ফিরে দেখা: জুলাই ৩০, ২০২৪

ফাইল ছবি
২০২৪ এর ৩০ জুলাই। এদিন কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করেছিলো ফ্যাসিস্ট সরকার। লোক দেখানো এই কর্মসূচি প্রত্যাখ্যান করেছিলো সাধারণ মানুষ। গণহত্যার প্রতিবাদে এদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছিলেন তারা। শোকের বদলে বিপ্লবের লাল রঙে ফেসবুকের প্রোফাইল রাঙিয়েছিলেন অনেকে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের খবরে উদ্বেগ জানিয়েছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এদিন সরকারের ব্যস্ততা ছিলো জামায়াত নিষিদ্ধের প্রস্তুতিকে ঘিরে।
রক্তাক্ত জুলাইয়ের প্রতিটি দিনই ছিলো আঁধার পেরিয়ে আলোর দিকে অতি আকাঙ্ক্ষিত যাত্রার এক একটি মাইলফলক। ১৬ জুলাই থেকে রাজপথে রক্ত ঝরেছে অনেক, তবুও তারুণ্যের চোখে প্রাণের বিনিময়ে ফ্যাসিবাদের অবসান আর বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের অদম্য চাওয়া ছড়িয়ে পড়ছে গোটা জাতির মননে।
এদিন রাষ্ট্রীয় শোক পালন করেছিলো আন্দোলনকারীদের দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ দেওয়া আওয়ামী সরকার। আহতদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। প্রাণহানির ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তে জাতিসংঘের সহায়তা নেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।
তবে, ফ্যাসিস্টদের এই লোক দেখানো কর্মসূচি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন আন্দোলনকারীরা। ঢাকাসহ সারাদেশে চোখে-মুখে লাল কাপড় বেধে হত্যাকাণ্ডের বিচার ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেছিলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ। সরকারি শোক প্রত্যাখ্যান করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রোফাইল লাল রঙে রাঙিয়ে ছিলেন বিক্ষুব্ধ নাগরিকরা।
ছয় সমন্বয়কের মুক্তি এবং আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিতে সব মৃত্যুই দুঃখজনক বলে মন্তব্য করলেও সেদিন গণহত্যা বন্ধে সাহসী কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি আদালত। অন্যদিকে ছয় সমন্বয়কসহ ডিবির হাতে আটক সকল শিক্ষার্থীকে মুক্তি দিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিল বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ।
এদিন, বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণের খবরে উদ্বেগ জানান জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ দেওয়া এবং আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছিলেন ইইউর তখনকার পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল।
সংবাদ সম্মেলনে গণগ্রেফতারের অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন সে সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, জানিয়েছিলেন পরদিন থেকে কারফিউ শিথিল করা হবে। ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে ছিল আন্দোলনকারীদের দমনের প্রচ্ছন্ন হুমকি। অন্যদিকে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দিয়ে রাজনৈতিক সমাধানের পথে হাটতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আন্দোলন থেকে মানুষের দৃষ্টি সরাতে জামায়াতকে নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া নিয়ে এদিন ব্যস্ত ছিলো ফ্যাসিষ্ট সরকারের উচ্চপদস্থরা।
বিভি/এসজি
মন্তব্য করুন: