যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় রান্না করে খাওয়াচ্ছে হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি
বাংলাদেশিদের উদ্যোগে প্রতিদিন সেহরি-ইফতারে যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজার ২ হাজার অভুক্ত মানুষকে দেওয়া হচ্ছে রান্না করা খাবার। আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে দেওয়া হচ্ছে জামা কাপড়ও। যা পৌঁছে দিচ্ছে ঢাকার মোহাম্মদপুরের সামাজিক সংস্থা হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশ। এসব সাহায্য সামগ্রী পেয়ে বাংলাদেশের জন্য দোয়াও করছেন ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষেরা।
সংস্থাটি বলছে, মানুষের সহযোগিতা পেলে যুদ্ধ পরিস্থিতি পুরোপুরি কেটে ওঠা পর্যন্ত এই সাহায্য কর্মসূচি চালিয়ে যেতে চান তারা। অভুক্ত গাজায় খাদ্য পৌঁছেছে বাংলাদেশ থেকে। বিরান ধ্বংসস্তূপের বাসিন্দাদের ভাগ্যে জুটছে সামান্য আহার। তাই বাংলাদেশের প্রতি ফিলিস্তিনের শিশুদের এই শুকরিয়া জ্ঞাপন।
চলছে পবিত্র রমজান মাস। সেহরি-ইফতারে নানান পদের খাবারে ব্যস্ত মুসলিম বিশ্ব। ঈদ ঘনিয়ে আসায় মার্কেটে মার্কেটে ঘুরে নামিদামি জামাকাপড় কিনছেন মুসলমানরা। অথচ এই সময়ে ভালো খাবার বা ঈদের জামা কেনাতো দূরে থাক উল্টো নিজের বাসস্থান হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে দিনাতিপাত করছেন ফিলিস্তিনের মুসলামনরা।
তবে ইসায়েলি হামলার শুরু থেকেই ফিলিস্তিনের এই অভুক্ত মানুষদের পাশে সাধ্যমতো দাঁড়ানোর চেষ্টা করে আসছে বাংলাদেশের কয়েকটি সমাজসেবী সংস্থা। হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশের আয়োজনে প্রতিদিন গাজায় রান্না করা হচ্ছে প্রায় ২ হাজার মানুষের খাবার। সেই খাবার গাজার খান ইউনুস, দেইর আল বালাহ,মাওয়াসি কারারা, উত্তর গাজাসহ বিভিন্ন বিধ্বস্ত এলাকায় পৌঁছে দেন স্বেচ্ছ্বাসেবকরা। ঈদকে কেন্দ্র করে তারা খাদ্যের পাশাপাশি পৌঁছে দিচ্ছেন কিছু পোশাকও। যা পেয়ে আনন্দে আত্মহারা ইসরায়েলি আগ্রাসনের শিকার এই মানুষেরা।
শুধু খাবার বা পোশাক দেওয়া নয়, বাংলাদেশের স্বনামধন্য আলেমদের তত্বাবধানে পরিচালিত এ সংস্থাটি গাজায় কাজ করছেন ক্ষতিগ্রস্তদের তাবু নির্মাণসহ বসবাসের পরিবেশ সৃষ্টিতে। পুনর্নির্মাণ করে দিচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদগুলোও। গাজাবাসী স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফেরা পর্যন্ত এই সেবা চালিয়ে যাওয়ার কথাও জানায় হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশ।
হাফেজ্জী চ্যারিটেবলের মহাপরিচালক নওমুসলিম মুহাম্মাদ রাজ বলেন, যতোদিন পর্যন্ত গাজার সংকট নিরসন না হবে, ততোদিন গাজায় আমাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে। সার্বিক সেবা ও সহযোগিতার লক্ষ্যে গত ৭ মার্চ থেকে দ্বিতীয়বারের মতো মিশর সফরে আছি। তিনি জানান, বর্তমানে গাজাবাসীর জন্য প্রচুর পরিমাণে খাবার, পানি, চিকিৎসা ও তাঁবু প্রয়োজন।
হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশ একটি অরাজনৈতিক এবং অলাভজনক সেবা সংস্থা। হাফেজ্জী হুজুর রহ. এর সাহেবজাদা মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, ঢালকানগরের পীর সাহেব মুফতি জাফর আহমদ, বেফাক বোর্ডের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক ও ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসীসহ দেশের শীর্ষ আলেমরা এই সংস্থার নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বিভি/এমআর
মন্তব্য করুন: