• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

ইউরোপ আমেরিকার ভিসা দালাল ছাড়া নিজেই পাবেন যেভাবে

তৌফিকুল ইসলাম পিয়াস, যুক্তরাষ্ট্র থেকে

প্রকাশিত: ১২:৫৭, ১৯ নভেম্বর ২০২২

আপডেট: ১২:৫৮, ১৯ নভেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
ইউরোপ আমেরিকার ভিসা দালাল ছাড়া নিজেই পাবেন যেভাবে

সংগৃহীত ছবি

২০২২ সালের র‍্যাংকিং-এ বিশ্বের ১০টি সবচে নিরাপদ শহরের তালিকাটি নিয়ে একটু আগে ছোট্ট একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেখানে কয়েকটা কমেন্ট দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। একজন কমেন্ট করেছেন সুযোগ পাচ্ছেন না বলে ইওরোপ বা বৃটেনে যেতে পারছেন না; এমনকি তিনি নাকি ১২ লাখ টাকা খরচ করেও যাবার রাস্তা পাচ্ছেন না। অনেককেই দেখলাম, সেখানে ইওরোপ যাবার পথ খুঁজছেন। বলি কি, অন্যকে ১০-বার লাখ টাকা না দিয়ে নিজে নিজে চেস্টা করলে আরও অনেক কম খরচে আপনি চাইলেই বৃটেন বা ইওরোপিয়ান দেশের ভিজিট ভিসা পেতে পারেন। 

 

প্রথমে বৃটেনের ভিসার কথা বলি। বৃটিশ ভিসা বা ’ইউকে এন্ট্রি ক্লিয়ারেন্স’ পাওয়া সবচে সহজ। সাধারণত ভিসার জন্য বৃটিশ হাইকমিশনার (বা কনসুলেট অফিস) কোনও ইন-পারসন ইন্টারভিও নেয় না। তারা শুধুমাত্র কিছু ডকিউমেন্টস দেখেই ভিজিট ভিসা দিয়ে দেয়। আর ডকিউমেন্টসও মোটেও অযৌক্তিক নয় - খুবই সাধারণ। সামান্য একটু মাথা খাটিয়ে তা ’তৈরী’ করে ফেলাও সম্ভব। আপনাকে দেখাতে হবে যে, আপনি একজন ‘স্বাবলম্বী’ মানুষ। অর্থাৎ মাস শেষে আপনি যথেষ্ঠ ভালো একটা এমাউন্ট আয় করতে জানেন। সেটা কিভাবে দেখাবেন? খুবই সহজ। ব্যাংকে একটি একাউন্ট করে ফেলুন। সবচে ভালো হয়, কোন একটি ব্যাবসায়ীর বিজনেস একাউন্ট থেকে আপনার একাউন্টে প্রতি মাসের ৫ থেকে ৭ তারিখের মধ্যে বড় একটা এমাউন্ট ডিপোজিট করতে পারলে। এমাউন্টটা বেতন হিসাবে আপনার একাউন্টে নিয়মিত ঢুকবে। 
ধরুন প্রতি মাসের ৭ তারিখে আপনার একাউন্টে একটি চেকে ৩ হাজার ডলার (বাংলা টাকায় ৩ লাখ টাকা) ডিপোজিট হয়। আপনি আপনার ডেবিট কার্ড দিয়ে বা চেক দিয়ে সেখান থেকে টাকা তুলে সংসারের জন্য খরচ করেন, বাসা ভাড়া দেন; গাড়ীর তেল কিনেন, ড্রাইভারের বেতন দেন ইত্যাদি। কিন্তু মনে রাখতে হবে আপনি ঐ ৩ হাজার ডলারের সবটুকু টাকাই তুলে ফেলবেন না। ম্যাক্সিমাম দেড় থেকে ২ লাখ টাকা খরচ করবেন প্রতি মাসে। এবং মাস শেষে আপনার একাউন্টের ব্যালেন্স ১ থেকে দেড় লাখ টাকা করে আনুপাতিক হারে বাড়তে থাকবে। এভাবে মাত্র ৬ মাস চালিয়ে যান। আপনার টাকা আপনার কাছেই থাকছে। 
এভাবে মাত্র ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট তৈরী হয়ে গেলে - বৃটিশ ভিসা আপনার জন্য নিশ্চিত। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলে দিচ্ছি - আপনার ইউকে এন্ট্রি ক্লিয়ারেন্স পেতে কেউ আটকাতে পারবে না। এবং সহজে ইওরোপের ভিসাও পেয়ে যাবেন একই ফমুর্লায়। 

