• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

কক্সবাজারের নুনিয়াছড়া থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ যাবে সেন্টমার্টিন 

বাসস

প্রকাশিত: ১০:৪৯, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
কক্সবাজারের নুনিয়াছড়া থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ যাবে সেন্টমার্টিন 

কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনে যাবে পর্যটকবাহী জাহাজ। আইনগত বিধি নিষেধ থাকায় কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী বীচ থেকে পর্যটনবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিন যাওয়ার সুযোগ নেই। 

সোমবার (২৭ অক্টোবর) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিএ এবং নৌপরিবহন অধিদপ্তরকে নীতিগত সম্মতি দিয়ে পাঠানো চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত এ চিঠিতে পাঁচ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের গত ১৯৯৯ সালের ১৯ এপ্রিল কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্র সৈকতকে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করা হয়েছে। ইসিএ এলাকায় কক্সবাজার পৌরসভা (রাজস্ব বিভাগের রেকর্ড করা সমুদ্র সৈকত/বালুচর/খাড়ি/বন/জলাভূমি) এবং ইনানী মৌজা ও সেন্টমার্টিন দ্বীপ অন্তর্ভূক্ত বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০) এর ৫(৪) ধারা মোতাবেক “প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন বলিয়া ঘোষিত এলাকায় কোন ক্ষতিকর কর্ম বা প্রক্রিয়া চালু রাখা বা শুরু করা যাইবে না।” 

প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০১৬ এর বিধি১৮(ক) অনুযায়ী ‘যে সকল ক্ষতিকর কাজ (কর্ম) বা প্রক্রিয়া চালু রাখা বা শুরু করা যাইবে না উহা নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রাকৃতিক অবস্থা ও জীববৈচিত্র্য,বণ্যপ্রাণীর আবাসস্থলসহ সংরক্ষিত বন ও রক্ষিত এলাকা ,নদ-নদী,খাল-বিল,প্লাবনভূমি,হাওর-বাওড়,লেক,জলাভূমি,পাখির অঅবাসস্থল,মৎস্য অভয়াশ্রমসহ অন্যান্য জলজ প্রাণি ও উদ্ভিদের জলজ অভয়াশ্রম,জলাভূমির বন,ম্যানগ্রোভ ও উপকূলীয় এলাকার অবক্ষয়’-এর বিষয়টি বিবেচনাযোগ্য।

চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো: জমির উদ্দিন বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আগের নিয়মেই কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনে যাবে পর্যটকবাহী জাহাজ।

উল্লেখ্য, সেন্টমার্টিন দ্বীপের অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের রক্ষায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকার গত ২২ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত ১২টি নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। 

উল্লেখিত সেই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্ট মার্টিন দ্বীপে কোনো নৌযান চলাচলের অনুমতি দিতে পারবে না। পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। সেখানে প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস এবং কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে।

এতে আরো বলা হয়, প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন না। দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচি এবং পর্যটক উপস্থিতিও এবার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। নভেম্বর মাসে পর্যটকেরা শুধু দিনের বেলায় ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত্রিযাপন করা যাবে না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে। ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। 

সেন্ট মার্টিনের প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখতে দ্বীপে রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি বা বারবিকিউ পার্টি করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেয়াবনে প্রবেশ, কেওড়া ফল সংগ্রহ বা ক্রয়-বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুক ও অন্যান্য জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এ ছাড়া সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ যেকোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।

নিষিদ্ধ পলিথিন বহন করা যাবে না এবং একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক, যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিকের চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ৫০০ ও ১০০০ মিলিলিটারের প্লাস্টিক বোতল ইত্যাদি বহন নিরৎসাহিত করা হয়েছে। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এই নতুন নির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের নাজুক পরিবেশ ও অনন্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকবে এবং দ্বীপটি দায়িত্বশীল ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে উঠবে বলে আশা করছে সরকার।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2