বেলারুশ-রাশিয়ার সামরিক মহড়ায় যোগ দিলো বাংলাদেশ ও ভারত: আল-জাজিরার রিপোর্ট

যেকোনো সম্ভাব্য আগ্রাসনের মুখে নিজেদের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি যাচাই করতে একটি সামরিক মহড়া পরিচালনা করেছে বেলারুশ এবং রাশিয়া। এ দুটি দেশ যৌথভাবে এই মহড়াটির পরিচালনা করে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সংক্রান্ত উত্তেজনার মাঝে এই মহড়ায় অংশ নেয় ভারত এবং ইরানসহ বেশ কয়েকটি দেশ। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রেমলিনের বরাতে তাস সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, এই মহড়ায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশও। 

এদিকে, রুশ বার্তা সংস্থা তাসের তথ্যমতে, রাশিয়ার নেতৃত্বে আয়োজিত সামরিক এই মহড়ায় অংশ নিয়েছিল ভারতীয় সেনারা। ফলে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের শুল্ক নিয়ে বিরোধ চলমান থাকায়, এতে রাশিয়া ও ভারতের সম্পর্ক কিছুটা গভীর হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করায় ভারত কিছুটা বেকায়দায় পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। এছাড়া নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে ট্রাম্প অভিযোগ তোলে, রাশিয়া থেকে তেল কিনে ভারত পরোক্ষভাবে ইউক্রেনে মস্কোর সহিংস অভিযানে সহায়তা করছে। 

সম্প্রতি ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে চীন, রাশিয়া এবং ভারতের সম্পর্ক নিয়েও মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ভারত ও রাশিয়া যেন চীনের অন্ধকার ও গভীর প্রভাবের ভেতর ডুবে যাচ্ছে। এই মন্তব্যটি তিনি তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে এই ৩ দেশের পারস্পরিক অবস্থানকে ইঙ্গিত করে করেছেন। 

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৫ দিনব্যাপী এই সামরিক মহড়ায় অংশ নিতে ৬৫ জন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য পাঠিয়েছে তারা। শুধু ভারতই নয়, আরও কয়েকটি দেশ এই মহড়ায় অংশ নিয়েছে। ইরান, বাংলাদেশ, বুরকিনা ফাসো, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (ডিআরসি) এবং মালি থেকেও সামরিক বাহিনী ও বিশেষ টাস্ক ফোর্স পাঠানো হয়েছে। আল-জাজিরার তথ্যমতে, ক্রেমলিনের বরাতে তাস সংবাদ সংস্থা এটি জানিয়েছে। এদিকে, সামরিক পোশাক পড়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা দেন, তারা এই কৌশলগত মহড়ার শেষ ধাপের নেতৃত্ব দিয়েছেন।

তাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরান এ বছরের মহড়ায় অংশগ্রহণ করেছে, যদিও সরকারিভাবে তাদের সেনাবাহিনীর উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়নি। তেহরান রাশিয়ার গভীর কৌশলগত সহযোগী হিসেবে পরিচিত। মার্কিন গোয়েন্দা সূত্র অনুযায়ী, ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহৃত আত্মবিধ্বংসী শাহেদ ড্রোন এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়াকে সরবরাহ করেছে ইরান। এদিকে, তেহরানে ইসরাইলের বোমা হামলার পর ইরান ও মস্কো কাস্পিয়ানেও যৌথ সামরিক মহড়া পরিচালনা করেছে। 

এদিকে, বেলারুশ এবং রাশিয়া পরিচালিত এই সামরিক মহড়ায় প্রায় ১ লাখ সেনা অংশগ্রহণ করেছে। পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম বোমারু বিমান এবং যুদ্ধজাহাজসহ বিশাল সামরিক শক্তি এই মহড়ায় প্রদর্শিত হয়েছে। ন্যাটো সদস্য দেশগুলোর কারণে বিশ্বব্যাপী উত্তেজনা চরমে থাকাকালীন সময় এই মহড়াটি পরিচালিত হয়। এর কয়েক দিন আগে রাশিয়ার ড্রোন পোল্যান্ডের আকাশে দেখা গিয়েছিল।