• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

আন্দোলন-নির্বাচন-কর্মসূচী নিয়ে আমীর খসরুর একান্ত সাক্ষাৎকার 

সুজন মাহমুদ

প্রকাশিত: ২৩:৪৫, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আপডেট: ২৩:৫৪, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ফন্ট সাইজ

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ-ব্যবসায়ী এবং সাবেক মন্ত্রী। ২০০১ সালে তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে  তিনি বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ‘ জাতীয় স্থায়ী কমিটি’র সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমান সময়ের বিএনপির আন্দোলন-কর্মসূচি এবং চলমান নানা ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সুজন মাহমুদ।

প্রশ্ন: অনেকদিন ধরেই বিএনপি এক দফার আন্দোলন করে যাচ্ছে আর আওয়ামী লীগও অনড় তাদের অধীনেই নির্বাচন করতে হবে। সেক্ষেত্রে বিএনপির এখনকার অবস্থান কি?

আমীর খসরু: আন্দোলনটা কিন্তু বিএনপির একার কোন আন্দোলন নয়, এটার বৈশিষ্ট কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সমস্ত জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে তার মুক্তির লড়াইয়ে নেমেছিল, আজকের প্রেক্ষাপট কিন্তু তেমনইভাবে স্বাধীনতার পর এটাই  সবচেয়ে বড় মক্তির আন্দোলন এবং এটা বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক, গণতান্ত্রিক ,সাংবিধানিক আধিকার ফিরে পাবার আন্দোলন।তার জীবনের নিরাপত্তা ফিরে পাওয়ার আন্দোলন, বাক স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ার আন্দোলন। সুতারাং এই আন্দোলনটা এখন আর বিএনপির একার আন্দোলন নয়, আমরা সমস্ত জাতিকে সাথে নিয়ে এখন সবাই কিন্তু আছে এই আন্দোলনের সাথে। এই আন্দোলনটা অনেকটা এরকম বলা যেতে পারে রাষ্ট্র, রাষ্ট্র মানে একটা রেজিম বনাম জনগণের লড়াই। যেভাবে পাকিস্তানীরা একটা রেজিম সৃষ্টি করেছিল যে বাংলাদেশের মানুষের সমস্ত অধিকার কেরে নেয়ার জন্য অর্থনীতি, রাজনৈতিক, গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়ার জন্য এমনকী ভোটাধিকার, ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সংসদকেও ক্ষমতা না দিয়ে,তো আজকের আন্দোলনটাও একই রকম। আবার আপনি রোহিঙ্গাদের সাথেও তুলনা করতে পারেন, শুধু পার্থক্যটা রোহিঙ্গারা নিজের দেশে নেই আর আমরা নিজের দেশে আছি। রোহিঙ্গারা যেরকম নিজের সমস্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত। ঠিক এখানে কিন্তু খুব একটা ব্যবধান আজকে নাই। সুতরাং এই আন্দোলনের বৈশিস্ট আলাদা রেজিমের বিরুদ্ধে জনগনের আন্দোলন। আর রেজিমের একটা সময়কাল আছে। আমি মনেকরি এই রেজিমের সময়কালটা পার হয়ে গেছে। গুম, খুন, হামলা-মিথ্যা মামলা, গায়েবী মামলা, নিপীড়ন এইসব কিছুর মাধ্যমে তারা এতদিন তাদের কোনমতে টিকে ছিল।আর মানুষ এখন রাস্তায় নেমেছে। এটা বিএনপির একার কোন বিষয় নয়। সুতারাং এরকম একটি আন্দোলনে এরকম একটি রেজিমের পরাজয় ব্যতীত আর কিছু চিন্তা করার কোন সুযোগ নেই। সেটা হতেই হবে।আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধে জিতেছি, আমরা ভাষার লড়াইয়ে জিতেছি, আমরা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে জিতেছি। আজকের আন্দোলনটা অনেক বেশি শক্তিশারী এবং অনেক বেশি মুক্তির প্রত্যাশার আন্দোলন এবং এই আন্দোলনে জনগণ বনাম একটি রেজিম। 

প্রশ্ন: একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদকাল শেষ হবে আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারী, নিয়ম অনুযায়ী মেয়াদ শেষের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়া কথা। সে হিসেবে আগামী নভেম্বরের ২ ফেব্রুয়ারি থেকে সেই দিনক্ষণ গণনার সময় শুরু।এমতাবস্থায় সরকার হটাতে বিএনপির এক দফার আন্দোলন করে আসছে। তবে, এমন আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার হঠানো কতটা সম্ভব?

আমীর খসরু: আন্দোলনটাকে আপনি কিভাবে দেখছেন, আন্দোলন কিন্তু চলমান চলমান প্রক্রিয়া। আজকে এক রকম, কাল এক রকম, পরশু আরেক রকম। এর নিজস্ব একটা গতি প্রকৃতি আছে, একটা চরিত্র আছে। এধরনের আন্দোলন যখন চলমান থাকে তখন বিভিন্ন ধরণের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন ধরনের কর্মসুচর যেখানে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি দেয়ার সেধরণের কর্মসূচি আপনাকে দিতে হবে। আমাদের আন্দোলটা হলো একটা অহিংসা আন্দোলন, যেই অহিংস আন্দোলনের আন্দোলনের মাধ্যমে আমি আগেই বলেছি এই রেজিম-রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মোকাবেলা করছি এবং সেই জায়গাটাতে আমরা মনে করি বাংলাদেশের জনগণের সাথে এরকমের একটা রেজিম টিকে থাকতে পারেনা। হ্যা, গুম-খুন-হত্যা-মিথ্যাম মামলা, এরমধ্যেই বিএনপির ২০ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। প্রতিনিয়তই গ্রেফতার হচ্ছে, হামলা হচ্ছে, মামলা হচ্ছে, হামলা হচ্ছে, বাড়ি ঘর ভাংচুর হচ্ছে, কিন্তু জনগণ রাস্তায় নেমেছে। এইযে বিচারকদের ব্যবহার করা হচ্ছে। যেটা নিয়ে আপনারা দেখছেন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসে এসেছে। ড.ইউনুসের পক্ষে যারা লিখছে তারাও কিন্তু বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অ্যামেরিকানদের ভিসা নীতিতে বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে।আর বিচারকরা নিজেদের বক্তব্যের মাধ্যমেও নিজেদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এটাতো আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। সুতারাংবিচার বিভাগ হোক,সরকারী কর্মকর্তা-আইনশৃংখলা বাহিনী নিয়ে তাদের যে টিকে থাকার প্রক্রিয়া, এই প্রক্রিয়ার ওপর তাদের তাদের নির্ভরশীলতা।আর আমাদের নির্ভরশীলতা হলো জনগণের ওপর । সুতারাং তাদের এই টিকে থাকার প্রক্রিয়াটা কিন্তু টেকসই না, এই নির্ভরশীলতা নিয়ে একটা সময়সীমা পর্যন্ত টিকে থাকা যায়। 

প্রশ্ন: গত দুটো নির্বাচনে বিএনপির অবস্থান ছিল তারা নির্বাচনে যাবেনা,কিন্ত নির্বাচন হয়েছে এবং সরকারের মেয়াদকালও শেষ হয়েছে। একই সাথে আপনি বললেন অনেক মামলায় জর্জরিতও বিএনপি, সেক্ষেত্রে এবার নির্বাচনেও বিএনপির এই অবস্থান আপনাদের জন্য কতটা চ্যালেঞ্জের ?

আমীর খসরু: আমিতো শুরুতেই বলেছি এটা রেজিমের বিরুদ্ধে জনগণের অবস্থান। তারা গুম–খুন–হত্যা-মিথ্যা-গায়েবি মামলা-গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ এসব করে এতদিন টিকে ছিল। এটার একটা সময়কাল আছে, আর সেই সময়কাল পার হয়ে গেছে। তবে, এখন মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। মানুষের সহ্যের একটা সীমা আছে, আর  এসব নির্যাতন-নীপিড়নে মানুষ আর ভয় পায়না। আমরা মনে করি দেশের মানুষ আজ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। তারা রাস্তায় নেমেছে এবং গুম-খুন-হামলা-মিথ্যা মামলা এসব উপেক্ষা করেই তারা এবার রাস্তায় নেমেছে। এই সময়টা যখন চরে আসে, তখন কিন্তু আর তাদেরকে রোধ করার ক্ষমতা কারোর থাকেনা। বিশেষ করে একটা অনির্বাচিত, অবৈধ-দখলদার সরকারের পক্ষে এটার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে টিকে থাকার কোন সুযোগ নাই। সেই সময়টা বাংলাদেশে চলে এসেছে। এরসাথে বিশ্ববিবেক বিশ্বের গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোও আজ খোলাখুলি সমর্থন দিচ্ছে আজকে তাদের বিরুদ্ধে (সরকারের বিরুদ্ধে) জনগণের এই অবস্থানকে। সুতারাং চারদিক থেকে তাদের সেই নীপিড়ন নির্যাতনের ক্ষমতা ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হচ্ছে। 

প্রশ্ন: আওয়ামী লীগের অভিযোগ বিদেশের ব্যবহার করে বাংলাদেশের ক্ষতি সাধন করছেন, অর্থাৱ বাংলাদেশের ওপর যেসব নিষেধাজ্ঞা আসছে সেগুলো দেশের জনগণের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে, সেক্ষেত্রে আপনাদের বক্তব্য কি?

আমীর খসরু: নিষেধাজ্ঞাগুলো কেন আসছে? একটা জিনিস বুঝতে হবে এই বিশ্বে বাংলাদেশ একটি দেশ হিসেবে আমরা কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবেই কতগুলো বিষয় নিয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।গনতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন-জীবনের নিরাপত্তাসহ অনেকগুলো বিষয়; আমরা কিন্তু জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার সাথে অন্যান্য দেশের মতো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হতে পারে না। ওগুলোর যখন বাধাগ্রস্থ বা হরণ করবে তখন কিন্তু বিশ্ববিবেক এবং বিশ্বের যেসব গণতন্ত্রকামী দেশ এবং সংস্থাগুলো আছে জাতিসংঘসহ তাদের পক্ষ থেকে এখানে তাদের মতামত দেওয়া এবং অবস্থান নেয়া খুবই স্বাভাবিক। এটা শুধু বাংলাদেশে  হচ্ছে না আমাদের পার্শ্ববর্তী মায়ানমারের ওপরেও হচ্ছে। এরকম যারা স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট আছে তাদের সবার বিরুদ্ধেই হচ্ছে। তারাতো আমাদের দেশের ডেভেলপমেন্ট পার্টনার। এর বাইরেও আমাদের সার্বিক কার্যক্রমে প্রতিনিয়ত পার্টনার হিসেবে কাজ করছে। সুতরাং এটা আজকে তাদের বিরুদ্ধে যাচ্ছে বলে তারা আজ হয়তো মনে করতে পারে। ওগুলোতো কোন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হতে পারেনা। বিশ্বের অন্যান্য দেশের পদক্ষেপের কারণে যদি বাংলাদেশের ক্ষতিগ্রস্থ হয়, তাহলেতো পরিচ্ছন্ন নির্বাচনের দিকেই তাদের যাওয়াটা শ্রেয়।মানবাধিকার হরণ না করে একটা পরিচ্ছন্ন নির্বাচন দিয়ে একটা জনগণের নির্বাচনে সংসদ হলে সমস্যা তো সমাধান হয়ে যায়। তো তারা কেন জনগণের ভোটাধিকার কেরে নিচ্ছে, মানবাধিকার কেরে নিচ্ছে, আইনের শাসন কেরে নিচ্ছে? এগুরো না করলেই তো হয়।এগুলো যতদিন করবে, ততদিন বাংলাদেশের মানুষও যেভাবে প্রতিবাদ করবে, তেমনি বিশ্ববিবেকও করবে, বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোও করবে, জাতিসংঘও করবে, সবাই করবে। এখান থেকে বের হওয়ার কোন সুযোগ নেই। আপনি কম্প্লেইন করতে পারবেন। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিয়ে নির্বাচিত সংসদ যতদিন না হবে, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে,ততদিন আপনাকে অন্যদের কাছে জবাবদিহি হতে হবে।শুধু বাংলাদেশের মানুষের কাছে নয়, বিশ্ব বিবেকের কাছে জবাবদিহি হতে হবে, জবাবদিহি হতে হবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে  আমরা যেখানে দায়বদ্ধ-প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; সে জায়গাগুলোতে তাদের জবাবদিহি হতে হবে। তারা জবাবদিহি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর অফিসে এসে যদি কেউ বলে, তারা এদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায, মানবাধিকার দেখতে চায়, আইনের শাসন দেখতে চায়, এর থেকে আর কোন লজ্জার তো আর কিছু হতে পারেনা। তাদের পক্ষে যেটা করা দরকার; একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার সংসদ হলে এখান থেকে উত্তোরণ হয়ে যায়।

প্রশ্ন: নির্বাচনে আর সময় নেই। সেক্ষেত্রে আপানারা সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোন আলোচনার আহ্বান পেয়েছেন কিনা? বা আপনারা কোন আহ্বান জানাবেন কিনা?

আমীর খসরু:  শোনেন, যার জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে, তারা ততক্ষণ ক্ষমতা ছাড়বেনা, যতক্ষণ না জনগণ তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে ক্ষমতা ছাগড়তে বাধ্য করে। কারণ এরাতো ভোট করে ক্ষমতায় না যাওয়ার জন্য আজকে জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। সুতারাং যারা জনগণকে বাইরে রেখে বার বার ক্ষমতা দখরের স্বাদ পেয়েছে, তারাতো গনতন্ত্রের পথে চলতে চাইবেনা। তারা কেন আলোচনায় আসবে? এজন্যই জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে,তাদেরকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে। যারা একটা অনির্বাচিত দখলদার, তার সাথে কিসের আলোচনা বা যারা মানুষের সব ধরণের আধিকার কেড়ে নিয়ে বসে আছে, তাদের সাথে কিসের আলোচনা? তবে, হ্যা-তারা যদি তত্ত্ববাধায়ক সরকারের বিষয়ে আলোচনায় আসতে চায় সে ব্যাপারে আলোচনা হতে পারে আওয়ামী লীগের সাথে কোন রেজিমের সাথে নয়। 

প্রশ্ন: সেক্ষেত্রে আপনার কি মনে হয় আগামীর বাংলাদেশ একটা সংঘাতের দিকে যাচ্ছে?

আমীর খসরু:  একটা জিনিস আমি পরিস্কার করে বলি, বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে অহিংস আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। প্রতিবাদ করা আমার নাগরিক আধিকার, এটা করার সময় বা আমার প্রতিবাদ করার সময় যদি তারা গুম-খুন-হত্যা চালিয়ে যায়, বা সহিংস হয়ে আসে আমাদের ওপর, তখন জনগণ তার প্রতিরোধ করবে। আর এই প্রতিরোধ গড়ে তোলাটাও সাংবিধানিক আধিকার। অধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলন করাটাও কিন্তু সাংবিধানিক অধিকার। 

প্রশ্ন: এতদিন ধরে সেই আন্দোলনে এতদিন ধরে কোন সফলতা আসেনি। সামনে সেটার সফলতার সম্ভাবনা কতটুকু?

আমীর খসরু: এই আন্দোলনটা হচ্ছে, একটা রেজিমের বিরুদ্ধে জনগণের আন্দোলন। দেশের –বিদেশের সকলের বাংলাদেশের দৃষ্টি এখন, কেন তাদের দৃষ্টি এখানে? তারা তো দক্ষিণ এশিয়ার অন্য কোন দেশের দিকে যাচ্ছে না? কেন তারা বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সবাই কথা বলছে? সুতারাং এটা নিশ্চিতভাবে যে, একটা সময় এসেছে, বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে,বিশ্ববিবেক, বিশ্বের গণতন্ত্রমনা বিভিন্ন দেশ-সংস্থা আগামী নির্বাচন নিবীড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এখানে ভোট চুরি করে আবার ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব না। প্রকৃতভাবে দেশের মানুষের বিপক্ষে গিয়ে কোন শক্তি একটা সময় পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে, তারপরে কিন্তু পারে না। 

প্রশ্ন: আমরা দেখেছি যে এতদিন ধরে বিএনপি পদযাত্রা-কালো ব্যাচ ধারণ, পতাকা মিছিলের মতো অহিংস আন্দোলন করে আসছে, আর অন্যদিকে যেহেতু নির্বাচনের সময়সীমাও  ঘনিয়ে আসছে, সেক্ষেত্রে সামনে আপনাদের আন্দোলনের ধরণ পরিবর্তন হতে পারে কিনা বা কঠোর অন্য কোন কর্মসূচি আসছে কিনা?

আমীর খসরু:  শোনেন, আন্দোলন কোন দিনক্ষণ বলে আসে না। এটা চলমান; এর নির্দিষ্ট একটা গতি প্রকৃতি আছে। যখন যে ধরণের আন্দোলন প্রয়োজন পড়বে, এবার সময় অনুযায়ী সে ধরণের আন্দোলনের রুপ চেঞ্জ হবে। 

প্রশ্ন: সর্বশেষ একটা প্রশ্ন; এ অবস্থায় সরকার এবং জনগণের প্রতি আপনাদের বার্তা কি?

আমীর খসরু: বার্তা হচ্ছে এক দফা- এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা তার হাতে ফিরিয়ে দিতে। যারাই সিদ্ধান্ত নিবে কারা আগামী দিনের নির্বাচনে কারা সংসদে যাবে। যারা এই মালিকদের কাছে জবাবাদিহিতা করবে। সরকারের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, দেয়ালের লিখন পড়ুন। পরিস্কার বার্তা আছে; বিদায় হওয়ার জন্য বার্তা আছে। দেওয়ার লিখন যদি না পড়েন সেটা তাদের পরিনতি তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। সেই পরিণতি তাদের জন্য ভালো হবে না। 
আর জনগণের উদ্দেশ্যে, তাদের মালিকানা ফিরিয়ে নিতে আজ যে সংগ্রাম চলছে, এখানে সবাইকে এগিয়ে আসতে আমরা সবাইকেই বলবো। এটা বিএনপির আন্দোলন নয়, এটা তাদেরই (জনগণের)আন্দোলন। তার (জনগণের) মালিকানা ফিরিয়ে পাবার আন্দোলন। এই আন্দোলনে সবাই সম্পৃক্ত হচ্ছে আমরা দেখছি, আর যারা এখনো সম্পৃক্ত হননি, সবাইকে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

বিভি/এ.জেড

মন্তব্য করুন: