যে কারণে বিমানবন্দরে কার্গো ভিলেজের আগুন, জানালো তদন্ত কমিটি
রাজধানী ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের লাগা আগুন কুরিয়ার সার্ভিসের পণ্যের স্তূপ থেকে সূত্রপাত হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটি। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে এক বিফ্রিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব তথ্য জানান। এর আগে একই দিন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন তুলে দেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এটা কোনো নাশকতা ছিল না, শর্ট সার্কিট থেকে কুরিয়ার সার্ভিসের স্তূপে আগুনের সূত্রপাত।’
প্রেস সচিব বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে গত মাসের ১৮ তারিখে একটা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়েছিল, সেই অগ্নিকাণ্ডের তদন্তের রিপোর্ট আজকে পেশ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি পেয়েছে যে, বিভিন্ন কুরিয়ার এজেন্সির জন্য নির্ধারিত ৪৮টি ছোট ছোট লোহার খাঁচার অফিস ছিল কুরিয়ার শেডের ভেতরে। অফিস এলাকায় ফায়ার অ্যালার্ম, স্মোক ডিটেক্টর ও স্প্রিংলার ছিল না। আপনি জানেন, স্প্রিংলার দিয়ে পানি দেওয়া হয়। কোনো অগ্নিনির্বাপক হাইড্রেন্ট ছিল না। কোনো ধরনের নিয়মের তোয়াক্কা ও সতর্কতা ছাড়াই পলিথিনে মোড়ানো কাপড়ের রোল, রাসায়নিক পদার্থ, সংকুচিত বোতলের পারফিউম এবং বডি স্প্রে, ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র, ব্যাটারি, ওষুধজাত পণ্যের কাঁচামালের মতো দাহ্য পণ্য সেখানে স্তূপ করে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেদনে ৯৭ জন সাক্ষীর মৌখিক ও লিখিত সাক্ষ্য জমা দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, এটা কোনো নাশকতা ছিল না। বৈদ্যুতিক আর্কিং এবং শর্ট সার্কিটের কারণে এই আগুনটা লাগে। শর্ট সার্কিটের কারণে কুরিয়ার শেডের বর্ধিত অংশের উত্তর-পশ্চিম কোণের পাশাপাশি অবস্থিত কয়েকটি কুরিয়ার খাঁচার মধ্যবর্তী স্থানে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। তুরস্ক হতে আগত বিশেষজ্ঞ দল, বুয়েট বিশেষজ্ঞ, অগ্নিনির্বাপক বিশেষজ্ঞ এবং সিআইডি ফরেনসিকের প্রতিবেদনে উল্লেখিত অগ্নিকাণ্ডের কারণ নিশ্চিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ অক্টোবর দুপুরে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। আগুন লাগার পর মুহূর্তেই কালো ধোঁয়া উড়তে থাকে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধোঁয়ার পরিমাণ বাড়তে থাকে। এই ধোঁয়া দেখা যায় প্রায় ৫-৬ কিলোমিটার দূর থেকেও। অগ্নিকাণ্ডের ফলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। অগ্নিনির্বাপণে কাজ করে বাংলাদেশ বিমান, সেনা ও নৌবাহিনী। প্রায় ২৭ ঘণ্টা চেষ্টার পর কার্গো ভিলেজে লাগা আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণ হয়।
বিভি/পিএইচ




মন্তব্য করুন: