• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০১ আগস্ট ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

ইসমাইল হানিয়ার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী, টেলিগ্রাম চ্যানেলে বিবৃতি

প্রকাশিত: ১৬:৩০, ৩১ জুলাই ২০২৫

ফন্ট সাইজ
ইসমাইল হানিয়ার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী, টেলিগ্রাম চ্যানেলে বিবৃতি

হামাসের শীর্ষ নেতা শেখ ইসমাইল হানিয়া গত বছর ৩১ জুলাই ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় শহীদ হন। তেহরানে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন হানিয়া। যে ভবনে তারা অবস্থান করছিলেন, সেখানে হামলা চালানো হলে হানিয়া এবং তার একজন দেহরক্ষী নিহত হন। এই হামলা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

ইরানে গুপ্তহত্যার শিকার এই হামাস নেতার মৃত্যুর এক বছর পূর্তিতে হামাস এক বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে এই হত্যাকাণ্ডকে ‘বিশ্বাসঘাতক ও কাপুরুষোচিত জায়নিস্ট অপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। হামাস জানিয়েছে, এই নৃশংস ঘটনা ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিরোধের শক্তি আরো বৃদ্ধি করেছে।

বিবৃতিতে হামাস আরও জানায়, ‘শহীদ নেতা ইসমাইল হানিয়ার প্রতি আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে আমরা তার আহ্বান পুনরায় স্মরণ করছি—প্রতি বছর ৩ আগস্টকে একটি আন্তর্জাতিক জাতীয় দিবস হিসেবে পালন করা হোক। এটি হবে গাজা, জেরুজালেম, আল-আকসা এবং বন্দিদের প্রতি সমর্থনের দিন।’

হামাস দাবি করেছে, “এই দিনটি যেন বিশ্বব্যাপী একটি গণআন্দোলনে রূপ নেয়, যাতে গাজা উপত্যকার জনগণের ওপর চলমান গণহত্যা এবং ক্ষুধার যুদ্ধের অবসান হয়, দখলদার ইসরায়েলকে আমাদের ভূখণ্ড থেকে উৎখাত করা যায় এবং আমাদের জনগণ তাদের স্বাধীনতা অর্জন করতে পারে।” এই দীর্ঘ বিবৃতিটি হামাসের টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়েছে।

ফিলিস্তিনি জনগণ, আরব এবং মুসলিম উম্মাহসহ বিশ্বজুড়ে স্বাধীনতাকামী মানুষদেরকে আহ্বান জানিয়ে হামাস বলেছে, তারা যেন ইসমাইল হানিয়ার ডাকে সাড়া দিয়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়।

১৯৬২ সালের ২৩ জানুয়ারি গাজার আল-শাতি শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন ইসমাইল হানিয়া। তার পরিবার ১৯৪৮ সালের নাকবা সময়ে আশকেলনের আল-জুরা গ্রাম থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। তিনি ইউএনআরডাব্লিউএ স্কুল এবং গাজার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন, যেখানে তিনি আরবি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

হানিয়ার রাজনৈতিক জীবনের সূচনা ১৯৭৮ সালে ছাত্রনেতা হিসেবে এবং প্রথম ইন্তিফাদার সময় তার বক্তৃতা ফিলিস্তিনিদের মধ্যে প্রতিরোধের আগুন জ্বালিয়ে দেয়। তাকে বারবার ইসরায়েলি বাহিনী গ্রেপ্তার করেছিল (১৯৮৭, ১৯৮৮, ১৯৮৯), কিন্তু তার প্রতিরোধের আগুন কখনো নিভে যায়নি।

১৯৯২ সালে ৪১৫ জন ফিলিস্তিনি নেতার সঙ্গে তাকেও লেবাননের মারজ আল-জুহুরে নির্বাসিত করা হয়, তবে অল্প সময়ের মধ্যে তাদের ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয় দখলদাররা।

হানিয়ার নেতৃত্বে হামাস এবং আল-কাসসাম ব্রিগেড একাধিক ইসরায়েলি হামলার মোকাবেলা করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ২০০৮ সালের আল-ফুরকান যুদ্ধ, ২০১২ সালের পিলার অফ ডিফেন্স, ২০১৪ সালের প্রোটেকটিভ এজ এবং ২০২১ সালের সর্ড অফ জেরুজালেম।

প্রতিটি অভিযানে তিনি জেরুজালেমের মুক্তিকে প্রতিরোধ সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে তুলে ধরেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া ‘আল-আকসা বন্যা’ অভিযানে হানিয়া কৌশলগত নেতৃত্ব দেন, একদিকে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে অন্যদিকে বৈশ্বিক কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রেখে।

২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে ঈদুল ফিতরের সময় এক ইসরায়েলি বিমান হামলায় হানিয়ার তিন ছেলে, পাঁচ নাতি-নাতনিসহ ৬০ জনের বেশি আত্মীয় শহীদ হন। তবে তিনি দৃঢ়সংকল্পে বলেন, “আমার সন্তানেরা শাহাদাতের উচ্চ মর্যাদা অর্জন করেছে, কিন্তু ফিলিস্তিনের পথ থেকে সরে যাব না।” সূত্র: আওয়ার ইসলাম

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: