সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে আগের মত নিয়োগ ফ্যাসিবাদী নীতিরই সামিল: মঞ্জু

আমার বাংলা (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, ‘হাজারো প্রাণ আর রক্তের স্রোত মাড়িয়ে যে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে তার প্রধান আকাঙ্ক্ষা হলো ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ। হাসিনার মত একচ্ছত্র ক্ষমতা চর্চার সংস্কৃতি বজায় থাকলে সংস্কার বলতে কিছুই হবে না। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগের মত নিয়োগ ব্যবস্থা বজায় রাখা ফ্যাসিবাদী নীতিতে অটল থাকার সামিল।’
বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর বেইলি রোডস্থ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সম্মুখে ব্রিফিংকালে তিনি একথা বলেন। এদিন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় এবি পার্টির পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন দলের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক।
রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি প্রসঙ্গে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা-সম্প্রীতি ও পক্ষপাতহীনতা; এই অভিপ্রায়গুলো যুক্ত করলে সকল পক্ষের মতামতকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে শুধু ভাষার হেরফেরের কারণে এই বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।’ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আমরা কোন বিষয়েই একমত হবো না। এটাই যেন আমাদের আলোচনার মূলনীতি।’
সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটির আলোচনায় এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের সংস্কারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিরপেক্ষ রাখার ব্যবস্থা করা এবং সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতিকে কঠিনতর করা। অতীতে শেখ হাসিনা নিজের ইচ্ছামত দলবাজ লোক নিয়োগ দিয়ে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। এখনও যদি সেই ব্যবস্থা বজায় রাখার পক্ষে কোন দল মত দেয়, তাহলে বোঝা যাবে তারা আসলে ফ্যাসিবাদী নীতি পরিবর্তনে অনিচ্ছুক।’
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক বলেন, ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ পদে নিয়োগের জন্য প্রস্তাবিত কমিটি গঠিত হলে রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা হ্রাস পাবে, এমন ধারণা সঠিক নয়। বরং, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গঠনপ্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করতে পারলে নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।’
ব্যারিস্টার সানী আরও বলেন, ‘প্রত্যেকটি দল তাদের নিজ নিজ রাজনৈতিক চিন্তা, মত-দর্শনকে প্রাধান্য না দিয়ে কিভাবে ঐকমত্যের পথে অগ্রসর হওয়া যায় সেটি বিবেচনায় নেওয়াই প্রত্যাশিত। নতুবা জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হবে সুদূর পরাহত।
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: