• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

বঙ্গবাজারের দোকান কর্মচারীদের খোঁজ নিচ্ছে না কেউ 

প্রকাশিত: ১৯:৫৫, ১০ এপ্রিল ২০২৩

আপডেট: ২০:০১, ১০ এপ্রিল ২০২৩

ফন্ট সাইজ

ছোটবেলা থেকেই সংগ্রামী জীবন মো. আলীর। দুঃখ-কষ্ট যেন তার নিত্যসঙ্গী। তবুও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন বারংবার। তবে এবার যেন আর কোনো কুলকিনারা পাচ্ছেন না। বঙ্গবাজারের সর্বনাশা আগুনে পুড়েছে জীবিকার একমাত্র অবলম্বন প্রিয় দোকানটি। সেই সঙ্গে পুড়েছে জীবনের উপর্জিত সব পুঁজিও।

তবে সর্বনাশা আগুন লাগার কয়েকদিন আগে দোকানে থাকা শীতের কিছু পোশাক বাসায় এনে রেখেছিলেন আলী। নিয়তির বিধান- কে জানতো, এই শীতের পোশাকই হবে তার শেষ সম্বল! এখন এই ওই পোশাকগুলো বিক্রি করে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে চান তিনি। এজন্য সমাজের হৃদয়বান ও বিত্তবানদের সুদৃষ্টি চেয়েছেন তিনি।

আগুন লাগার একদিন আগেও কয়েক লাখ টাকার মালিক ছিলেন এই যুবক। তবে কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে এখন দুবেলা দুমুঠো খাবারের জন্য হাত পাততে হচ্ছে অন্যের কাছে। আদরের শিশু সন্তানের মুখেও খাবার তুলে দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। আলীর ও তার পরিবারে আক্ষেপ- আগুনে নিঃস্ব হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সাহায্যকারী কোনো সংস্থা কিংবা ব্যক্তিদের কেউ খোঁজও নেয়নি।

দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনে এবার যেনো সত্যিই থামতে হচ্ছে আলীকে। ত্রিশোর্ধ এই যুবক ২ বছর বয়সে বাবাকে হারান। এরপর এক বোন ও মায়ের জীবিকার জন্য সংগ্রামী জীবন শুরু হয় তার। ছোটবেলায় যখন যেখানে কাজ পেয়েছেন তাই করেছেন। একটা সময় ঢাকায় এসে বঙ্গবাজারে কর্মচারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। প্রায় একযুগ শ্রমের বিনিময়ে কিছু টাকা উপাজর্নের পর সিটি মার্কেটে একটা দোকান কিনেছিলেন। কিন্তু সেই দোকানও শেষ পর্যন্ত বুঝে পাননি। উল্টো দোকান কেনার যে টাকা দিয়েছিলেন তাও ফেরত পাননি। সেই ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই আবারও সব যেন কেড়ে নিলো সর্বনাশা আগুন। তাই আবারও যেনো ঘুঁড়ে দাঁড়াতে পারে আলী সেই জন্য হৃদয়বানদের দয়া চেয়েছেন তার স্বজনরা।

শুধু আলীই নন, এমন আরও অনেকই আছেন, আগুনে নিঃস্ব হওয়ার পর এখন পর্যন্ত কেউ কোনো খোঁজ নেয়নি। স্বামী হারা মাহমুদা বেগমও জানালেন- উপার্জনের এক মাত্র দোকান পুড়ে যাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই ছেলে মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে পড়েছেন চরম দুঃচিন্তায়।

বঙ্গবাজারে পুড়ে পাওয়া দোকানের কর্মচারীরাও পড়েছেন চরম বিপাকে। তাদের  আক্ষেপ- সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ দোকান মালিকদের খোঁজ নিলেও তাদের কথা কেউ বলছে না।

গত ৪ এপ্রিল ভোর ৬টার দিকে আগুন লাগে রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেটে। এই আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট কাজ করে। সেই সঙ্গে উদ্ধারকাজ ও আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থা। প্রায় ৭ ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ততক্ষণে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

বিভি/এসএইচ/এমআর

মন্তব্য করুন: