• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

পভিডিন আয়োডিনে দ্রুত করোনামুক্তি: গবেষণা

প্রকাশিত: ১৭:১৫, ১১ এপ্রিল ২০২১

আপডেট: ১৭:২৩, ১১ এপ্রিল ২০২১

ফন্ট সাইজ
পভিডিন আয়োডিনে দ্রুত করোনামুক্তি: গবেষণা

এক শতাংশ পভিডিন আয়োডিনের ব্যবহারে করোনাভাইরাস পজিটিভ রোগীরা দ্রুত নেগেটিভ হচ্ছেন বলে বাংলাদেশের কয়েকজন চিকিৎসকের গবেষণায় উঠে এসেছে। বিএসএমএমএমই'র প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের ডা: ইকবাল মাহমুদ চৌধুরী ও তার পাঁচ সহযোগী চিকিৎসকের এ গবেষণায় দেখানো হয়েছে, মিশ্রণটি নিয়ে ৪ ঘণ্টা পরপর কুলি করলে এবং এই মিশ্রণের কয়েক ফোটা নাকে ও চোখে প্রয়োগ করলে ব্যবহারকারী করোনাভাইরাস পজিটিভ থেকে দ্রুত নেগেটিভ হচ্ছেন। এছাড়া মিশ্রণটি ব্যবহার করলে আক্রান্তের মৃত্যুর আশঙ্কা কমে যাচ্ছে এবং তাঁদের অক্সিজেনও কম প্রয়োজন হচ্ছে।

এ বিষয়ে গবেষণার প্রধান ডা: ইকবাল মাহমুদ চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, পভিডিন আয়োডিন দিয়ে কুলি করা, নাকে অথবা চোখে ড্রপ ব্যবহার করা খুবই সহজ।

এই গবেষণা দলে আরো ছিলেন নীলুফার শবনম, তাজিন আহসান, মো: সাইফুল কবির, রাশেদ মো: খান এবং এস এম আবু আহসান। তাঁরা সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক।

গবেষণাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাটি বায়ো রিসার্চ কমিউনিকেশন জার্নালে ছাপা হয়েছে। এটি একটি আন্তর্জাতিক জার্নাল। এ ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্যানডেমিক রেসপন্স এবং ইন্দোনেশিয়ার হাসপাতালে এ বিষয়ে গবেষণা চলমান রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ গবেষণাটির স্বীকৃতি দিয়েছে। গবেষণাটি ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ডাটা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে।

ডা: ইকবাল মাহমুদ চৌধুরী বলেন, গত ১৫০ বছর ধরে পৃথিবীতে পভিডিন আয়োডিন অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এখন এটি প্রমাণিত হয়েছে যে বিভিন্ন ঘনত্বের পভিডিন, আয়োডিন করোনাভাইরাসকে অকার্যকর দিতে পারছে।

বাংলাদেশের বাজারে পাওয়া বিটাডিন/ পভিসেফ/ ভায়োডিন (১০%) অ্যান্টিসেপ্টিকের ২ চামচ এক গ্লাস পানিতে মিশাতে হবে। এ মিশ্রণটি মুখে নিয়ে কুলি (গড়গড়া) করতে হবে ৩ থেকে ৪ মিনিট ধরে। এই পানি নাকে ও দুই চোখে ড্রপার দিয়ে কয়েক ফোঁটা ব্যবহার করতে হবে। ডা: ইকবাল হাসান মাহমুদ জানিয়েছেন, এতে চোখের কোনো ক্ষতি হবে না।

ডা: ইকবাল মাহমুদ চৌধুরী ও তাঁর দলের পরামর্শে বাড়িতে অবস্থান করে চিকিৎসাটি নিয়েছেন মোট এক হাজার ১১৩ জন করোনা রোগী। এরমধ্যে ৬০৬ জনকে বাছাই করা হয় দৈবচয়নের ভিত্তিতে। পভিডিন আয়োডিন মিশ্রণ ব্যবহারকারী করোনা রোগীদের ৪৮৪ জন ছিলেন পুরুষ ও ১২২ ছিলেন নারী। এদের বয়স ছিল ১১ থেকে ৯০ বছর।

এই ৬০৬ জন করোনা পজিটিভ রোগীকে একই রকমভাবে দৈব চয়নের মাধ্যমে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এক ভাগে ৩০৩ জন রোগীকে ১০ শতাংশ পভিডিন আয়োডিন মিশ্রিত পানি দিয়ে চার সপ্তাহ ধরে কুলি করানো হয় ৪ ঘণ্টা পরপর। এই রোগীদের নাকে ও চোখেও একই মিশ্রণের ড্রপ দেয়া হয় একইভাবে চার সপ্তাহ ধরে।

অন্য ৩০৩ জনকে একইভাবে ৪ ঘণ্টা পরপর চার সপ্তাহ ধরে কুসুম গরম পানি দিয়ে কুলি করানো হয়। দুই গ্রুপের ৬০৬ জনকে একই সাথে লক্ষণভিত্তিক ওষুধ ও চিকিৎসা দেয়া হয়। দুই গ্রুপের সবারই প্রতি তৃতীয়, পঞ্চম ও সপ্তম দিন আরটি পিসিআর পরীক্ষা করানো হয়। দুই গ্রুপের সব রোগীরই একই সাথে চতুর্থ সপ্তাহে থাইরয়েড হরমোন লেবেল টিএসএইচ, টি৩, এফটি৪ পরীক্ষা করা হয়।

ডা: ইকবাল মাহমুদ চৌধুরী জানিয়েছেন, ৩০৩ জনের যে গ্রুপটিকে ১ শতাংশ পভিডিন আয়োডিন দেয়া হয়েছিলো তাঁরা দ্রুত করোনা নেগেটিভ হন। তাঁদের মধ্যে মৃত্যুহারও হ্রাস পায়।

এ ছাড়া ১ শতাংশ পভিডিন আয়োডিনের মিশ্রণটি প্রয়োগের ৭ দিন পর দেখা গেছে, মাত্র ২.৬৪ শতাংশ করোনার রোগী আরটি পিসিআর পরীক্ষায় পজিটিভ থেকে যায়। অন্য দিকে যাদেরকে কুসুম গরম পানি দিয়ে কুলি করানো হয়েছে তাদের ৭ দিন পর আরটি পিসিআর পরীক্ষায় ৭০.৩০ শতাংশ পজিটিভ ছিলো। অন্য দিকে যাদের মিশ্রণটি দিয়ে কুলি করানো হয়েছে তাঁদের ৩.৩০ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তির পর অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়েছিলো। কিন্তু যাদের শুধু গরম পানি দেয়া হয়েছে তাঁদের ২০.৭৯ শতাংশকে অক্সিজেন দিতে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ৩০৩ জনের যে গ্রুপটিকে পভিডিন আয়োডিনের মিশ্রণ দিয়ে কুলি করতে এবং চোখে ও নাকে ড্রপ দিতে বলা হয়েছিলো এঁদের মধ্যে মৃত্যুর হার ০.৬৬ শতাংশ অর্থাৎ ২ জন এবং যাঁদের শুধু কুসুম গরম পানি দেয়া হয়েছিলো তাদের মৃত্যুর হার ছিল ৫.৬০ শতাংশ অর্থাৎ ১৭ জনের মৃত্যু হয়।

এ মিশ্রণটি দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের বেলায়ও প্রয়োজ্য হবে জানিয়ে ডা: ইকবাল মাহমুদ চৌধুরী বলেন, কিছু কিছু কেসে তারা সফলতা পেয়েছেন। এ মুহূর্তে যথেষ্ট ডাটা নেই বলে সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। শিগগিরই দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টে যারা আক্রান্ত তাদের নিয়ে আরেকটি গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে।

বিভি/এমএস

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2