• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রধান কাজ

প্রসেনজিৎ হালদার

প্রকাশিত: ২০:৩৬, ১০ মার্চ ২০২৫

ফন্ট সাইজ
নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রধান কাজ

নেতিবাচক চিন্তাধারা এবং এর চর্চা করা মানুষের দেখা মেলে অহরহ। পাবলিক ফিগাররা এ তালিকার শীর্ষে। রাজনীতিবিদ, তারকা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা; এমনকি গণমাধ্যমকর্মীরাও রয়েছেন এই দলে। জনমানুষের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ চাহিদা পূরণ করা উপরোক্তদের প্রধান কাজ হলেও অনিয়ম-দুর্নীতির শেষ নেই। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভিত্তি যাদের দিয়ে তৈরি তারাই লিপ্ত হন অন্যায়-অপকর্মে, দেশ যায় রসাতলে। কিন্তু, চলমান পরিস্থিতি ইঙ্গিত দেয় অন্য কিছুর যা অত্যন্ত নেতিবাচক। আর এই সকল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব রাষ্ট্রযন্ত্রের তথা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চার ভিত্তি আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ, শাসন বিভাগ এবং গণমাধ্যমের। 

দুর্নীতি দেশকে গ্রাস করেছে। ক্ষমতাধর বা উঁচু পদধারী লুটপাট-পাচারকারী সব পালিয়েছে। ‘অভাবে স্বভাব নষ্ট’ হলেও যারা নিম্নবিত্ত শ্রেণি, তারা অনিয়ম-দুর্নীতির তালিকার নিচের সারিতে। অন্যদিকে, পর্দার আড়ালে থেকে সেবার নামে অন্যায়ে যুক্ত হতেও দ্বিধাবোধ করেন না রাজনৈতিক-আমলাতান্ত্রিক রাঘববোয়ালরা। সুযোগ সৎ-অসৎ উভয়ভাবেই ব্যবহারে তারা পটু। এদের মধ্যে ক্ষমতা দখল আর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চলে লড়াই। সংঘর্ষ, ভাঙচুর, হানাহানি, লুটপাট-ধর্ষণ চলে দেশজুড়ে। পক্ষান্তরে কতিপয় গোষ্ঠী ও মানুষের মানসিক বিকারগ্রস্ততার প্রভাব পড়ে সমাজে। দেখা দেয় মারধর, ভাঙচুর, লুটপাট, খুন, ধর্ষণের মতো ঘটনা। 

বিগত সময়ে অনিয়ম-দুর্নীতির তালিকায় যাদের নাম উঠে এসেছে এর বেশিরভাগই ‘হাইভোল্টেজ’। হাইভোল্টেজ এই কারণে যে, তারা পদপদবী বা ক্ষমতার দিক দিয়ে অনেক ওপরে। রাজনীতিবিদরাই এই তালিকার শীর্ষে। অনিয়ম-দুর্নীতিতে আমলা-তারকা-গণমাধ্যমকর্মীরাও একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। ব্যাংকের মূখ্য কর্তা কিংবা বড় সংগঠনের কর্তাব্যক্তি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও এর বাইরে নেই। ক্ষমতা পেলেই যেন অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পরতে হবে; এই-ই রেওয়াজ। অন্যদিকে, ৫ আগস্টের পর থেকে ভিন্ন কোন শক্তি প্রভাবিত করছে সকলকে, নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে জনপদে। এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী নারী ও শিশুরা। খুন, ধর্ষণ, ডাকাতি, ছিনতাই হচ্ছে অহরহ। এসবই হচ্ছে নিচের সারির মানুষদের সঙ্গে। যারা পদবীধারী তারা নিজেদের নিরাপত্তার ব্যয় বহন করতে পারছে। কিন্তু, নিম্নশ্রেণির মানুষগুলো তা পারছে না। বিপদে আছে এই গোষ্ঠী।

শেখ হাসিনার আমলে পিএসসি থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদের নিয়োগে পর্যন্ত দুর্নীতি হয়েছে। সে তালিকায় থাকা উচ্চপদস্ত অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী এখনও প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করছেন। অসুবিধা হচ্ছে, এসব দুর্নীতিগ্রস্তদের নিয়মিত বদলি বা পদাবনতি করেও চেয়ার থেকে নামানোর সুযোগ নেই। অনিয়ম করে যারা রাষ্ট্রীয় পদবী নিয়েছেন তারাই রাষ্ট্রের নিম্নগতির মূল হোতা। মূলত, বড় অপকর্মগুলো এদের দাড়াই নিয়ন্ত্রিত হয়। যদি আরও কঠোর হাতে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করা যেত, তাহলে দেশে অন্যায়-অপকর্ম নিশ্চিতভাবে কমতো। কিন্তু, তা হয়নি, অনেক ক্ষেত্রে হয়েছে এর উল্টো। অপরাধীরা কোন না কোনভাবে ছাড়া পেয়ে যায়। বিপাকে পড়ে সাধারণ মানুষ, চাপে পড়ে সরকার।

স্বাধীনতার পর থেকে অর্ধশত বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে। অনেক প্রবীণ ক্ষমতাধর ব্যক্তি বিদায় নিয়েছেন। ক্ষমতায় এসেই বিরোধীদের অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরার চিত্র দেখা গেছে। ক্ষমতাহীন হওয়ার পর তাদের অনেকের নামও অসৎদের তালিকায় এসেছে। এ ঘটনা যেনো ভাত-মাছের মতো। ক্ষমতা পেলেই দুর্নীতি-অনিয়ম করতে হবে। বিপুল অর্থ আত্মসাৎ, পাচার, চাঁদাবাজি, লুটপাট যেন প্রথা হয়ে দাড়িয়েছে। ক্ষমতার বীজ এতোই শক্তিশালী যে, যেকোন মানুষের গায়ে লাগলে অনিয়ম-অন্ধত্ব তাকে গ্রাস করে। ভালো-মন্দের ভেদাভেদ ভুলে তখন সে যুক্ত হয় দুর্নীতির সঙ্গে, বিসর্জন দেয় বিবেক। এককালে যিনি ন্যায়ের কথা বলতেন তিনি ভুলে যান পূর্বের কথা। জনমানুষের প্রত্যাশার পূরণ তো দূরের কথা নিজের এবং স্বজনদের ভাণ্ডার পূর্ণ করতে ব্যস্ত হন রাত-দিন। এরপর কোনো এক সময় ক্ষমতা ত্যাগের পর তার দুর্নীতির রূপ প্রকাশ্যে আসে। যদিও যা হওয়ার ততোদিনে তা হয়ে যায়। ‘আখের গুছিয়ে’ দেশত্যাগ করেন রাঘববোয়ালরা।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চারটি স্তম্ভ যখন নড়বড়ে হয়, তখন সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ। অন্যায়ের শিকার হন নিয়মিত। এ সময় বিচার চাওয়ারও জায়গা থাকে না। আমার দেখেছি, পুরোনো সরকারের আমলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি ছিলো। সন্তানহারা অনেক বাবা-মা রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছে বিচার চেয়ে তা না পেয়ে আল্লাহর দরবারে ছেড়ে দিয়েছেন। সাংবাদিক দম্পতি হত্যার বিচার তো হয়নি, তদন্ত প্রতিবেদন জমার সময়ও শতাধিকবার পেড়িয়েছে অনেক আগে। সেদিন পেছনে পড়েছে এখন সংস্কার করে সব নতুনভাবে শুরু করার সময়। এক্ষেত্রে সরকারপক্ষের আরও বেশি আন্তরিক এবং স্বচ্ছ হতে হবে। জনমানুষের প্রত্যাশা পূরণে এর বিকল্প নেই।

আমরা আরও দেখেছি, বড় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা ক্ষমতায় গিয়ে নিজেদের ‘রাজা’ বানিয়ে অত্যাচার শুরু করেন। সাধারণের চাহিদা বিবেচনা করার সময় থাকে না তাদের। লক্ষ-কোটি টাকা লুট করে বিদেশে বাড়ি-গাড়িসহ পরিবার পরিজনদের সেখানে পাঠিয়ে দেন। সুখের রাজ্য কায়েম করেন। অথচ, যেখানে অনিয়ম, লুটপাট, হানাহানি হয়েছে, সেই ভুক্তভোগীদের দুর্বিসহ জীবন নিয়ে আফসোসের শেষ থাকে না। আশার কথা হলো, এখন সেদিন নেই। প্রত্যেক নাগরিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে সরকার পক্ষকেই। প্রয়োজনে অন্যায়কারীদের আরও কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।

একটা বিষয় হয়তো সকলেই প্রত্যক্ষ করেছেন। ক্ষমতায় যে রাজনৈতিক দলই আসুক না কেনো, লুটপাট হয় নিয়মিত। গুটিকয়েক অসৎ মানুষের জন্য গোটা সম্প্রদায়কে কথা শুনতে হয়, দায় নিতে হয়। আর, সাধারণ মানুষ অনিচ্ছা সত্ত্বেও ধারাবাহিকভাবে এই ফাঁদে পড়েন। এককালে যিনি টিনের ঘরে বাস করতেন, ভাত-মাছ-ডাল খেয়ে বাঁচতেন তাদেরও অঢেল সম্পদ হয়। রাষ্ট্রযন্ত্র দেখেও দেখে না, পদক্ষেপ নেয় না। সাধারণ মানুষ আরও বিপাকে পড়েন। এ থেকে উত্তরণের সময় এসেছে। অন্তর্বর্তী সরকাকে তা দেখিয়ে দিতে হবে। দেশের কোটি কোটি মানুষ তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। 

কেউ নতুন টাকার জাজিমে ঘুমিয়েছেন। কেউ সেই টাকা বিদেশে পাঠিয়ে শত শত বাড়ি তৈরি করেছেন। সম্মান বিকিয়ে দিয়ে, রিজার্ভ চুরি করে বিদেশে সেকেন্ড হোম বানিয়েছেন। কেউ একাধিক দেশে টাকা দিয়ে নাগরিকত্ব কিনে বসবাস করছেন। কেউ আন্তর্জাতিক মাফিয়া বনে গেছেন। বাংলাদেশে এই কাজ কতই না সহজ। ক্ষমতার অপব্যবহার আর মুখ ফুটে বললেই চলে আসে বস্তা বস্তা টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্ট খালি হয়ে যায়, ডলার পাচার হয়, হাজার হাজার ভরি স্বর্ণ লোপাট হয়, ব্যাংক দেউলিয়া হয়। অথচ, চোরেরা পালিয়ে যায়। ভয়ংকর বিষয় হলো, অতীতে যারা দুর্নীতি-অনিয়ম করে দেশান্তর হয়েছিল, তারা আবার ফিরে আসে। দাপট দেখানো শুরু করে। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধায়। ভুক্তভোগী হয় সাধারণ মানুষ। রাষ্ট্রযন্ত্রের পদক্ষেপ এবং তাকিয়ে দেখা ছাড়া নিম্নশ্রেণি-পেশার মানুষের কিছুই করার থাকে না। 

স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের বয়স পঞ্চাশোর্ধ। এতো অল্প বয়স্ক দেশে যে লুটপাটের তথ্যচিত্র রয়েছে তা দিয়ে ৫৬ হাজার বগমাইল জায়গা ভরাট হয়ে যাবে। কারণ, এখানে মাত্র একজন-দুইজন ব্যক্তি যে পরিমাণ সম্পদ লুট করেছে তার হিসাবও ব্যাপক। এতো টাকা, এতো সম্পদ চুরি হলো; সবই তো সরকারি বা জনগণের। কারণ, বিষয়টি এমন নয় যে, এগুলো কোন অসৎ বা মাফিয়ার অর্থ। সাধারণ মানুষের উপকারের জন্য বরাদ্দ করা টাকা সাদা পাঞ্জাবি বা কালো কোর্টের মধ্যে গুম করা হয়েছে। কেউ তার হদিস পায়নি। কিন্তু, ক্ষমতা বদলের সঙ্গে সঙ্গে সে তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। যদিও তখন আর কিছু করার নেই। কারণ, যার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ পেয়েছে সে দেশের গণ্ডি পেড়িয়ে হাজার মাইল দূরে কোন রাজকীয় দেশে রাজার হালেই বাস করছে। বাংলাদেশের মানুষ বাঁচলো কি মরলো তা ভাবার সময় তাদের নেই। হয়তো তারা বাংলাতেই কথা বলে, তেমন আচরণও করে, ভাত-মাছ-মাংস-ডালও খায়; কিন্তু ভুলে যায় রক্তের হিসাব, শরীরের জিন। ভুক্তভোগী দেশে বসবাস করা খেটে খাওয়া আপামর জনতা, ফেলে দীর্ঘশ্বাস।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আবার জেগে উঠেছে দেশের ছাত্র-জনতা। হাতে হাত মিলিয়ে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে এনেছে দ্বিতীয় স্বাধীনতা। ক্ষমতার কেন্দ্রে বসিয়েছে শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিকে। এখন সকলেই অন্তর্বর্তী সরকারের দিয়ে তাকিয়ে। অন্যায়-অনিয়ম বন্ধ করে রাষ্ট্রের সুষম পরিবেশ নিশ্চিত করাই তাদের কাজ। কেননা, এই সরকারের কাছে দেশবাসীর অনেক চাওয়া। মৌলিক অধিকার যথাযথভাবে নিশ্চিতসহ নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতে হবে। ৫ আগস্টের পর থেকে এখনো নিরাপত্তাজনিত আতঙ্কে আপামর জনতা। কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। যৌথ বাহিনীর অভিযানও চলমান। প্রতিদিন গ্রেফতার হচ্ছে অনেক অন্যায়কারী। এরপরও  হামলা, ভাঙচুর, চুরি-ছিনতাই, লুটপাট, খুন-ধর্ষণ থেমে নেই। অনেকক্ষেত্রে যৌথ বাহিনীর অপারেশনেও অন্যায়কারীদের দমন করা যাচ্ছে না।

‘এই দেশে কে বিচার করবে!’ এমনটা ভেবে অন্যায়কারীরা দৌর্দণ্ডপ্রতাপে এগিয়ে চলেছে। অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিলো, তারা যে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে তা সকলেই জানে। কিন্তু, দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা দলের নেতাকর্মীরা যদি অনিয়মে লিপ্ত হয় তাহলে দেশবাসীর দুঃখের শেষ থাকবে না। ‘পুরোনো বোতলে যেন নতুন মদ’; কতিপয় কিছু সংগঠনের কার্যকলাপেও তেমন মনে হচ্ছে। অল্প কিছু মানসিক বিকারগ্রস্ত ও তাদের দ্বারা খুন-ধর্ষণের ঘটনায় গোটা দেশ ফুঁসে উঠেছে। কয়েকদিনের ধর্ষণের সংবাদে নারী-শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পার্শ্ববর্তী দেশের হস্তক্ষেপে দাঙ্গা পর্যন্ত লাগার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে। যে কারণে, রাজনৈতিক অনেক দলের নেতারা অন্তর্বর্তী সরকারের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছেন। তবে, রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ এখনো চলমান যা অতিজরুরি।

অতিসম্প্রতি দেশজুড়ে নারী-শিশুদের ওপর করা অন্যায়ের বিচারের দাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা। দেশবাসী তথা নারী-শিশুদের নিরাপত্তা দিতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন; এমন দাবি শিক্ষার্থীদের। বলা বাহুল্য, মাগুড়া, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, কুমিল্লা, নরসিংদীসহ অনেকস্থানে যেসব পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে তা অতি অন্যায়। আর এতেই শিক্ষার্থীদের নিকট সরকারের ব্যর্থতার ছাপ পরিস্কার হয়েছে। এমনকি রাজধানীর শাহবাগে নারীকে ‘কটুক্তি’, নিরাপত্তাহীনতায় মামলা তুলে নেওয়া এবং অভিযুক্তকে পুষ্পমাল্য দিয়ে বরণ করাকেও নেতিবাচক ঘটনা হিসেবেই দেখছে শিক্ষার্থীদের অনেকেই।

এ কথা সত্য যে, ২৪-এ স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর দেশ নতুন করে আরও একবার স্বাধীন হয়েছে। বুদ্ধিজীবীরাও মনে করেন, দেশটাকে আবার নতুন করে সাজানোর সুযোগ হয়েছে। এদিকে, সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করতে নিষেধ করছেন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। যদিও সকলেই জানে, বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সংস্কারের বিকল্প নেই। কিন্তু, অন্তর্বর্তী সরকার যেহেতু নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত হয়নি তাই গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভোটও জরুরি। সংস্কার, নির্বাচন বা কোন চাপের অজুহাতে দেশের মানুষ যেন নিরাপত্তাহীনতায় না ভুগে সে বিষয়টা খেয়াল রাখা বর্তমান সরকারের সবচেয়ে জরুরি কাজ।

বিগত প্রায় দেড়যুগ ধরে দেশের মানুষ গুম-খুন নির্যাতনের শিকার। আয়নাঘর-শ্রীঘর-জেলখানায় বন্দি থেকে অনেকের কেটে গেছে বছরের পর বছর। তৎকালীন ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে কথা না বলে, অন্যায় না করেও খেসারত দিয়েছেন অনেকেই। আমরা আর এসবের পুনরাবৃত্তি চাই না। বৈষম্যহীন দেশে প্রত্যেক নাগরিকের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকেই। প্রতিটি অন্যায়ের কঠোর বিচার হতে হবে উপযুক্ত সময়ের মধ্যে। আর কোন বাবা-মা যেনো তার সন্তানের প্রতি অন্যায়ের বিচারের দাবিতে হাহাকার না করে, সে খেয়াল রাখতে হবে। ডেভিল হান্টে অপরাধীদের ধরা না গেলে প্রয়োজনে নতুনভাবে ‘চিরুনি’ অভিযান পরিচালনা করতে হবে। দেশটা সবার। ছাত্র-জনতার এই দেশে ক্ষমতার দাপটে আবার নির্দিষ্ট কোন গোষ্ঠী যেন সাধারণ মানুষকে হেলাফেলা করতে না পারে, সে বিষয়ে সরকারসহ সকলকেই সজাগ থাকতে হবে। দেশের মানুষের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে রাষ্ট্রপক্ষ কঠোর হস্তে প্রতিটি অন্যায়ের বিচার করবে বলেই বিশ্বাস। কারণ, এ দায়িত্ব রাষ্ট্রযন্ত্রের।

 

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী

prosenjit8000@gmail.com

 

(বাংলাভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, বাংলাভিশন কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার বাংলাভিশন নিবে না।)

বিভি/পিএইচ

মন্তব্য করুন: