নির্বাচনী লড়াইয়ে অপ্রতিরোধ্য খালেদা জিয়া: একবারও হারাতে পারেনি কেউই
১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যার পর অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। সেই সময়ই বেগম খালেদা জিয়া দলের নেতৃত্বে আসেন। ১৯৮২ সালের ২ জানুয়ারি তিনি বিএনপিতে যোগ দেন।
১৯৯১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত, খালেদা জিয়া ৫টি সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।এই নির্বাচনী সময়ে মোট ২৩টি আসন থেকে প্রার্থী হয়ে সবকটি আসনে রেকর্ড জয় পান তিনি। এই রেকর্ড দেখে বলা যায়, সংশ্লিষ্ট সময়টাতে খালেদা জিয়া ছিল সবচেয়ে সফল নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে একজন।
বাংলাদেশে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯১সালের এর ২৭ শে ফেব্রুয়ারি। সেই নির্বাচনে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বগুড়া-৭, ঢাকা-৫, ঢাকা-৯, ফেনী-১ এবং চট্টগ্রাম-৮ মোট পাঁচটি আসনে বিএনপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সব আসনেই জয়লাভ করার পর তিনি ফেনী-১ আসনটি প্রতিনিধিত্ব করার সিদ্ধান্ত নেন এবং বাকি চারটি আসন থেকে পদত্যাগ করেন।
ভোটের মাঠে খালেদা জিয়ার অনন্য ইতিহাস
১৯৯১ সালে বগুড়া-৭ আসনে খালেদা জিয়া ভোট পেয়েছিলেন ৮৩,৮৫৪টি। আ.লীগ প্রার্থী টি এম মূসা পেস্টা ভোট পেয়েছিলেন ২৪,৭৬০টি এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির প্রার্থী জমাত আলী ১৫,৪৪০টি ভোট পেয়েছিলেন।
ঢাকা- ৫ আসনে খালেদা জিয়া পেয়েছিলেন ৭১,২৬৬ ভোট আর আ.লীগ থেকে সাহারা খাতুন পেয়েছিলেন ৪৫,৮১১ টি ভোট।
ঢাকা- ৯ খালেদা জিয়া পেয়েছিলেন ৫৫,৯৪৬ টি ভোট, আ.লীগের প্রার্থী সাজেদা চৌধুরী ২৯,৪৬৪টি ভোট ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির প্রার্থী মো. রুহুল আমিন ২,৫০৫ টি ভোট পেয়েছিলেন।
ফেনী-১ বিএনপি থেকে খালেদা জিয়া ৩৬,৩৭৫টি ভোট পেয়েছিলেন। আ.লীগ প্রার্থী মো. জাকারিয়া ভূঁইয়া ২৩,২৫০ টি ভোট, জাতীয় পার্টির প্রার্থী জাফর ইমাম ২২,৬০১টি আর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির প্রার্থী মো. ইউনুস ৮,১৬৩টি ভোট পেয়েছিলেন।
চট্টগ্রাম-৮ খালেদা জিয়া ৬৯,৪২২টি ভোট, আ.লীগ প্রার্থী ইসহাক মিয়া ৪৪,১৫৪, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির প্রার্থী মো. আবু তাহের ১৩,৪৬৬ ও জাতীয় পার্টির লিয়াকত পেয়েছিলেন ৩,১৪১টি ভোট।
বাংলাদেশে ১৯৯৬ সালের ১২ জুন, সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনেও বগুড়া-৬, বগুড়া-৭, ফেনী-১, লক্ষ্মীপুর-২ ও চট্টগ্রাম-১ মোট ৫টি আসন থেকে বিএনপির হয়ে লড়াই করেন খালেদা জিয়া।
বগুড়া-৬ থেকে খালেদা জিয়া ভোট পেয়েছিলেন ৮৯,১৫৪টি, আ.লীগ প্রার্থী মো. আব্দুল মান্নান ৪৫,৬৮৮টি আর জাতীয় পার্টির গোলাম মোস্তফা ৫,৪৪২টি ভোট পেয়েছিলেন। বগুড়া-৭ খালেদা জিয়া ৭৯,৮২১, আ.লীগ প্রার্থী শামছুল হক ৩২,৫৫৭টি আর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি আনোয়ার হোসেন ৯,৭৪১টি ভোট পেয়েছিলেন।
ফেনী-১, খালেদা জিয়া পান ৮১,৬৫৪টি ভোট পেয়েছিলেন।আ.লীগ প্রার্থী একরামুল হক ৪৬,৪৮৮ টি ও জাতীয় পার্টির খোরশেদ আলম পেয়েছিলেন ৪,৭১২টি ভোট।
লক্ষ্মীপুর-২, খালেদা জিয়া ৮৭, ৯২১টি ভোট, আ.লীগ প্রার্থী আবদুল মতিন ৪৪, ৩৮৯টি আর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির রুহুল আমিন পেয়েছিলেন ৪,৭০৪টি ভোট।
চট্টগ্রাম-১ খালেদা জিয়া ৯১,৩৮৮টি, আ.লীগের এ. বি. এম. মূসা ৫৩,৪৭৭টি আর জাতীয় পার্টির মো. ইউসুফ পেয়েছিলেন ৫,০৮২ টি ভোট।
২০০১ সালের অক্টোবর ১, বাংলাদেশে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে বিএনপির হয়ে বগুড়া-৬, বগুড়া-৭, খুলনা- ২, লক্ষ্মীপুর-২ ও ফেনী-১ মোট ৫ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন খালেদা জিয়া।
বগুড়া- ৬, থেকে খালেদা জিয়া ১,৪১,০৯০টি ভোট পান আর আ.লীগ থেকে মো. আব্দুল মান্নান পান ২৯,০৭৮টি ভোট। বগুড়া- ৭, আসনে খালেদা জিয়া পান ১,১২,৬৩১ ভোট, আ.লীগ থেকে শামছুল হক পান ২৯,৪৪১টি ভোট আর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি থেকে আনোয়ার হোসেন পেয়েছিলেন ১,০৯৪ টি ভোট।
ফেনী-১, আসনে খালেদা জিয়া পেয়েছিলেন ১,১৯,০৮৭ ভোট, আ.লীগ থেকে একরামুল হক পান ২৮,০৪২ ভোট আর জাতীয় পার্টির খোরশেদ আলম ২,২৪৪ টি ভোট পেয়েছিলেন।
লক্ষ্মীপুর-২, আসন থেকে খালেদা জিয়া পান ১,২৮,৭৭৭ টি ভোট, আ.লীগ থেকে আবদুল মতিন ২৯,০১৪ ভোট ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি থেকে রুহুল আমিন পান ২,০৪৪ ভোট।
চট্টগ্রাম-১, আসনে বিএনপি থেকে খালেদা জিয়া পান ১,৩৭,৪৪৩ ভোট, আ.লীগ থেকে এ. বি. এম. মূসা পেয়েছিলেন ২৮,৫৪৪টি ভোট।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।এ নির্বাচনে বগুড়া-৬, বগুড়া-৭, এবং ফেনী-১ এই তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। শেষ পর্যন্ত ফেনী-১ আসনটি নিজের জন্য রাখেন।
বগুড়া-৭, আসনে বিএনপি থেকে খালেদা জিয়া ভোট পেয়েছিলেন ২,৩২,৭৬১ টি আর জাতীয় পার্টি থেকে আলতাফ আলী পেয়েছিলেন ৯২,৮৩৩ ভোট। ফেনী-১, এই আসনে খালেদা জিয়া পেয়েছিলেন ১,১৪,৪৮২ ভোট আর আ.লীগের প্রার্থী ফয়েজ আহমেদ পান ৫৮,৫৫১ ভোট।
বিভি/ইএ/এজেড




মন্তব্য করুন: