• NEWS PORTAL

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকার আইপিএল

প্রকাশিত: ১৬:৪৪, ৩০ মে ২০২৩

আপডেট: ১৭:২২, ৩০ মে ২০২৩

ফন্ট সাইজ
৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকার আইপিএল

প্রতীকী ছবি

আইপিএল-এ অনলাইন গেমিং অ্যাপে বেটিং হয়। হিসেব বলছে, আইপিএল-এর বিজ্ঞাপনের বড় অর্থ আসে বেটিং অ্যাপগুলি থেকে। ২০২৩ সালের পুরুষদের যে আইপিএল সোমবার শেষ হলো, তার ব্রডকাস্টের সত্ত্ব ছিল ভায়াকম ১৮ এর হাতে। এবছরের আইপিএল-এর পুরো সিজনের জন্য তাদের মোট আয়ের লক্ষ্য ছিল ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। সূত্র জানাচ্ছে, এই আয়ের লক্ষ্য পূরণ করেছে ভায়াকম। উল্লেখ্য, পুরুষদেরআইপিএল-এ মোট ম্যাচের সংখ্যা ছিল ৭৪। নারীদের আইপিএল-এর মোট ম্যাচ ২০টি। এই পুরো ৯৪টি ম্যাচের জন্য চার হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিল ভায়াকম।

 

এবিষয়ে সরাসরি ভায়াকমের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল বাংলাভিশনের কন্টেনট পার্টনার ডয়চে ভেলে। কিন্তু তারা কোনো উত্তর দেয়নি। তবে আইপিএল-এর ব্যবসার খবর যারা রাখেন, তাদের বক্তব্য, সিজনের প্রথম অংশেই আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলেছে ভায়াকম। কিন্তু কীভাবে ছুঁলো?

গেমিং অ্যাপের খেলা

আইপিএল-এর আয়ের অন্যতম মাধ্যম বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপন থেকেই প্রায় গোটা আয়ের টাকা এবং মূলধন উপার্জিত হয়। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এবছর যে ১৬তম পুরুষদের আইপিএল অনুষ্ঠিত হলো, তার প্রথম পর্বেই অর্থাৎ, গ্রুপ পর্বেই বিজ্ঞাপনের ২০ শতাংশ অনলাইন গেমিং অ্যাপগুলি থেকে এসেছে। এই অ্যাপগুলির মাধ্যমেই অনলাইনে বেটিং করা যায়। নিজের টিম তৈরি করে টাকা জেতার মাধ্যম এই গেমিং অ্যাপগুলি। খেলোয়াড় থেকে প্রশাসক-- সকলেই এই গেমিং অ্যাপগুলির বিজ্ঞাপনের সঙ্গে যুক্ত।

অনলাইন গেমিং অ্যাপের প্রভাব নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংস্থা জানিয়েছে, ফাইনাল পর্বে এই অর্থের পরিমাণ আরো খানিকটা বেড়েছে বলেই তাদের ধারণা। যদিও এবিষয়ে সার্বিক রিপোর্ট এখনো তাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। তবে তাদের ধারণা, শেষপর্যন্ত মোট বিজ্ঞাপনের ৩০ শতাংশ কেবলমাত্র অন লাইন গেমিং অ্যাপ থেকে এলেও আশ্চর্য হওয়ার কোনো কারণ নেই।

লক্ষণীয়, গত বছরের চেয়ে এই সংখ্যাটা এবার বেশ কয়েকগুণ বেড়েছে। অনলাইন গেমিং অ্যাপগুলি এভাবে রমরমিয়ে চললে আগামী বছর এই সংখ্যাটি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।


বিজ্ঞাপনের নিরিখে অনলাইন গেমিং অ্যাপের পিছনেই আছে পানমশলা। বস্তুত, ট্যাম স্পোর্টস আইপিএল-এর প্রথম অংশের বিজ্ঞাপন নিয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করেছে। তাতেই এই বিষয়গুলি আরো বেশি স্পষ্ট হয়েছে। অথচ গত বছরেও আইপিএল-এর বিজ্ঞাপনের চরিত্র আলাদা ছিল। সেবার বিজ্ঞাপনের তালিকায় প্রথম সারিতে ছিল ই-শিক্ষা, ই-শপিং এবং ই-ওয়ালেটের মতো সংস্থাগুলি। এবছর রাতারাতি সে জায়গায় চলে এসেছে অনলাইন গেমিং অ্যাপ।

গেমিং অ্যাপের লাভ

পুলিশের এক সূত্র জানিয়েছে, আইপিএল-এর গ্রুপ পর্বেই প্রতি ম্যাচে তিন থেকে সাড়ে তিনহাজার টাকার বেটিং হয়েছে বলে তাদের কাছে খবর আছে। ফাইনাল পর্বে এই অর্থ আরো দেড় গুণ পর্যন্ত বেড়েছে বলে তাদের ধারণা। তবে ফাইনাল পর্বের অংক এখনো তাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। এই অর্থের সিংহভাগ অনলাইন গেমিং অ্যাপগুলির মাধ্যমে ঘুরেছে। তার বাইরেও বেআইনি অনলাইন বেটিংচক্রও কাজ করেছে। একটি ম্যাচে তিন হাজার কোটি টাকার লেনদেন হলে তা থেকে মোট লাভ প্রায় ৬০০ কোটি টাকা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে সেই টাকাই বিজ্ঞাপনে যাচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন। এ কারণেই অনলাইন অ্যাপের বিজ্ঞাপনের পরিমাণ এতটা বেড়ে গেছে বলে মনে করছেন তারা।

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ভারতীয় বোর্ডের সভাপতি থাকাকালীন প্রথম অনলাইন গেমিংয়ের ফ্লাডগেট খুলে দেওয়া হয়। বিদেশি গেমিং সংস্থাগুলিকে আইপিএল-এ ঢুকতে দেওয়া হয়। তারসঙ্গে অনলাইন গেমের সঙ্গে যুক্ত দেশি সংস্থাগুলিও তাতে যোগ দেয়। আইপিএল-এর অকশনেই এর সরাসরি প্রভাব দেখা গেছিল সে সময়। আগে যেখানে একটি টিমের অকশনে খুব বেশি হলে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হতো, সেখানে গেমিংয়েরফ্লাডগেট খুলে যাওয়ার পর একটি টিমের মূল্য আট হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে। আইপিএল-এর মোট বাজেট গত কয়েক বছরে কয়েকগুণ বেড়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন।

এবছরের আইপিএলের সর্বশেষ হিসেব এখনো সামনে আসেনি। তবে প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, আগের সমস্ত আইপিএল-কে অন্তত অর্থকড়ির দিক থেকে ছাপিয়ে গেছে এবারের আয়োজন।

মন্তব্য করুন: