• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

পাপেট নিয়ে কাজ করে জাতীয় পর্যায়ে সম্মানিত হলেন সায়মা করিম

প্রকাশিত: ২৩:১২, ২৩ নভেম্বর ২০২৩

আপডেট: ২৩:১৫, ২৩ নভেম্বর ২০২৩

ফন্ট সাইজ
পাপেট নিয়ে কাজ করে জাতীয় পর্যায়ে সম্মানিত হলেন সায়মা করিম

সিসিমপুরের টুকটুকি-কে সবাই চেনে। সিসিস্ট্রীটের পরামর্শে এই চরিত্রটি তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ তথা সাউথ এশিয়ায়। সেই সিসিমপুরের জনপ্রিয় চরিত্র টুকটুকি। টুকটুকি হিসেবে পারফর্ম করেন এবং টুকটুকির পাপেটটি পরিচালনা করেন যিনি তিনি বাংলাদেশের টেলিভিশন ও মঞ্চের জনপ্রিয় মানুষ সায়মা করিম। সম্প্রতি তিনি পুরস্কৃত হয়েছেন জাতীয় পর্যায় থেকে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল সোসাইটি অব পাপেট অ্যান্ড মাপেট পুরস্কৃত করলো সায়মা করিমকে।

বাংলাভিশনের সঙ্গে আলাপকালে অভিজ্ঞতা শেয়ার ও স্মৃতিচারণ করেন সায়মা করিম।

আপনি তো মঞ্চে কাজ করতেন নিয়মিত, টেলিভিশনে অভিনয় করেও আপনি পুরস্কৃত হয়েছেন বহুবার, টুকটুকি হিসেবে পুরস্কৃত হয়ে কেমন লাগছে?

দেখুন টুকটুকির সাথে আমার একটা আত্মার যোগ আছে। এই চরিত্রটিতে আমি অভিনয় করি এবং আমি নিজে এই পাপেটটি পরিচালনা করি। প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে আমি এটা করছি। তাই নিজের আত্মার চরিত্রটিতে পারফর্ম করার জন্য কেউ যখন পুরস্কৃত করে তখন সেটা বাড়তি পাওয়া হয়। নিজেকে আরও গর্বিত মনে হয়। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, যেকোনো ধরনের সম্মানই উৎসাহ যোগায়, জাতীয় পরযায়ের সম্মাননা তো আরও বেশি সম্মানের, আরও বেশি অনুপ্রেরনার।

আপনি একজন অভিনেত্রী, নির্দেশক, আপনি কেন পাপেট এবং মাপেট নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হলেন?

আমি মঞ্চে কাজ করতে করতে এক সময় দেখলাম মানুষের অনেক সীমাব্ধতা, অনেক কথাই তাকে দিয়ে বলানো যায় না। কিন্তু একটা পাপেট দিয়ে যেকোনো কথা বলানো সম্ভব। সামজের সঙ্গতী-অসঙ্গতী, ভুল-ত্রুটি সবই একটা পাপেটকে দিয়ে তুলে ধরা সম্ভব। তাই আমি পাপেট নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হলাম। সিসিমপুরের টুকটুকিকে নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখলাম আমি অত্যন্ত শক্তিশালী জায়গাতে একটি পাপেটকে নিতে পেরেছি। এই পাপেটগুলি শিশু কিশোরদের বিভিন্ন শিক্ষামূলক তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি তাদেরকে সোসালাইজেশনও শিখিয়েছে। শিশু-কিশোরদের বন্ধু হয়ে কাজ করেছে এই চরিত্রগুলি এবং টুকটুকি। বাংলাদেশের জন্য এই চরিত্রটি তৈরি করা হয়েছে এবং নাম করন করা হয়েছে টুকটুকি। কিন্তু অরিজিনালি এই চরিত্রগুলোর নাম ছিল কারমিট দ্যা ফ্রগ, বিগ বার্ড, অ্যালমো, অষ্কার, গ্রোভার, কুকি-মনস্টার, আর্নি, অ্যাবি, ফজি এসব।

মানুষ এবং পাপেটের পরিচালনা করতে গিয়ে কী পার্থক্য দেখলেন?

আমি দেখলাম, আমি বা আপনি একটা কথা বললে মানুষের অ্যাটেনশন পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে, কিন্তু একটা পাপেট কথা বলছে প্রথমেই সবাই আগ্রহী হয়। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, মানুষ কিছু বললে, মানুষ সহজে সেটা মনে রাখতে চায় না। কিন্তু পাপেট বা মাপেট কিছু বললে সহজেই মানুষের অন্তরে পৌছানো যায়। মাধ্যমটা অনেক বেশি শক্তিশালী এবং অনেক বেশি রেভুলোশনারি।

আপনার পরিচালনায় পাপেট ও মাপেটের কাজ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে প্রায় ২০ বছরের কাছাকাছি সময় ধরে। বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক সংগঠনগুলোও সেটা তাদের কাজে সেটা ব্যবহার করেছে। আপনাকে দেখে অনেক তরুণ-তরুণী এখন পাপেট-মাপেট নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হয়েছে। বিষয়টি আপনার কেমন লাগে?

২০০৪ সাল থেকে আমি পাপেট নিয়ে কাজ করি। সিসিমপুর এর হয়ে টুকটুকির গল্প বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ের টেরিস্টরিয়েল টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভি (বাংলাদেশ টেলিভিশন) বহু বছর ধরে প্রচারিত হয়েছে। সপ্তাহে চারদিন করে প্রচারিত হতো। স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল দেশ টেলিভিশন, দীপ্ত টেলিভিশন এবং বিভিন্ন এনজিও (নন গভ:অর্গানাইজেশন) এর চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে। এটা এমন আলোচনা তৈরি করেছে যে ভাবলেই গা শিউড়ে উঠে। আমি এখন কোনো মাইকে কিছু বললেই বাচ্চারা চিনে ফেলে, বলে টুকটুকি এসেছে। বিষয়টা আমাকে অনেক আন্দোলিত করে। আর পাপেটে পরবর্তি প্রজন্ম তৈরি হয়েছে এটাও আমাকে অনেক আনন্দ দেয়।

আপনি এখন পাপেটিয়ার্স, পাপেট যারা চালায় তাদের শিক্ষক, পাপেটের শিক্ষত আপনি প্রায় নয়টির বেশি চরিত্রকে তৈরি করেছেন। যার প্রায় প্রত্যেকটি বেশ আলচনায় এসেছে। আপনার কেমন অনুভূতি হয়?

আপনি জানেন যে, সিসিমিস্ট্রিট একটি পাইওনিয়ার শিশুদের অনুষ্ঠান, যা প্রায় ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে প্রচারিত হয়ে আসছে। এই শো-টিতে পুতুলের পাশাপাশি লাইভ অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও থাকে। যেখানে অনেক সেলিব্রেটি গেস্টরাও আসে। মুলত শিশুদের লারনিং এই সিরিজগুলোর মূল বিষয়। বাংলাদেশের মতো অনগ্রসর একটি দেশে এই চরিত্রগুলো শিশুদের শিক্ষাগ্রহনে আগ্রহী করতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছে।

আপনি প্রধানত যে চরিত্রটি পরিচালনা করেন সেই টুকটুকি সেটা সম্পর্কে একটু বলেন?

টুকটুকি একটা তরুণী চরিত্র। এটা সিসিমপুরের একটি লিডিং ক্যারেকটার। বাচ্চাদের সাথে তার প্রচণ্ড বন্ধুত্ব। টুকটুকি বাচ্চাদের শিক্ষার কথা বলে, সামাজিকিকরনের কথা বলে, শিশুদেরকে শিক্ষার প্রতি আগ্রহী করে তোলে, বিভিন্ন সায়েন্টিফিক কমিউনিকেশনের দিকে আগ্রহী করে তোলে। বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকেরা যে বিষয়গুলো শিশুদের মধ্যে দিতে অনেক সময় নেন টুকটুকি সেটা করে ফেলে অল্প সময়ের মধ্যেই। এখন এমন হয়েছে টুকটুকি মানেই সায়মা, আবার সায়মা মানেই টুকটুকি।

সব শেষে আপনি কী বলতে চান?

আমি শুধু আমার একটা অনুভতি তুলে ধরতে চাই সেটা হলো, আমার বিভিন্ন মানুষের সাথে বন্ধুত্ব হয়েছে সেটা অনেক সময় নষ্টও হয়েছে কিন্তু পাপেটের সাথে আমার যে আত্মার সংযোগ, যে বন্ধুত্ব সেটা কখনোই নষ্ট হয় নাই। কখনো নষ্ট হবেও না। পাপেট শক্তিশালী। পাপেট দিয়েই সমাজ বদল করে দেওয়া সম্ভব।

বিভি/জোহা/টিটি

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2