• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

শিক্ষার্থীরা কেন রাজাকার হতে চায়?

মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মজুমদার 

প্রকাশিত: ১৯:৩৪, ১৭ জুলাই ২০২৪

ফন্ট সাইজ
শিক্ষার্থীরা কেন রাজাকার হতে চায়?

গত ১৬ বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের চেতনাধারীরা পর পর চারবার রাষ্ট্রক্ষমতায়। আবার বিভিন্ন সভা-সেমিনারে তথাকথিত চেতনাধারীরা প্রায়ই বলে থাকেন যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরি করতে হবে। পাঠ্যবই থেকে শুরু করে সকল আনাচে কানাচে পৌছে দিতে হবে চেতনার প্রবাহ। 

বর্তমান প্রজন্ম তাদের চোখের সামনেই গণজাগরণ মঞ্চ দেখেছে, তাদের চোখের সামনে সরিষার তেলের মত খাটি বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে তথাকথিত রাজাকারদের ফাঁসি দেখেছে। কিন্তু গত ১৬ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর নাম ছাড়া শিশুরা তো কিছু শুনেনি তবুও কেন এ প্রজন্ম চেতনা ধারণ করতে পারে না?

আমরা ছোট থেকেই একটি আঞ্চলিক প্রবাদ শুনে এসেছি যে, পেটে দিলে পিঠে সয়। গত ১৫ বছরে তথাকথিত চেতনাধারীরা ক্ষমতায় থাকাকালিন চালের দাম বেড়েছে ৩ থেকে ৪ গুণ। বিদেশে কত টাকা পাচার হয়েছে তার প্রকৃত হিসাব তো কারো কাছে নেই। দেশে বেকারত্ব বেড়েছে কয়েকগুন। আগে দেশের কিছু লোক প্রবাসমুখি হতো, সেখানেও সিন্ডিকেট বসিয়ে সর্বশান্ত করা হয়েছে অভিবাসন খাতকে। আবার টাকা পাচারকারীদের জন্য বাজেটে রাখা হয় অবাধ সুযোগ। অথচ তারা বোকা জনগণকে ১০ টাকায় চাল ও ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। 

নতুন প্রজন্মের ভাষ্য অনুযায়ী বর্তমান ক্ষতাসীনরা স্বাধীনতার পর সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দেশের ক্ষমতায় থাকলেও জাতিকে চেতনা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেনি। শুধুমাত্র চেতনা ঠিক রাখার জন্যই তাদের যত আয়োজন। কিন্তু তবুও এ জনপদের চেতনা নড়বড়ে। যে প্রজন্ম তথাকথিত স্বাধীনতাবিরোধীদের সংস্পর্শ পায়নি তারাও কেন রাজাকার হতে চায়। তারাও কেন এখনও তথাকথিত স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করতে পারেনি?

শুনেছি পাকিস্তানিরা যখন এ দেশ শাসন করতো তখন এ দেশের কাউকে নাকি সরকারি চাকরি দেয়া হত না। এরপর প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সহায়তায় তথাকথিত স্বাধীনতা অর্জনে যারা ভূমিকা রেখেছিল তাদের নাম দেয়া হয় মুক্তিযোদ্ধা। এরপর তাদের সাথে মুক্তিযোদ্ধা নামটি ধারণ করে আরো কিছু সুযোগ সন্ধানী লোক। বাদ পড়ে যায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারাও। এখন কোটার নামে এ দেশের চাকরির বাজার দখলে নেয় তথাকথিত মুক্তিযোদ্ধার উত্তরসূরীরা। সুতরাং স্বাধীনতার আগে যা লাউ ছিল এখন সেটা কদু। অধিকার হারিয়ে নতুন প্রজন্ম আন্দোলনে নামার পর তাদের পেছনে লেলিয়ে দেয়া হয় তথাকথিত চেতনাধারীদের। যে চেতনাধারীরা চেতনার ঠেলায় পড়ে বিশ্বজিৎকে প্রকাশ্য দিবালোকে খুন করে। রাতভর অমানুষিক নির্যাতন করে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যা করে। তাদের যে আরো কত গুণ তা বলে শেষ করা যাবে না। 

এ দেশের চেতনা নির্ভেজাল চিত্তেই নতুন প্রজন্ম গ্রহণ করতো যদি তাদের চেতনার সঙ্গে অধিকার টুকুও দেয়া হত। যদি চেতনার নামে দেশের বাইরে টাকা পাচার না হতো। যদি চেতনার নামে দু'চারটি পরিবারের হাতে এ দেশটা জিম্মি না হতো। যদি চেতনার নামে মানুষের অধিকার কোনঠাসা না হতো। যদি তথাকথিত চেতনা নতুন প্রজন্মকে ওষুদের মত গিলে খাওয়া আবশ্যক না করা হতো...

লেখক: সংবাদকর্মী

(বাংলাভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, বাংলাভিশন কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার বাংলাভিশন নিবে না।)

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2