নির্বাসনে থাকা সেই শাহবাজ শরিফ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

বহু নাটকীয়তার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ হারিয়েছেন সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান। দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন দীর্ঘ আটবছর নির্বাসনে থাকা মুসলিম লিগ-এন এর প্রধান নেতা শাহবাজ শরীফ।

তিনি শুধুমাত্র পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক নেতাই নন। তাঁর আরও একটি পরিচয় হলো তিনি দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভোট ভাই। দেশের বাইরে শাহবাজ ততটা পরিচিত না হলেও দেশের ভেতরে প্রশাসনিক দক্ষতার জন্য তার সুনাম রয়েছে।

সদ্য বিলুপ্ত পাকিস্তান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে বিরোধী দলনেতার পদে থাকা শাহবাজের এর আগে প্রশাসনিক প্রধানের দায়িত্ব সামলানোর অভিজ্ঞতা আছে। তিনবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর পদে ছিলেন তিনি। এ পদে সব থেকে বেশি দিন থাকার কৃতিত্ব তার।

তাছাড়া, সাবেক পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ দুর্নীতি সংক্রান্ত দুটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে লন্ডনে চলে যাওয়ার পরই তার দল পিএলএম-এন পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিলেন শাহবাজ।

১৯৯৯ সালে জেনারেল পারফেজ মুশারফের নেতৃত্বে পাকিস্তানে সেনা অভ্যুত্থানের পর পাকিস্তান ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন শাহবাজ শরিফ। ২০০০ সালে সৌদি আরবে নির্বাসনে থাকতে শুরু করেন তিনি। ২০০৭ সালে শাহবাজ আবার পাকিস্তানে ফেরেন তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করতে। ২০০৮ সালে নির্বাচনে জিতে ফের পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি।

পাকিস্তানের ২৩তম এই প্রধানমন্ত্রী নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা গঠন করেন। যারা আগামী ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে। ৭০ বছর বয়স্ক শাহবাজ ধনী ব্যবসায়ী হিসাবে পাকিস্তানে বেশ পরিচিত। পড়াশোনা শেষে পারিবারিক ব্যাবসায় যোগ দেন তিনি। বর্তমানে পাকিস্তানের একটি ইস্পাত কারখানায় যৌথ মালিকানা রয়েছে তাঁর।

১৯৫১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন দক্ষ প্রশাসক হিসেবে পরিচিত শাহবাজ শরিফ।

৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত তিনবার দেশটিতে বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে সেনাবাহিনী। এমনকি পাকিস্তানের কোনো প্রধানমন্ত্রীই এখন পর্যন্ত পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। তবে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় শাহবাজ শরিফ কি তাঁর পূর্ণ মেয়াদ সম্পূর্ণ করতে পারেন কিনা এবার তা-ই দেখার বিষয়।