• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

জুমার দিনে মারা গেলে কি কেয়ামত পর্যন্ত কবরের আজাব মাফ?

প্রকাশিত: ১২:১৮, ১০ অক্টোবর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
জুমার দিনে মারা গেলে কি কেয়ামত পর্যন্ত কবরের আজাব মাফ?

মুসলিম উম্মাহর জন্য পবিত্র জুমার দিনকে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ এবং ঈদের দিন হিসেবে গণ্য করা হয়। পবিত্র কুরআনে সূরা জুমায় বলা হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে সালাতের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও। আর বেচা-কেনা বর্জন করো। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯)।

জুমার দিন যদি কারও মৃত্যু হয়, তাহলে এই মৃত্যুর কি বিশেষ কোনো ফজিলত আছে? অনেককে বলতে শোনা যায়—  জুমার দিন মারা গেলে অনেক ফজিলত। 

অনেকে আবার বলে থাকেন, 'এ দিন কেউ মৃত্যুবরণ করলেই বিনা হিসেবে জান্নাতে চলে যাবেন'। এই কথার বাস্তবতা কতটুকু? শরিয়ত এই বিষয়ে কী বলে?

শুক্রবারে মৃত্যুবরণ করলে— জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয় কিংবা সরাসরি বিনা হিসাবে জান্নাতে চলে যাবেন, এ মর্মে কোরআন-হাদিসের কোথাও কোনো দলিল খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে কবরের আজাব থেকে বাঁচার ব্যাপারে হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে মুসলমান জুমার দিনে কিংবা জুমার রাতে মৃত্যুবরণ করবে, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তাকে কবরের ফেতনা থেকে বাঁচিয়ে রাখবেন। (তিরমিজি, হাদিস : ১০৯৫; মিশকাত, হাদিস : ১৩৬৭; মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১১/১৪৭)

উপর্যুক্ত হাদিসের আলোকে ইসলামি স্কলারগণ বলে থাকেন যে, শুক্রবারে মৃত্যুবরণ করলে বিনা হিসেবে জান্নাত বা কিয়ামত পর্যন্ত কবরের আজাব মাফ এ কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। 

বোঝা যাচ্ছে, শুক্রবার দিনে অথবা বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত— এই সময়ে মধ্যে কোনো মুসলিম ব্যাক্তির মৃত্যু হলে, সেক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা তাকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে থাকেন। অর্থাৎ তাকে কবরের আজাব থেকে ফেতনা থেকে মুক্তি লাভ করিয়ে থাকেন।

এই বিষয়টি সম্পর্কে উসমান ইবনে আওফান (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘কবর হলো আখিরাতের ঘাঁটিগুলোর মধ্যে প্রথম ঘাঁটি। এই ঘাঁটিতে যদি কারও জন্য প্রশ্নোত্তর সহজ করে দেওয়া হয়, এই ঘাঁটিতে যদি কেউ কোনো বড় বিপদে না পড়েন অর্থ্যাৎ সহজেই পার পেয়ে যান— তাহলে পরবর্তী ধাপগুলো ও তিনি সহজেই উত্তীর্ণ হতে পারবেন, সেই আশা করা যায়। (সূত্র : শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানি (রহ.); আহকামুল জানাইজ, পৃষ্ঠা : ৫০; বঙ্গানুবাদ মিশকাত, হাদিস : ১২৫)

হাদিসে আরও বলা হয়েছে, ‘আর যদি কবরের ঘাটি কারও জন্য কঠিন হয়ে যায়, তাহলে পরবর্তী যে ধাপগুলো রয়েছে সেগুলো আরও কঠিন হবে।’ ( তিরমিজি, হাদিস : ২৩০৮)

তবে একটি কথা মনে রাখতে হবে, আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি না যে জুমার দিনে কেউ মৃত্যু বরণ করলে তিনি সরাসরি জান্নাতে যাবেন এবং তার কবর আজাব কেয়ামত পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে সেই মৃত ব্যক্তির জন্য সুধারণা রাখা ভালো।

আল্লাহ আমাদের সবার জন্য ভালো মৃত্যু নির্ধারিত করে রাখুন। ভালো মৃত্যু, কবরের আজাব মাফ ও আখিরাতে শান্তিতে থাকার জন্য যেমন আমল করা দরকার— সে রকম আমল করার তাওফিক দান করুন।

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2