• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

১৯ জুলাই: ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ দ্বিতীয় দিনে সারাদেশে নিহত ৬৭, কারফিউ জারি

প্রকাশিত: ২৩:৫৪, ১৮ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ২৩:৫৪, ১৮ জুলাই ২০২৫

ফন্ট সাইজ
১৯ জুলাই: ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ দ্বিতীয় দিনে সারাদেশে নিহত ৬৭, কারফিউ জারি

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই (শুক্রবার) সারাদেশে দ্বিতীয় দিনের মতো ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেন। এ কর্মসূচি ঘিরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর, গুলি, অগ্নিসংযোগ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। 

এদিন ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে অন্তত ৬৭ জন নিহত হন। এর মধ্যে শুধু ঢাকায় অন্তত ৬২ জন নিহত হন। ঢাকার বাইরে রংপুরে দুইজন, সাভার, সিলেট ও নরসিংদীতে একজন করে মোট পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। (সূত্র: নিউ এইজ, ২০ জুলাই, ২০২৪)।

তবে ২০২৪ সালের ২০ জুলাই প্রকাশিত দৈনিক সমকালের খবর অনুযায়ী, ১৯ জুলাই রাজধানীর বাইরে ১২ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে রংপুরে পাঁচজন, গাজীপুর, বগুড়া, ময়মনসিংহ, সিলেট ও মাদারীপুরে একজন করে নিহত হন। এছাড়া সারাদেশে শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, পুলিশ, সাংবাদিক, পথচারীসহ কয়েকশ মানুষ আহত হন। 

১৯ জুলাই শিক্ষার্থী ও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দিনভর ব্যাপক সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি করা হয়। হাসপাতালগুলোতে গুলিবিদ্ধ মানুষের ঢল নামে। আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমসিম  খেতে হয়  হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের।

এদিন বিআরটিএ ভবন ও পিবিআই কার্যালয়সহ বেশ কয়েকটি সরকারি স্থাপনায় আগুন দেওয়া হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে ঢাকায় মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ডিএমপি। 

রাতে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, বিজিবির ডিজি ও ডিএমপি কমিশনার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শুক্রবার (১৯ জুলাই) রাত ১২টা থেকে সারাদেশে কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েন করা হয়। মধ্যরাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে আটক করা হয়। 

পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৯ জুলাই সকাল থেকেই দ্বিতীয় দিনের মতো কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালনে রাস্তায় নামেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর রামপুরা ও যাত্রাবাড়ীতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। পরে রাজধানীর ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, বাড্ডা, রামপুরা, উত্তরা ও মহাখালীতেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এছাড়া বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ঘিরেও রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় সংঘর্ষ হয়। এর মধ্যে প্রেসক্লাব ও পল্টন এলাকাজুড়ে ব্যাপক সংঘর্ষের চিত্র দেখা যায়।

ঢাকার বাইরে খুলনার শিববাড়ী, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, চট্টগ্রাম, রংপুর, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট ও গাজীপুরে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গোলযোগের মধ্যে নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলা চালিয়ে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটে। কারা কর্মকর্তা ও কারারক্ষীদের জিম্মি করে সেখান থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। 
শুক্রবার দিনভর সংঘর্ষে শুধু হতাহত নয়, অনেক সরকারি-বেসরকারি ভবন ও স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। রামপুরা থানা ও রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ি, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে পুরবী পর্যন্ত পাঁচটি পুলিশ বক্সে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। বনানীতে বিআরটিএ-এর সদর কার্যালয়, মিরপুরে অবস্থিত সংস্থাটির মেট্রো-১ কার্যালয়, মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পুরোনো ভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। মিরপুরে বিআরটিএ অফিসে থাকা বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। 

১৯ জুলাই মেট্রোরেলের কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর চালানো হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এদিন রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে  গণপরিবহণ ও ব্যক্তিগত যান চলাচল করতে দেখা যায়নি। ঢাকা থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকা থেকে আন্তর্জাতিক অনেক ফ্লাইট বাতিল করা হয়। ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের রেল চলাচলও বন্ধ ছিল।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন অব্যহত রাখার কথা জানান।  

এদিন আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোড়া হয়। তবে র‌্যাবের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘তারা আকাশ থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে। হেলিকপ্টার থেকে কোনো গুলি ছোড়া হয়নি, বরং উদ্ধার কার্যক্রম চালানো হয়েছে।’  

বিজিবির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে পুঁজি করে যারা ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালাচ্ছে, তাদের শক্ত হাতে দমন করা হবে।’

এদিন সরকারের সঙ্গে সংলাপের প্রস্তাব ফের প্রত্যাখ্যান করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র অন্দোলন ৯ দফা দাবি পেশ করে। আন্দোলনের সমন্বয়করা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। 

এদিন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ান তাদের অভিভাবকরাও। ‘সন্তানের পাশে অভিভাবক’ শীর্ষক ব্যানারে রাজধানীর শাহবাগে মানববন্ধন করেন সর্বস্তরের অভিভাবক সমাজ। 

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2