• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাহসী কন্যা রুহি লোরেন, আছেন ফ্লোটিলা বহরে

প্রকাশিত: ১৬:১০, ২ অক্টোবর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাহসী কন্যা রুহি লোরেন, আছেন ফ্লোটিলা বহরে

শরণার্থী ও দুস্থদের মাঝে খাদ্য-ত্রাণ বিতরণ থেকে শুরু করে মানবিক সহায়তার কাজ চালাচ্ছেন রুহি লরেন আখতার। তার সংস্থাটির পূর্ণ নাম ‘রিফিউজি বিরিয়ানি অ্যান্ড ব্যানানাস’ (আরবিবি)। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ মানবাধিকারকর্মী বর্তমানে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একজন সহযাত্রী। এই যাত্রা নিয়ে তিনি ভিডিও পোস্ট করেছেন এবং তাদের অবস্থান ও গাজা নিয়ে কথা বলেছেন।

সারা বিশ্বের মানুষের নজর এখন এই নৌবহরের দিকে। ফিলিস্তিনের গাজার মানুষের জন্য ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ৪০টির মধ্যে অন্তত ২৪টি নৌযান এখনো গাজার উদ্দেশে যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। বৃহস্পতিবার ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ট্র্যাকার অনুসারে, এসব নৌযান এখনো ইসরায়েলি বাহিনীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই অগ্রসর হচ্ছে।

এসব এর মধ্যে ‘মিকেনো’ নামের একটি জাহাজ গাজার আঞ্চলিক জলসীমায় প্রবেশ করেছে বলে জানা গেছে। রুহি এবং তার সহযাত্রীরা ভয়কে পাশ কাটিয়ে মানবতার বার্তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে অটল।
রুহি আখতারের পিতার নাম কাপ্তান মিয়া। তিনি বিলাত প্রবাসী বাংলাদেশি।

রুহি যুক্তরাজ্যের মরপেথে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং বর্তমানে এলসউইক ওয়ার্ডে বসবাস করছেন। তিনি একজন মানবিক সহায়তা কর্মী এবং অধিকারকর্মী। গাজার মানুষের জন্য জরুরি সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি চলমান ইসরায়েলি অবরোধের প্রতিবাদ জানাতে তিনি গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) তিনি তিউনিসিয়ার গামার্থ বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেন। তার নৌকায় ১২ জন রয়েছেন। তারা তিউনিসিয়া, স্পেন, গ্রিস ও ইতালি থেকে রওনা হওয়া ৪০টিরও বেশি নৌকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। রুহি ২০২৪ সালে তার অসাধারণ বৈশ্বিক মানবিক কাজের জন্য যুক্তরাজ্যের নর্থ ইস্ট বাংলাদেশি অ্যাওয়ার্ডসে ‘বাংলাদেশি পার্সন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কারে ভূষিত হন।

তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি গাজার উদ্দেশ্যে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় যোগ দিয়েছি, কারণ অন্যায়ের মুখে নীরব থাকা কোনো সমাধান নয়। বহুদিন ধরে ফিলিস্তিনিরা খাদ্য, পানি, জমি, মৌলিক নিরাপত্তা এবং চলাচলের স্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। একজন মানবিক কর্মী হিসেবে আমি দেখেছি, এক টুকরো রুটি বা সামান্য বিশুদ্ধ পানি কীভাবে সবচেয়ে অন্ধকার সময়ে আশা ফিরিয়ে আনতে পারে। এই নৌবহর হলো সংহতির প্রতীক, যা মনে করিয়ে দেয় বিশ্ব তাকিয়ে আছে, এবং আমরা গাজার মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে থাকব যতদিন না তারা মুক্ত হয়। কারণ আমাদের কেউই মুক্ত নই, যতদিন না ফিলিস্তিন মুক্ত।’

রুহি ও তার সংস্থা আগে গ্রীস, গাজা এবং অন্যান্য এলাকায় বাস্তুচ্যুত ও যুদ্ধপীড়িত মানুষের জন্য জরুরি খাদ্য ও সহায়তা বিতরণ করেছে। সংস্থার অনেক সদস্যই নিজে বাস্তুচ্যুত বা সংঘাত-প্ররীত এলাকার মানুষ, অর্থাৎ শরণার্থী। রুহি ন্যায়বিচারের পক্ষে দৃঢ় কণ্ঠস্বর। গাজার উদ্দেশ্যে নৌবহরে যোগ দেওয়ার আগে তিনি এবং তার সাথীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে ত্রাণের প্যাকেজ প্রস্তুত করেছেন।

এদিকে ফ্লোটিলার মুখপাত্র সাইফ আবুকেশেক ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে জানান, আটক হওয়া নৌযানগুলোতে অন্তত ২০১ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে শুধু স্পেন থেকেই ছিলেন ৩০ জন, ইতালির ২২ জন, তুরস্কের ২১ জন ও মালয়েশিয়ার ১২ জন। গাজা থেকে ১২৯ কিলোমিটার দূরে ভূমধ্যসাগরে অবস্থানকালে ইসরায়েলি বাহিনী ফ্লোটিলায় বাধা দেয়।

তাদের অন্তত আটটি নৌযান থামানো হয়—দেইর ইয়াসিন, হিউগা, স্পেক্টার, আদারা, আলমা, সিরিয়াস, আরোরা ও গ্রান্ডি ব্লু। তবে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোট ১৩টি নৌযান আটকানো হয়েছে।
‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ গাজার মানুষের জন্য সমুদ্রপথে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ। বহরে প্রায় ৪৪ দেশের ৫০০ মানুষ রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়ামের নাগরিকসহ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধি, আইনজীবী, চিকিৎসক, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীরা।

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2