ব্যাংক স্টেটমেন্ট ছাড়া বাদবাকী যেসব ডকিউমেন্টস লাগে - সেগুলোও খুবই সহজ। আসা যাওয়ার সম্ভাব্য স্ক্যাজুয়াল দিয়ে বিমানের ফ্লাইটের আইটেনেনারী, একটি হোটেল বুকিং (১ সপ্তাহের বুকিং দেখাবেন)। এই তো - আর কি? ভিসা আবার দিবে না কিভাবে? সংগে আপনি কোন একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনও ’টেকনিক্যাল’ কাজের কর্মরত দেখিয়ে একটি কোম্পানীর লেটার হেডে একটি ফরোয়ার্ডিং তৈরী করে জমা দিবেন - যেখানে উল্লেখ থাকবে আপনার নাম, পদবী, চাকুরীতে যোগদানের তারিখ এবং আপনার বেতন। সংগে ভিসা অফিসারকে ভিসা দিতে অনুরোধ করে এক লাইন লিখে দিলেই কেল্লা ফতে। আরও ভালো হয়, যদি ২০-পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ করে নিজেকে ঢাকা চেম্বারের সদস্য হয়ে; অতপর ঢাকা চেম্বার থেকেও একটি ফরোয়ার্ডিং নিতে পারেন। আসলে ভিসা পাওয়া মোটেও কোন কঠিন কাজ নয়। একই বুদ্ধিতে বিজনেস ইনভাইটেশন লেটার আনিয়ে জাপান, অস্ট্রেলিয়া এমনকি আমেরিকার ভিসা পাওয়া খুব কঠিন কিছু নয়। যদিও আমেরিকার ভিসার জন্য কোন ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা কোন পেপারসই দেখাতে হয় না। আপনি দু’চার বার ইওরোপ বা বৃটেন-জাপান ঘুরে এসে আমেরিকার জন্য ট্রাই করে দেখতেই পারেন। 

শেষে আরও একটা বুদ্ধি দিই, বাংলাদেশের কোন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত না দেখিয়ে আপনি যদি মালয়েশিয়া, সিংগাপুর বা দুবাই এর রেসিডেন্সী নিয়ে সেখান থেকে উপরোক্ত ডকিউমেন্টস তৈরী করে ভিসার জন্য ট্রাই করেন - তাহলে ভিসা পাবার সম্ভাবনা থাকে শতভাগ। ভারতীয় উপমহাদেশীয়দের নিয়ে কিছুটা খটকা থাকলেও দুবাই, সিংগাপুর বা কুয়ালালামপুরে বসবাসরত বাংলাদেশীদেরও ‘ওরা’ একটু কম খারাপ চোখে দেখে। 
এরপরও কি দালালের কাছে যাবেন? নিজে নিজে ট্রাই করুন না কেন? কালই সর্বপ্রথম ক্রমান্বেয়ে ভারত, নেপাল, ভুটান, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, চায়না ইতাদী দেশগুলো ভ্রমণ করা শুরু করে দিন। 
তারপর অবাক হয়ে দেখুন কিভাবে বিশ্ব নিজেই আপনার হাতে এসে ধরা দেয়।

মন্তব্য করুন: