• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

নির্ধারিত সময়ে বর্জ্য অপসারণই এখন বড় চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ১৬:৩১, ৭ জুন ২০২৫

আপডেট: ১৮:০২, ৭ জুন ২০২৫

ফন্ট সাইজ
নির্ধারিত সময়ে বর্জ্য অপসারণই এখন বড় চ্যালেঞ্জ

রাজধানীবাসী নিজ নিজ সুবিধা অনুযায়ী বাসার আঙিনা, গলি কিংবা প্রধান সড়কেই পশু কোরবানি দিয়েছেন। এতে দ্রুত বর্জ্য অপসারণ নিয়ে চ্যালেঞ্জে পড়তে পারে সিটি করপোরেশনগুলো। যদিও তারা দাবি করছে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতি প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, শনিবার দুপুরের পর থেকেই বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু হবে এবং রবিবারের মধ্যেই পুরো রাজধানীকে পশুর বর্জ্যমুক্ত করা হবে।

দুই সিটি করপোরেশনের হিসাব অনুযায়ী, এবার প্রায় সাত লাখ পশু কোরবানি হতে পারে, যার ফলে তৈরি হতে পারে প্রায় ৫০ হাজার টন বর্জ্য। অতীতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণের সফল নজির রয়েছে—যেখানে কাউন্সিলর এবং মেয়ররা মাঠে থেকে কার্যক্রম তদারকি করতেন।

তবে এবারে ভিন্ন চিত্র। মেয়র ও কাউন্সিলরশূন্য অবস্থায় রয়েছে উভয় সিটি করপোরেশন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র পদে বসানোকে কেন্দ্র করে গত ১৪ মে থেকে সব কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আন্দোলনে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মীরাও অংশ নেন। এতে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে তাদের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

ভৌগোলিক ও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে ডিএসসিসি’র বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আগেই চ্যালেঞ্জের মুখে। নগর ভবনের অচলাবস্থা দীর্ঘ হওয়ায় কার্যক্রমে স্থবিরতা এসেছে। এর মধ্যেই কোরবানির অতিরিক্ত বর্জ্য যুক্ত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। যদিও ডিএসসিসির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া ১২ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের অঙ্গীকার করেছেন, কিন্তু বাস্তবায়ন নিয়ে নগরবাসীর মনে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।

অন্যদিকে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ দায়িত্ব নেওয়ার পর বেশ সক্রিয় থাকলেও তার বিরুদ্ধে হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠার পর কার্যক্রমে ধীরগতি দেখা দেয়। গণঅধিকার পরিষদের বিক্ষোভের জেরে তিনি প্রায় এক সপ্তাহ নগর ভবনে অনুপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া, একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের কারণে কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে সার্বিক কার্যক্রমে।

বড় আরেকটি সংকট হলো—গত ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানে বিক্ষোভকারীরা দুই সিটি করপোরেশনের প্রায় ২০০ যানবাহনে আগুন দেয়, যা এখনো পুরোপুরি পুনরুদ্ধার হয়নি। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে বিদ্যমান যানবাহন দিয়ে বিশাল পরিমাণ বর্জ্য ১২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ আদৌ সম্ভব হবে কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।

পূর্ববর্তী বছরগুলিতে কোরবানির পশুবর্জ্য সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি হোল্ডিংয়ে পলিব্যাগ ও ব্লিচিং পাউডার বিতরণ করা হতো, যা পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা নির্ধারিত স্থান থেকে সংগ্রহ করে এসটিএস এবং সেখান থেকে ডাম্প ট্রাকে করে মাতুয়াইল বা আমিনবাজার ল্যান্ডফিলে নিয়ে যেতেন।

তবে এবার সে কার্যক্রমেও ঘাটতি দেখা গেছে। 

ফলে যারা অসচেতন, তারা পশুবর্জ্য ফেলে দিচ্ছেন বাড়ির আশপাশের ড্রেন, নালা বা খালে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি।

তবে একটি ইতিবাচক দিক হলো—এবার প্রথমবারের মতো ঈদ উপলক্ষে সরকার ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে। যার ফলে রাজধানী অনেকটাই ফাঁকা, জনসংখ্যার ঘনত্ব কমেছে। তবে যারা শহরে থেকে গেছেন, তারা এই বর্জ্য ও পরিবেশ দূষণ থেকে কীভাবে রেহাই পাবেন, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।

বিভি/ এসআই

মন্তব্য করুন: