যেদিন আল্লাহ দেখা করবেন মানুষের সাথে, কেমন হবে সেদিন?
কেমন হবে সেই দিনটি যেদিন মানুষ দেখা পাবে তার পালনকর্তার? মহান আল্লহকে আমরা না দেখে ইবাদত করি। তার সব আদেশ-নিষেধ সব সময় মেনে চলার চেষ্টা করি। সবসময় যে আমরা সফল হই তা না। কিন্তু চেষ্টা আমরা সবাই করি। কিন্তু যে আল্লাহকে না দেখে ইবাদত করছি, সে আল্লাহ যেদিন দেখা দিবেন, কেমন হবে সেই দিনটি?
হাশরের ময়দানে সব হিসাব শেষ হওয়ার পর বিশ্বাসীদের আল্লাহ তার অশেষ রহমত গুণে দান করবেন জান্নাত। এই জান্নাত হবে পরম শান্তির জায়গা, পরম নেয়ামতের জায়গা। মানুষের কোন ইচ্ছাই বাকি থাকবে না। জান্নাতের মাটি হবে মেশকের গন্ধ বিশিষ্ট। মুমিনদের জন্য যে ঘর বানানো হবে তার ইট হবে স্বর্ণ আর রুপার। জান্নাতের রাস্তাগুলো হবে মুক্তার তৈরি আর ঘাস হবে জাফরানের।
জান্নাতে মুমিনরা থাকবে অনন্তকাল। কারও বয়স বাড়বে না। কোন কোন বর্ণনায় আছে জান্নাতের পুরুষদের বয়স হবে ৩০ অথবা ৩৩ আর তাদের উচ্চতা হবে আদম (আ) এর মতো। আর জান্নাতের নারীদের সৌন্দর্য্য হবে অকল্পনীয়। হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী যখন কোন ব্যক্তি জান্নাতে তার স্ত্রীর দিকে তাকাবে তখন তার সৌন্দর্য দেখে সে মুগ্ধ থাকবে ৪০ বছর।
আল্লাহর এতসব নেয়ামত আর সুখের মাঝেও একটা জিনিস তখনও বাকি থাকবে। আল্লহ একদিন সব জান্নাতবাসীকে একজায়গায় জমা করবেন। আর জিজ্ঞেস করবেন, হে ঈমানদারগণ তোমরা কি জান্নাতে সন্তুষ্ট? আর কি চাও বলো। জান্নাতবাসী বলবে “আল্লাহ, আমরা চাই যে আপনি আমাদের উপর সন্তুষ্ট হন” আল্লাহ বলবেন, “আমি তোমাদের উপর সন্তুষ্ট আর তাই তোমাদের আমি জান্নাত দান করেছি” এর পর আল্লাহ বলবেন, “আমি তোমাদের একটা ওয়াদা করেছিলাম সেই ওয়াদাটা পালন করা এখনও বাকি রয়েছে”
মানুষ তখন অবাক হবে আর নিজেদের মাঝে গুঞ্জন করতে থাকবে। যে কি সেই ওয়াদা? আল্লাহ তো আমাদের সৎ কাজের প্রতিদান দিয়েছেন, আমাদের মন্দ কাজ গুলো ক্ষমা করেছেন, তার রহমত গুণে আমাদের জান্নাতে প্রবেশ করিয়েছেন। আর কি বাকি থাকতে পারে? এমন সময় জান্নাতের চারদিক ছড়িয়ে যাবে আলোতে। স্বয়ং আল্লাহ সেই জমায়েতে উপস্থিত হবেন। আর বলবেন, “কারা সেই ব্যক্তি যারা আমাকে কখনও দেখেনি কিন্তু তবুও বিশ্বাস করেছে? আজকে হচ্ছে বৃদ্ধির দিন। তোমরা যা চাও তাই দেয়া হবে।” তখন জান্নাতবাসী বলবে, “হে আল্লাহ আমরা আপনাকে দেখতে চাই”।
আল্লাহ সেই জমায়েতে উপস্থিত থাকলেও তার ও জান্নাতবাসীর মাঝে থাকবে নূরের পর্দা। ফলে মানুষ আল্লাহর উপস্থিতি দেখলেও তখনও আল্লাহকে দেখতে পারবে না। মানুষের কথা শুনে আল্লাহ সেই পর্দা সরিয়ে দিবেন। আর মানুষ প্রথমবারের মতো দেখবে তাদের মালিকের চেহারা। সেই মালিক, যাকে না দেখেই ইবাদত করেছে, ভালোবেসেছে, ভয় পেয়েছে। সেই দিনের সম্মান হয়ত আমরা কল্পনাও করতে পারবো না। মহান আল্লহ যেন আমাদের সবাইকে সে দিনটি দেখার সৌভাগ্য দান করেন।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: