কোরবানি গরুর সাথে সেলফি; জেনে নিন ইসলাম কি বলে! (ভিডিও)
চলে এলো পবিত্র ঈদুল আজহা। রাত পোহালোই শুরু হবে তোড়জোড়। এরই মধ্যে অনেকেরই কেনাকাটা সম্পন্ন। কোরবানিও পশু কেনাও চূড়ান্ত পর্যায়ে। এখন শুধু অপেক্ষা। তবে এর মধ্যে শুরু হয়েছে মাসয়ালা জেনে নেয়ার আগ্রহও। এর মধ্যে রয়েছে রয়েছে পশুর সঙ্গে সেলফি তুলে তা প্রকাশের বিধান।
সেলফি আমাদের সমাজে এক ধরণের নতুন ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে। যা আমাদেরকে ভালো কিছুর চেয়ে মন্দ কিছুর দিকেই বেশি প্রভাবিত করে। কেননা এতে করে শো-অফ’র একটা প্রবণতা তৈর হয়। আর ইসলামের কোনো ইবাদতই লোক দেখানোভাবে করলে তা কবুল হবে না।
এ ক্ষেত্রে ইসলামিক স্টাডিজ স্কুল এন্ড কলেজের সিনিয়র শিক্ষক এবং এসো কুরআন শিখি ফাউন্ডেশনের পরিচালক শায়েখ মোহাম্মদ ছালাহউদ্দীন জানান, কোরবানির পশুর সঙ্গে সেলফি তুললে সেই কোরবানি কবুল হবে কি না সেটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব না।
সুরা মায়েদার ২৭নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আর আদমের দু'ছেলের কাহিনী আপনি তাদেরকে যথাযথভাবে শুনান। যখন তারা উভয়ে কুরবানী করেছিল অতঃপর একজন থেকে কবুল করা হল এবং অন্যজনের কবুল করা হল না। সে বলল, অবশ্যই আমি তোমাকে হত্যা করব।অন্যজন বলল, আল্লাহ তো কেবল মুত্তাকীদের পক্ষ হতে কবুল করেন।’
এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, কোরবানি সব সময় কবুল হয় না। কবুলের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- নিয়তের খালেস বা পরিপূর্ণ নিয়ত করা। অর্থাৎ সকল ইবাদত হবে আল্লাহর জন্যে। কোনো ধরণের প্রদর্শনী বা লোক দেখানো ইবাদত কবুলের ক্ষেত্রে অন্তরায় হতে পারে।
এছাড়াও কোনো কোনো ফকীহর মতে যে কোনো চিত্রাঙ্কন নিষিদ্ধ। তবে, নিষ্প্রাণ বিষয় বা প্রকৃতির চিত্র জায়েজ বলেন অধিকাংশ ফকীহগণ। প্রসিদ্ধ মত এই যে, ইসলামে প্রাণীর ছবি হারাম।
দলীল স্বরূপ বলা যায়, নবী করিম সা. বলেন, কিয়ামতের দিন সর্বাধিক আজাব দেওয়া হবে চিত্রকরদের। বলা হবে, প্রাণী এঁকেছিলে এখন এদের প্রাণ দাও। প্রাণ দেওয়া যেহেতু আল্লাহ ছাড়া কারও পক্ষে সম্ভব নয়, অতএব চিত্রকরদের আজাব দেওয়া হবে।
হাদীস শরীফে আরও এসেছে, সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না, যেখানে কুকুর এবং জীবের ছবি থাকে। এখানে শিকারের জন্য প্রশিক্ষিত কুকুর এ নিয়মের বাইরে। কেবল রোগ ছড়ানো ক্ষতিকর কুকুরই উদ্দেশ্য। এতে বোঝা যায়, সাধারণভাবেই ছবি হারাম।
সুতরাং বিনা প্রয়োজনে ছবি তোলা যেহেতু নিষিদ্ধ সেহেতু কোরবানির পশুর সঙ্গে ছবি তোলাটাও হারাম।
তবে নিয়তের উপরই নির্ভর করে পুরো আমল। তাই প্রদর্শনীর চেয়ে ভালো ও নেক কাজের দিকেই মনোনিবেশ করা জরুরি। এতে করে এবাদত করা হবে আবার নিজের কর্মটাও সঠিক হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সহীহভাবে নেক আমল করার তাওফিক দান করুক। আমিন
বিভি/এজেড




মন্তব্য করুন: