ইসরাইলের দূতাবাসের আরও কয়েকজন কর্মীও ওই ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই হামলা স্পষ্টতই ইহুদিবিদ্বেষের কারণে ঘটেছে। তিনি আরও বলেন, ঘৃণা ও চরমপন্থার কোনও স্থান আমেরিকায় নেই।
ঘটনার পর মার্কিন স্বরাষ্ট্র সচিব ক্রিস্টি নোম এক্স-এ একটি পোস্টে জানান, রাতে ওয়াশিংটন ডিসিতে ইহুদি মিউজিয়ামের আশেপাশে দুইজন ইসরাইলি দূতাবাসের কর্মীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব এই বিষয়ে আরও তথ্য জানানো হবে। তিনি আরও বলেন, দয়া করে নিহতদের পরিবারের জন্য দোয়া করুন। একই সঙ্গে তিনি দৃঢ়ভাবে জানান, এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
আমেরিকান জিউইশ কমিটির প্রধান টেড ডচ জানান, তাদের সংগঠন ওই ইভেন্টটির আয়োজন করেছিল যেখানে আক্রমণটি হয়েছে। তারা বলছে, এই ভয়াবহ হামলার ঘটনায় তারা গভীরভাবে মর্মাহত। বর্তমানে তারা পুলিশের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য অপেক্ষা করছেন। তবে এই মুহূর্তে তাদের সমস্ত চিন্তা ও সহানুভূতি রয়েছে কেবল নিহত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের প্রতি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল পামেলা বন্ডি। তিনি বলেন, এই নৃশংস হামলায় যারা নিহত হয়েছেন, তারা তাদের জন্য প্রার্থনা করছেন। এছাড়া, পুরো ঘটনার বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
জাতিসংঘে ইসরাইলের প্রতিনিধি ড্যানি ড্যানন এই হামলাকে ইহুদিবিরোধী সন্ত্রাসবাদের একটি জঘন্য উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি আরও বলেন, কূটনীতিক ও ইহুদি সম্প্রদায়ের সদস্যদর ওপর হামলা গুরুতর সীমা পার করেছে। তবে তাদের বিশ্বাস মার্কিন সরকার এই অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
ঘটনার পর আক্রমণকারীকে শনাক্ত করতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। বিবিসি বলছে, সন্দেহভাজন ব্যক্তিটির গোঁফ ছিল। তিনি নীল জিন্স ও নীল জ্যাকেট পরেছিলেন। এদিকে এই বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিপার্টমেন্ট। এই ঘটনায় শহরের কিছু প্রধান সড়কে যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ইহুদি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে, কারণ তারা মনে করছে সাম্প্রতিক সময়ে তাদের বিরুদ্ধে কিছু ভীতিকর ঘটনা ঘটছে। যদিও এই বিষয়ে কিছু মানুষের সন্দেহ রয়েছে। অন্যদিকে, গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসনে অনাহারে মারা যাচ্ছে শিশুরা। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২১ মে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গাজায় চলমান ইসরাইলি অভিযান ‘অপারেশন গিদিওনস চ্যারিয়ট’ শেষ হওয়ার পর তার দেশ পুরো গাজা উপত্যকাটি দখল করে নেবে।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: