অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার: গণতন্ত্র মঞ্চ

গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন হলে ‘রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বিকাল ৪টায়। আলোচনা সভাটির সভাপতিত্ব করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ও  ডাকসু’র সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না। সভা পরিচালনা করেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার।

সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডি’র সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন-এর সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন।

সভাপতির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, রিজার্ভে ধ্স নেমেছে, রপ্তানি কমেছে, অর্থনীতির সূচক নিম্নমুখী। সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকার এখন অসংলগ্নমূলক কথাবার্তা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। বিনা অনুমতিতে সভা-সমাবেশ করতে না দেওয়ার ঘোষণা সরকারের দেউলিয়াত্বের প্রমাণ। তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রমাণ করে উনি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। 

আ স ম আবদুর রব বলেন, এই সরকার অবৈধ ও অসাংবিধানিক সরকার। একটা সংসদের মেয়াদ থাকা অবস্থায় আরেকটি সংসদের নির্বাচন করা অবৈধ। সরকার সারা বিশ্ব থেকে দেশ ও জনগণকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি বা চিকিৎসা করাতে হলে প্রয়োজনে লড়াই করতে হবে। কৃষক শ্রমিক ছাত্র-যুবককে সবাইকে এই সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হবে। 

সাইফুল হক বলেন, সাড়ে ৪ লাখ কোটি টাকার খেলাপী ঋণ নিয়ে কথা বলে না। খাদ্য সংকট, পুষ্টি সংকটে জনগণকে কষ্ট দেয়া হচ্ছে। উন্নয়নের নামে অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে। ব্যাংকিং খাতে লুটপাট বাংলাদেশকে দেউলিয়া করে দিচ্ছে। অথচ এই মাফিয়া সরকারের প্রধানমন্ত্রী ক্রমাগত উন্নয়নের বুলি আওড়াচ্ছেন। শেখ হাসিনাকে দ্রুত পদত্যাগ করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের উদ্যোগ নিতে হবে, তাছাড়া উনাকে ন্যাক্কারজনকভাবে বিদায় নিতে হবে। 

জোনায়েদ সাকি বলেন, অর্থনৈতিক সংকট আরো গভীর হতে পারে। ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা ব্যাংকিং খাতকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। অর্থ পাচার করে এই দেশকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রকে একটি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত করেছে এই সরকার। দেশকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে হলে এই ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ করতে হবে এবং নতুন গণতান্ত্রিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করতে হবে। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, এই সরকার আরেকটি অবৈধ নির্বাচনের পায়তারা করছে। অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে গণতন্ত্র মঞ্চ জাতিকে রক্ষা করবে। প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন সম্পর্কে যে ভাষায় বক্তব্য রেখেছেন তা সকল প্রকার শিষ্টাচার বহির্ভূত ও অমানবিক। খালেদা জিয়ার কিছু হলে এর দায়দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।

ইমরান ইমন বলেন, দেশের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে এই সরকার। স্বাধীনতার পর থেকে কোন দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি, আগামীতেও হওয়ার সুযোগ নাই। তিনি গণতন্ত্র মঞ্চসহ সকল বিরোধী দলের আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে মাফিয়া সরকারের পতন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লড়াই বেগবান করতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান।