বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সসাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ভোটের মাঠে খেলার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বগুড়া-৪ ও ৬ আসনে উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একতারা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন হেরে যান হিরো আলম।  

রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) উপনির্বাচনের ৪৫টি ভোটকেন্দ্রের ভোট পুনঃগণনার আবেদন জমা দিতে এসে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম এ কথা বলেন।

হিরো আলম বলেন, আমার সন্দেহ রয়েছে, আমার নির্বাচনী ফলাফল তারা সুষ্ঠুভাবে সম্পূর্ণ করেনি। তাই প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল আমি জোগাড় করেছি। কিছু কেন্দ্রে আমিসহ প্রায় সব প্রার্থীর অস্বাভাবিক ভোট পেয়েছে। ওই কেন্দ্রগুলো উল্লেখ করে দিয়ে আমি জেলা প্রশাসকের কাছে ভোট পুনঃগণনার আবেদন দিয়েছি। তারা আমার আবেদন গ্রহণ করেছেন। তবে কবে ফলাফল আবারও গণনা করা হবে সে বিষয়ে কিছু জানায়নি। যদি তারা সাড়া না দেন আমি হাইকোর্টে যাবো।

হিরো আলমের পক্ষে বিএনপি কথা বলছে, তাহলে তিনি বিএনপির পক্ষে কাজ করছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি আমার পক্ষে কাজ করেনি, করলে তো ভোটের দিন বিএনপির লোকজন আমার পক্ষে কাজ করতো, মাঠে থাকতো। লোকে কথাগুলো বানাচ্ছে। এসব কিছু লোকের বানানো কথা। শুধু বিএনপির মির্জা ফখরুল স্যার নয়, সারা বিশ্ব ও বাংলাদেশ আমার পক্ষে কথা বলেছেন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ভোটের মাঠে আহ্বান জানিয়ে হিরো আলম বলেন, হিরো কখনও জিরো হয় না কিন্তু ওবায়দুল কাদের স্যার বলেছেন, হিরো আলম জিরো হয়ে গিয়েছে। যারা হিরোকে জিরো বানাতে চায় তারাই জিরো হয়ে গিয়েছে। সেতুমন্ত্রী আমাকে তাচ্ছিল্য করে কথা বলেছেন। একজন মন্ত্রী দেশের নাগরিককে তাচ্ছিল্য করে কথা বলতে পারেন না। তিনি কথায় কথায় বলেন আসুন খেলা হবে। আমি ওবায়দুল স্যারকে জোর গলায় বলতে চাই, খেলা সবার সাথে করতে হয় না। আমি হিরো আলমের সাথে একটা নির্বাচনে আপনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ও আপনি দলীয়ভাবে দাঁড়ান। এরপর আপনি সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে দেখেন খেলা হয় কি-না। খেলার জন্য নাকি উনি মাঠে প্লেয়ার খুঁজে পান না। প্রতিকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে ভোটারদের ভয় না দেখিয়ে সুষ্ঠু ভোট দিয়ে দেখেন। উনি কেন আমাকে ছোট করে কথা বলেন। উনাকে বলব বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) থেকে ভোট করুন, আমাকে যেই আসন থেকে পরাজিত করে দেওয়া হয়েছে।

হিরো আলম আরও বলেন, আমি সুষ্ঠ নির্বাচন চাই। আগামীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই যেখানে সব দল অংশগ্রহণ করবে। সবাই নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে।

হিরো আলম বগুড়া-৪ আসনের ৪৫টি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল পুনঃগণনার জন্য আবেদন করেছেন। ভোটকেন্দ্রগুলো হলো- ০২, ০৩, ০৪, ১৩, ১৪, ১৭, ১৯, ২২, ২৪, ৩০, ৩৮, ৪৩, ৪৭, ৪৯, ৫৩, ৫৪, ৫৬, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৬৫, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৫, ৭৬, ৭৮, ৭৯, ৮১, ৮২, ৮৩, ৮৪, ৮৫, ৮৬, ৮৯, ৯০, ৯১, ৯৯, ১০০, ১০১, ১০২, ১০৩, ১০৫, ১০৮।

গত ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৪ এবং বগুড়া-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন হিরো আলম। বগুড়া-৪ আসনে ১৪ দলীয় সমর্থিত ও জাসদ প্রার্থীর কাছে ৮৩৪ ভোটে হেরে যান তিনি। এর পরেই হিরো আলম অভিযোগ করেন যে ওই আসনে ভোট সুষ্ঠু হলেও গণনার সময় ফলাফল পাল্টে দেওয়া হয়েছে।