• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

মনস্তাত্ত্বিক শত্রু জামায়াত-চরমোনাই ঐক্য!

প্রকাশিত: ২২:৫২, ২ জানুয়ারি ২০২২

আপডেট: ১৮:১৩, ২৯ নভেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
মনস্তাত্ত্বিক শত্রু জামায়াত-চরমোনাই ঐক্য!

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলামী দলের মধ্যে সবচেয়ে বড় দু’টি দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দু’টি ইসলামী দল হলেও দূরত্ব অনেক। জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নেতা বা জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কোনো নেতাই চরমোনাইর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোনো বক্তব্য না দিলেও ভেতরে চরম অসন্তোষ রয়েছে। 

অন্যদিকে প্রচণ্ড জামায়াতবিরোধী মনোভাব রয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নেতাদের মধ্যে। বিভিন্ন সময়ে নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করীমের বক্তব্যে তা প্রমাণিত। প্রতিটি নেতাকর্মীই জামায়াতে ইসলামীর কঠোর সমালোচক। 

আরও পড়ুন:

এমন পরিস্থিতিতে বগুড়ায় দল দু’টি দূরত্ব কমিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুপচাঁচিয়ার উপজেলার জিয়ানগর এবং গুনাহার এই দুই ইউনিয়নে জামায়াত-চরমোনাই ঐক্য গড়েছে। 

গত ২৮ ডিসেম্বর জিয়ানগর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি আজিজুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক ময়েজ উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসলামী রাজনীতির ঐক্যের বৃহত্তর স্বার্থে জিয়ানগর ইউনিয়নে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী না থাকায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মো. হযরত আলীকে স্থানীয়ভাবে সমর্থন দিলাম। এই ঐক্যের সুবাতাস পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়বে।

 

এরপরের দিন গুনাহার ইউনিয়নে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী নূর মোহাম্মদ আবু তাহেরকে সমর্থন দিয়েছে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। ছবিতে দেখা যায়, নূর মোহাম্মদের প্রধান নির্বাচনী অফিসে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দেন দলটির দুপচাঁচিয়া উপজেলা সভাপতি এবং দুপচাঁচিয়া-আদমদীঘি সংসদীয় আসনের হাতপাখার প্রার্থী মো. শাহজাহান তালুকদার। এই সময় তাঁর সংগে ছিলেন উপজেলা সেক্রেটারি মিনহাজ তলোরাবি, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ, আইম্মা পরিষদের উপজেলা সভাপতি সভাপতি হাফেজ মাওলানা আলী আকবর, উপজেলা সহকারী অর্থ সম্পাদক নেয়ামুল ইসলাম।

এই বিষয়ে জামায়াত সমর্থিত গুনাহার ইউনিয়ন পরিষদের প্রার্থী নূর মোহাম্মদ বলেন, ইসলামী আন্দোলনের উপজেলা নেতৃবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা এই জনপদে ইসলামের মহান বার্তাকে একসংগে ছড়িয়ে দেবো লাখো প্রাণে। ইউনিয়ন পরিচালনায় ইসলামী আন্দোলন নেতৃবৃন্দকে পাশে রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছি। 

জানা যায়, ৮০ দশকের আগে চরমোনাই মাদ্রাসায় জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন শিবিরের কার্যক্রম ছিলো। রাজনৈতিক দল ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন তৈরির প্রেক্ষাপট নিয়ে দল দু’টির মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। যা এখনো অব্যাহত আছে। বাংলাদেশে ইসলামী রাজনীতির ঐক্যকে কেন্দ্র করে চরমোনাইর মরহুম পীর ফজলুল করীম, জামায়াতের সাবেক আমীর গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামীসহ বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতারা একাধিকবার বৈঠক করেছেন। চরমোনাইর প্রথম পীর মাওলানা ইসহাক (রহ.) তৎকালীন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুর রহিম-এর নির্বাচনে তাঁকে ভোট দিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ বাংলাভিশন ডিজিটালকে বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকা থেকে নিজস্ব প্রস্তুতির আলোকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রার্থীদের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের সুবিধার্থে স্থানীয়ভাবে কোনো ব্যক্তি বা দলের সমর্থন এবং সহযোগিতা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ ইউনুস আহমদ বাংলাভিশন ডিজিটালকে বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে ঐক্যের কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আঞ্চলিকভাবে এমন কিছু ঘটনা আমাদের চোখে পড়েছে। কেন্দ্র জেলা কমিটিকে বিষয়টির ওপর নজর রাখতে বলেছে। যেন দলের শৃঙ্খলা এবং সংগঠন পরিপন্থী কাজ না ঘটে। কেন্দ্রীয় কমিটি বগুড়া জেলা কমিটিকে এই বিষয়ে রিপোর্ট করতে বলেছে।

বিভি/রিসি 

মন্তব্য করুন: