আমাদের চেয়ে চীনেরই যুক্তরাষ্ট্রকে বেশি প্রয়োজন: ট্রাম্প

ছবি: সংগৃহীত
দিন দিন আরও সুদৃঢ় হয়ে উঠছে চীন-রাশিয়ার পারস্পরিক সম্পর্ক। সম্প্রতি এসসিও সম্মেলনে এই দুটি দেশ একত্রিত হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে গভীর আলোচনা চালিয়েছে। অপরদিকে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের আত্মসমর্পণের বার্ষিকী উপলক্ষে চীনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নর্থ কোরিয়ার অংশগ্রহণও এই অঞ্চলভিত্তিক সহযোগিতার শক্ত ভিত্তির আরেকটি উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
অন্যদিকে, মার্কিন শুল্ক নিয়ে বিরোধের জেরে ভারত-চীন সম্পর্ক কিছুটা উষ্ণ হচ্ছে বলেও মনে হচ্ছে। এসসিও সম্মেলনে মোদী এবং শি সাক্ষাৎ করে কিছুটা আলাপ-আলোচনা করেছেন। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, হয়তো এই দেশগুলো ধীরে ধীরে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এক ধরনের কৌশলগত মিত্রতা গড়ে তুলছে।
এসবের ভেতর কেউ কেউ মনে করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিছুটা চাপের মুখে পড়তে পারেন। তবে সাম্প্রতিক এক মন্তব্যে ট্রাম্প এই ধরনের উদ্বেগকে উড়িয়ে দেন। ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অপরাজেয় সামরিক শক্তির কারণে চীন বা রাশিয়ার পক্ষে কখনোই সামরিক সংঘর্ষে যাওয়ার সাহস হবে না। তিনি স্পষ্ট করেন এই দেশগুলোর গভীর সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কোনো বড় হুমকি নয়।
আল-জাজিরার তথ্যমতে, ২ সেপ্টেম্বর এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয় তিনি চীন ও রাশিয়ার মিত্রতা নিয়ে চিন্তিত কি না। এর উত্তরে তিনি বলেন, তিনি এতে উদ্বিগ্ন নন। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং অন্যদের চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে। ট্রাম্প আরও বলেন, চীন বা রাশিয়া কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সামরিকভাবে আক্রমণ করার চেষ্টা করবে না, কারণ সেটা তাদের জন্য চরম ভুল সিদ্ধান্ত হবে।
এর আগে নির্বাচনী প্রচারণায় ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নেবেন। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আচরণে গভীরভাবে হতাশ। তিনি আরও বলেন, তার মূল লক্ষ্য ইউক্রেনের ভূরাজনৈতিক বিষয় নয়, বরং মানুষের জীবন রক্ষা করা। এই মন্তব্যগুলো তিনি এমন এক সময় করেছেন যখন চীন এবং রাশিয়া যৌথভাবে পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার বিকল্প গড়ে তোলার লক্ষ্যে তাদের সহযোগিতা বৃদ্ধি করছে।
এই সপ্তাহে চীনের তিয়ানজিন শহরে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও)-এর সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক প্রভাব এবং আধিপত্যের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন। সম্মেলনের পাশাপাশি পুতিন অংশ নিয়েছিলেন চীনের সবচেয়ে বড় সামরিক কুচকাওয়াজে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের বিরুদ্ধে বিজয়ের ৮০ বছর পূর্তিতে আয়োজিত হয়েছিল। অনেকেই এই আয়োজনকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চীনের শক্তি প্রদর্শনের কৌশল হিসেবে দেখছেন, যার নেতৃত্ব দিয়েছেন শি জিনপিং।
এদিকে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প জানান, তিনি এই কুচকাওয়াজকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কোনো ধরনের হুমকি হিসেবে দেখছেন না। তিনি বলেন, বিষয়টিকে তিনি মোটেও সে দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেন না। ট্রাম্প জানিয়েছেন, চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার খুবই ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তবে তিনি এটাও মনে করেন, তাদের চেয়ে চীনেরই যুক্তরাষ্ট্রকে বেশি প্রয়োজন।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: