• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

বাবার কোলে চড়ে স্কুল-কলেজ পেরোনো হাসির অনার্সে সিজিপিএ ৩.২০!

প্রকাশিত: ১৯:৩৩, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
বাবার কোলে চড়ে স্কুল-কলেজ পেরোনো হাসির অনার্সে সিজিপিএ ৩.২০!

নাইছ খাতুন হাসি। জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী। তবে থেমে নেই তার পথচলা। ইচ্ছাশক্তি আর অধ্যবসায়ের সাথে পেয়েছেন বাবার পুরোপুরি সমর্থন। গত ১৮ বছর বাবার কোলে চড়ে বিদ্যালয় ও কলেজে গিয়ে পড়াশোনা করেছেন। আর সর্বশেষ অনার্স পরীক্ষাতেও তাক লাগানো ফলাফল করেছেন এই তরুণী।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) অনার্স চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়। ফলাফলে দেখা যায় হাসি সিজিপিএ ৩.২০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। অদম্য ইচ্ছা আর অধ্যবসায় দিয়ে প্রতিকূলতাকে জয় করার এই উদাহরণ বগুড়ার নাইছ খাতুন হাসির।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২৪ বছর বয়সী হাসির দুটো পা আছে, তবে সেগুলোয় বল পান না। ডান হাতেও নেই শক্তি। সম্বল তার বাঁ হাত। সবসময় বাবার কোলে চড়েই তাকে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করতে হয়েছে। এবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত ধুনট সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয় নিয়ে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি।

হাসি জানান, শরীরে শক্তি নেই, তবে মনোবল এবং এক হাতের শক্তি নিয়েই জীবন শুরু করেছি। আমি কারও মাথায় বোঝা হতে চাই না। বাবার কোলে চড়ে একসময় রাস্তায় বের হলে মানুষ আড় চোখে তাকিয়ে থাকত।  উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে সমাজের সবার ভালোবাসা নিয়ে বেচে থাকতে চাই। প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করে নিজেকে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত করতে চাই।

তার বাবা নজরুল ইসলাম জানান, মেয়েটি জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। তাকে কোলে তুলে স্কুলে নেওয়া আমার দায়িত্ব। দুটো পা, একটি হাত নিশ্চল। তাই নিজের পায়ে দাড়াতে বা হাটতে পারে না। শুধু বসা অবস্থায় বা হাতটি দিয়ে কলম ধরে লিখতে পারে সে। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে হাসি ছোট।

হাসি ৬ বছর বয়সে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে ৫ম শ্রেণির লেখাপড়া শেষ করে ভর্তি হন বিশ্বহরিগাছা-বহালগাছা উচ্চবিদ্যালয়ে। ওই বিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে মানবিক শাখায় এসএসসি এবং ২০১৯ সালে বিশ্বহরিগাছা-বহালগাছা বহুমুখী মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

এরপর উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য ধুনট সরকারি ডিগ্রি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স শ্রেণিতে ভর্তি হন। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে হাসি বাড়ি থেকে বাবার কোলে চড়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করেছেন। তার স্বপ্ন এখন শিক্ষক হওয়ার। 

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2