• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

আসছে ভোট-১

গোপালগঞ্জে বিএনপির রাজনীতিতে ঢিমেতাল, আ. লীগ আত্মবিশ্বাসী

 মনোজ সাহা, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:৩২, ৩১ মে ২০২৩

আপডেট: ১৬:৫৮, ৩১ মে ২০২৩

ফন্ট সাইজ
গোপালগঞ্জে বিএনপির রাজনীতিতে ঢিমেতাল, আ. লীগ আত্মবিশ্বাসী

গোপালগঞ্জে তিন দলের তিন নেতা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জেলা গোপালগঞ্জে বরাবরের মতোই আওয়ামী লীগ সুসংগঠিত। তবে রাজপথের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি চলছে ঢিমেতালে। জেলায় তেমন কোনো তৎপরতা নেই সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির।

আওয়ামী লীগের দুর্গ 

জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দলীয় কার্যালয়টি সচল করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। সকাল-সন্ধ্যা দলীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের সাথে বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করি। আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে চাঙ্গা রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। সকল দলীয় কর্মসূচি দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে পালন করা হচ্ছে।

পাঁচটি উপজেলা নিয়ে গঠিত গোপালগঞ্জের তিনটি সংসদীয় আসন দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে। আগামী সংসদ নির্বাচনেও তিনটি আসনেই সরকার দলীয় প্রার্থীরা বিজয়ী হবে বলে দাবি করেন মাহাবুব আলী খান।

এলাকাটি আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত। কারণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া। যে কারণে এলাকার মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল। তারা প্রার্থী দেখে না। তারা বঙ্গবন্ধুর নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আত্মতৃপ্তি লাভ করেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকার ছাড়া অন্য সরকার ক্ষমতায় থাকলে এলাকার উল্লেখযোগ্য উন্নয়নমূলক কাজ হয় না। তাই এলাকার মানুষ সব সময় নৌকার পক্ষে ভোট দিয়ে প্রার্থীদের বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করে থাকেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়াও এখানে জন্মগ্রহণ করেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি। গোপালগঞ্জে কোনো গ্রুপিং নেই বলে জানান স্থানীয় নেতারা। জেলায় কোনো চাঁদাবাজি নেই, কোনো টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নেই বলেও জানান তারা। 

২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির তিন প্রার্থী

দুটি আসন ফিরে পেতে চায় বিএনপি
গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকউজ্জামান বলেন, জাতির এক মহাক্রান্তিলগ্নে  অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অনেক বেশি সংগঠিত ও উজ্জীবিত। দলে কোনে গ্রুপিং বা কোন্দল নেই দাবি করে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত এবং সাংগঠনিক কর্মসূচি পালনে পুলিশই আমাদের প্রধান অন্তরায়। শতবাধা উপেক্ষা করে সাংগঠনিক কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির কলেবর দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্ব পাওয়ার পর পাঁচটি উপজেলা ও চারটি পৌরসভায় প্রথমে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে পর্যায়ক্রমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে যাচ্ছি। জেলা সম্মেলনও প্রক্রিয়াধীন আছে।

বাস্তবতা বিবেচনায় গোপালগঞ্জ একটি বিশেষ কারণে আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত জেলা বলে পরিচিত। তারপরও এ জেলায় দুইবার দুইটি আসনে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে।

আহ্বায়ক শরীফ রফিকউজ্জামান জোর দিয়ে আরও উল্লেখ করেন সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে বর্তমান নিশিরাতের কতৃত্ববাদী সরকারের থেকে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ যেভাবে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে তাতে আগামীতে নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে এর পুনরাবৃত্তি বিচিত্র কিছু নয়।

আওয়ামী লীগের ছায়ায় জাসদ
গোপালগঞ্জ জেলা জাসদ (ইনু) সভাপতি সেখ মাসুদুর রহমান বলেন মুল্যবৃদ্ধি, দুর্নীতির প্রতিবাদে ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে জাসদ।
মহামারি কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে দেশের মানুষ আজ নাজেহাল হয়ে পড়েছে। এক শ্রেণির মজুতদারী সিন্ডিকেট আমলাতন্ত্রের বেড়াজালের বিরুদ্ধে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে সুমহান মুক্তিযুদ্ধের স্বাদ ও চেতনা ভূলুণ্ঠিত হয়ে যাবে। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাসদ তিনশত আসনের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সেখ মাসুদুর রহমান বলেন, জাসদ মনে করে স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-শিবির হেফাজত চক্র বিএনপির ঘাড়ে পা রেখে আগামী নির্বাচনে একটি অস্বাভাবিক সরকার কায়েম করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেশকে তালেবানী জঙ্গিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। এক্ষেত্রে জাসদ মনে করে স্বাধীনতার ৫০ বছর পার করে ওই চক্রকে সে সুযোগ দে্য়ও যায় না বিধায় ঐক্যবদ্ধভাবে ১৪ দলকে আরও শক্তিশালী করে তার নেতৃত্বে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে জায়ামাত-হেফাজত বিএনপিকে চিরতরে নির্বাসনে পাঠাতে হবে।

সেখ মাসুদুর রহমান বলেন, একুশ শতকে অগ্রসরমান দুনিয়ার সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে বাংলাদেশে আজ আবারও সুমহান মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি পুনঃজাগরণ প্রয়োজন। তাই এই মহাসংকটের মধ্যে জাসদের আহ্বান নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং দুর্নীতি, লুটপাট দলবাজী, আমলাতন্ত্র, গুন্ডাতন্ত্র রুখো সুশাসন কায়েম করো।

মন্তব্য করুন: