জাপানের প্রত্যন্ত দ্বীপপুঞ্জে ৯০০ বারের বেশি ভূমিকম্প, আতঙ্কিত বাসিন্দারা

ফাইল ছবি
জাপানের প্রত্যন্ত তোকারা দ্বীপপুঞ্জে দুই সপ্তাহের মধ্যে ৯০০ বারের বেশি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে উৎকণ্ঠায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দারা। যেকোনো সময় ভয়াবহ কিছু ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান ও বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, এসব ভূমিকম্প কবে শেষ হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। আবহাওয়া সংস্থার ভূমিকম্প ও সুনামি পর্যবেক্ষণ বিভাগের পরিচালক আয়াতাকা এবিতা এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘গত ২১ জুন থেকে তোকারা দ্বীপপুঞ্জের আশপাশের সমুদ্রে ভূকম্পন সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। তোকারার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
গতকাল বুধবার বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে তোকারা দ্বীপপুঞ্জে ৫ দশমিক ৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্পের পর তিনি এ কথা বলেন। আয়াতাকা বলেন, ‘আজ বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভূমিকম্পের সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়ে গেছে। তবে এখন পর্যন্ত বড় ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।’
জাপানের সংবাদমাধ্যম মেইনিচি সিম্বুন জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ১০ দিনের মধ্যে তোকারা দ্বীপপুঞ্জে রেকর্ড ৭৪০টি ভূমিকম্প হয়েছে। রিখটার স্কেলে এসব ভূমিকম্প ১ বা তার বেশি মাত্রার ছিল। ওই স্কেলে ৭ হলো সবচেয়ে শক্তিশালী। ৫ মাত্রার কম্পনও সাধারণত মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়।
এদিকে তোকারা গ্রামের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শত শত ভূমিকম্পে বাসিন্দারা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন, উদ্বেগে ঘুমাতে পারছেন না। আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যম এমবিসিকে এক বাসিন্দা বলেন, ‘সব সময় মনে হচ্ছে মাটি কাঁপছে। ঘুমাতে গেলেও ভয়ে কেঁপে উঠছি।’ আরেকজন বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি শেষ কবে হবে, জানি না। বাচ্চাদের নিয়ে কোথায় যাব সেটিই এখন ভাবছি কেবল।’
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত ২৩ জুন সবচেয়ে বেশি, ১৮৩টি ভূমিকম্প হয়। এরপর ২৬ জুন ১৫টি এবং ২৭ জুন ১৬টি ভূমিকম্প হয়। আর ২৮ জুন ৩৪টি এবং ২৯ জুন হয় ৯৮টি। ৩০ জুন রেকর্ড হয় ৬২টি ভূমিকম্প। এর আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তোকারা এলাকায় এমন ভূকম্পনের প্রবণতা দেখা যায়। তখন ৩৪৬টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছিল।
তোকারা দ্বীপপুঞ্জের আশপাশের সমুদ্রের জটিল ভৌগোলিক গঠন মাটির নিচে চাপ তৈরি করে, যা পরে ভূমিকম্প সৃষ্টি করে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। জাপান বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। চারটি বড় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে প্রশান্ত মহাসাগরের রিং অব ফায়ারের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত দেশটি। জাপানে বছরে গড়ে প্রায় দেড় হাজার বার ভূমিকম্প হয়, যা বিশ্বের মোট ভূমিকম্পের প্রায় ১৮ শতাংশ।
বিভি/এসজি
মন্তব্য করুন: