• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

মহাসড়কে বাইক চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত, বাস মালিকদের দায় কতটুকু?

প্রকাশিত: ১৯:১৮, ৪ জুলাই ২০২২

আপডেট: ১৯:২৭, ৪ জুলাই ২০২২

ফন্ট সাইজ
মহাসড়কে বাইক চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত, বাস মালিকদের দায় কতটুকু?

ফাইল ছবি

সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে এই কোরবানির ঈদে মহাসড়কগুলোতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। গত ঈদুল ফিতরের সময় দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বেড়ে যাওয়ার পেছনে মোটরসাইকেল বা বাইককে অন্যতম দায়ী করে এই ঘোষণা করা হয়। 

এই ঘোষণার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মোটরসাইকেল চালকরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। তাদের ধারণা- এই ঘোষণার পেছনে বাস মালিক সমিতির ইন্ধন রয়েছে। তবে বাস মালিক সমিতির শীর্ষ নেতারা বলছেন- মোটরসাইকেল বন্ধের বিষয়ে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে কোথাও কোনো প্রস্তাব করা হয়নি। এমনকি মোটরসাইকেল বন্ধ করার বিষয়ে মালিক সমিতির কেউ কোথাও কারো সঙ্গে আলোচনাও করেনি। মালিক সমিতির উল্টো প্রশ্ন- সরকারকে মালিক সমিতি বললেই সরকার শুনবে কেন? 

রবিবার (৩ জুলাই) সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ে ঈদযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এক সভা শেষে ঘোষণা দেয়া হয়- পবিত্র ঈদুল আজহার আগের তিন দিন, ঈদের দিন এবং ঈদের পরের তিন দিন সারাদেশের মহাসড়কে যৌক্তিক কারণ ছাড়া মোটরসাইকেল চালানো যাবে না। সেই সঙ্গে এক জেলা থেকে আরেক জেলাতেও মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে না বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। এমন ঘোষণার পর রবিবার থেকে মোটরসাইকেল চালকরা এবং বিভিন্ন পেশাজীবী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ফেসবুক পোস্টে- তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন এবং ঘোষণার সমালোচনা করছেন। তাদের অধিকাংশের পোস্টে মোটরসাইকেল বন্ধের জন্য বাস-মালিক সমিতির দিকে সন্দেহের তীর ছুঁড়ছেন।

আব্দুল্যাহ আল মামুন নামের একজন লিখেছেন ‘‘বাস মালিকদের আবদার রক্ষা করলো সরকার! সাত থেকে তের জুলাই মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ।”

ইয়াসিন রানা নামের একজন লিখেছেন- “বাস মালিকদের টাকা খেয়ে আজ যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হল তা নিকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে থাকবে”।

এমন অসংখ্য পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছ। তবে এসব পোস্টকে মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর বলে মত পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনোয়েত উল্যাহ বাংলাভিশনকে বলেন, মোটরসাইকেল বন্ধের বিষয়ে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে কোনো দাবি তোলা হয়নি। রবিবার যে সভা হয়েছে তাতে আমি অসুস্থ থাকায় উপস্থিত হতে পারিনি। আমাদের সভাপতি সাহেবও উপস্থিত হতে পারেননি। এখানে আমাদের যে প্রতিনিধিরা ছিলেন তারাও কেউ এই বিষয়ে কোনো কথা তোলেননি। সুতরাং আমরা কেউ যদি মোটরসাইকেল বন্ধের বিষয়ে কোনো প্রস্তাব না করি, তবুও কেন আমাদেরকে জনগণ ভুল বুঝবে। যতদূর শুনেছি- সরকারের অংশীজনদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এখানে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কথা হল- আমরা যদি প্রস্তাব করেও থাকতাম, তাতে সরকার শুধু শুধু সাড়া দেবে কেন? কাজেই যেসব অভিযোগ উঠেছে আমাদের নিয়ে এগুলো অযৌক্তিক এবং মিথ্যা।  

অনুষ্ঠিত ওই সভায় বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক এড. মাহবুবুর রহমান। তিনি বাংলাভিশনকে বলেন, গতকালকের সভায় মোটরসাইকেল নিয়ে আমরা কোনো কথা বলিনি। আমরা বলেছি- পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে যেন ফিটনেসবিহীন কোনো বাস চলতে না পারে। বিষয়টি আমরা মনিটরিং করছি। তবে আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে যদি কোনো ফিটনেসবিহীন বাস পদ্মাসেতুতে চলে তাহলে যেন পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। সভায় আমাদের এই প্রস্তাব ছিলো। মোটরসাইকেল বন্ধ নিয়ে আমাদের কোনো মতামত ছিল না। 

তিনি আরও বলেন, সভায় হাইওয়ে পুলিশ এবং ডিএমপি পুলিশের পক্ষ থেকে মোটরসাইকেল চলাচল নিয়ে কথা বলেছিলেন। চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনও মোটরসাইকেল বন্ধের বিষয়ে কথা বলেছিলেন। বুয়েটের বিশেষজ্ঞরা তাদের মতামত দিয়েছেন। আমরা মোটরসাইকেল নিয়ে কোনো মন্তব্য করিনি। তবুও জনগণ আমাদেরকে ভুল বুঝতেছে। 

তাঁর মতে, মোটরসাইকেল চালকদের সঙ্গে বাসের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ মোটরসাইকেল চলাচল করার পরও গত ঈদে বাসের সিট সংকট ছিলো। তাই বাস মালিকদের নিয়ে মোটরসাইকেল চালকদের মন্তব্যকে মানহানিকর এবং বিভ্রান্তিকর বলে মনে করেন তিনি। 

বিভি/এসএইচ/এইচএস

মন্তব্য করুন: