ফ্রান্সে বিক্ষোভ, গ্রেফতার ৬৭৫ জন

ছবি: সংগৃহীত
ফ্রান্সজুড়ে ব্লকেড আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া–পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে ৬৭৫ জনকে গ্রেফতার করেছে ফরাসি কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে শুধু প্যারিস অঞ্চলে আটক হয়েছেন ২৮০ জন। ফরাসি গণমাধ্যম বিএফএম টিভি বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানায়।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার ভোররাতের সংঘর্ষের পর গ্রেফতারদের মধ্যে ৫৪৯ জনকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
প্যারিস পুলিশ প্রধান লরঁ নুনিয়েজ জানিয়েছেন, রাজধানীতে প্লাস দে ফেত (Place des Fetes) এলাকায় নতুন করে সংঘর্ষ ও গ্রেফতারের ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, ‘আজ সকালে ২৮০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেককেই হেফাজতে রাখা হয়েছে। এখনো ১৬৪ জন পুলিশের কাস্টডিতে রয়েছে।’
নুনিয়েজ আন্দোলনটিকে ‘ব্যর্থ’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি জানান, রাজধানীতে অন্তত ১০ বার রিং রোড অবরোধের চেষ্টা করা হলেও সব ব্যর্থ হয়। একইভাবে গার দ্য নর্দ রেলস্টেশন দখলের প্রচেষ্টা এবং কিছু স্কুল ও বাস ডিপোতে সাময়িক বিশৃঙ্খলাও সফল হয়নি।
ফরাসি সিনেট প্রেসিডেন্ট জেরার্ড লাশেরও আন্দোলনটিকে ‘ব্যর্থ’ আখ্যা দিয়ে বিএফএম টিভি-আরএমসিকে বলেন, এ ধরনের অবরোধ জনসমর্থন পায়নি।
তবে বৃহস্পতিবারও ছড়িয়ে–ছিটিয়ে ছোট ছোট প্রতিবাদ হয়েছে। নঁতে এবং প্যারিসের সায়েন্স পো বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরোধের চেষ্টা হলে পুলিশ তা সরিয়ে দেয়। নুনিয়েজ জানিয়েছেন, অবরোধ প্রতিরোধে পুলিশ একই কঠোর নীতি অব্যাহত রাখবে।
নতুন কর্মসূচি ১৮ সেপ্টেম্বর
ইতোমধ্যে শ্রমিক ইউনিয়নগুলো আবারও দেশজুড়ে ১৮ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। ওইদিন প্যারিসে মিছিলেরও পরিকল্পনা রয়েছে, তবে রুট চূড়ান্ত হয়নি কারণ পুলিশের অনুমোদন মেলেনি।
বাজেট পরিকল্পনা ঘিরে উত্তেজনা
আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ‘লে এসঁসিয়েলস’ (Les Essentiels) নামে একটি অনলাইন গ্রুপ নাগরিকদের আহ্বান জানায় ১০ সেপ্টেম্বর সবকিছু থামিয়ে দেয়ার, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুর জাতীয় বাজেট পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। পরবর্তীতে বামপন্থি দল ফ্রান্স আনবোউড (LFI) আন্দোলনে যোগ দেয়।
বাইরু জুলাইয়ে যে ২০২৬ সালের বাজেট কাঠামো উন্মোচন করেছিলেন, তাতে প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ইউরো সাশ্রয়ের পরিকল্পনা ছিল। এর লক্ষ্য ফ্রান্সের ঋণ কমানো, যা বর্তমানে জিডিপির ১১৩ শতাংশ। তবে এই প্রস্তাব জাতীয় পরিষদে সমর্থন না পেয়ে সোমবার অনাস্থা ভোটে হেরে যান বাইরু।
ফলে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবাস্তিয়েন লেকোর্নুকে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সরকার গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে অন্যতম বৃহৎ বাজেট ঘাটতির দেশ ফ্রান্সের ঘাটতি বর্তমানে জিডিপির ৫.৮ শতাংশ। গত বছর বাজেট চূড়ান্ত করতে না পারায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ের সরকার ভেঙে পড়েছিল।
বিভি/এসজি
মন্তব্য করুন: