ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব কোনভাবেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের নয়: জয়শঙ্কর

ছবি: ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ভারত-পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও এর কৃতিত্ব নিয়ে ওয়াশিংটনের সাথে দিল্লির টানাপোড়েন এখনও শেষ হয়নি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আবারও দাবি করেছেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকরের কৃতিত্ব কোনভাবেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নয়।
জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেন, সেই সময় ওই ঘরে, মোদির পাশেই ছিলেন তিনি। কথোপকথনে যুদ্ধবিরতি এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের যোগসূত্রের কথা একবারও ওঠেনি বলে জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) নিউ ইয়র্কের একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন দাবি করেছেন জয়শঙ্কর। তাকে প্রশ্ন করা হয়, ব্যবসা-বাণিজ্যের টোপ দিয়ে আমেরিকা এবং পাকিস্তানকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানো হয় বলে যে দাবি করছেন ট্রাম্প, তা কতটা সত্য? উত্তরে জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমি বলতে পারি যে, গত ৯ মে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলেন, আমি ওই ঘরেই ছিলাম। উনি জানান, পাকিস্তান ভারতের ওপর বড় আঘাত হানতে চলেছে...আমরা কিছু জিনিস মেনে নিতে পারিনি। পাকিস্তান কী করার হুমকি দিচ্ছে, তা প্রধানমন্ত্রীর কাছেও পরিষ্কার হয়নি। বরং প্রধানমন্ত্রী বুঝিয়ে দেন যে ,আমাদের তরফে তীব্র প্রতিক্রিয়া মিলবে।’
তবে জয়শঙ্কর ভারতের অবস্থান স্পষ্ট ভাষায় তুলে ধরলেও, ট্রাম্প এখনও যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব দাবি করে চলেছেন। কয়েকদিন আগেও তাকে বলতে শোনা যায়, ‘ফোনে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসঙ্গ তুলে আমিই ইতি (যুদ্ধে) টেনেছি। আমি ওদের বলি, এভাবে যুদ্ধ করলে আমরা তোমাদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করবো না আর। আর তাতেই ওরা যুদ্ধ থেকে সরে আসে। ব্যবসা এগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করে।’
৯ মে পাকিস্তানের তরফে হামলার তীব্রতা বাড়ানো হয় বলেও মেনে নেন জয়শঙ্কর। কিন্তু দ্রুতই ভারতীয় সেনা তাদের কড়া জবাব দেয় বলে জানান। তিনি জানান, ১০ মে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র সচিবের মধ্যে কথা হয়। মার্কো রুবিও জানান, পাকিস্তান আলোচনার জন্য প্রস্তুত। ওই দিনই বিকেলে পাকিস্তান সেনার ডিজিএমও, মেজর জেনারেল কাশিফ আব্দুল্লা সরাসরি ভারতীয় সেনার ডিজিএমও, লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাইকে ফোন করে যুদ্ধবিরতির আবেদন জানান।
পাহেলগাম হামলা প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর বলেন, ‘এটি একটি অর্থনৈতিক যুদ্ধের কৌশল ছিলো। কাশ্মীরের পর্যটন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়াই লক্ষ্য ছিলো ওদের, যা কাশ্মীরিদের অর্থনীতির ভিত্তি। পাশাপাশি, ধর্মীয় হিংসাও উস্কে দেওয়ার চেষ্টা হয়, যে কারণে হত্যা করার আগে ধর্ম জানতে চাওয়া হয়। জঙ্গিদের পার পেয়ে যেতে দেওয়া যাবে না বলে তখনই সিদ্ধান্ত নিই আমরা। সূত্র: এবিপি
বিভি/এমআর
মন্তব্য করুন: