ভয়ংকর প্রতিশোধ নিলো প্রেমিকা, খুনের ধরণ দেখে হতবাক পুলিশও!
ভারতের উত্তর দিল্লির টিমারপুর এলাকার একটি ফ্ল্যাটে গত ৬ অক্টোবর অগ্নিকাণ্ড হয়। এরপর খবর পেয়ে সেই ফ্ল্যাট থেকে এক তরুণের দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথমে সবাই এটাকে দুর্ঘটনা ভাবলেও তদন্তে বেরিয়ে এসেছে ভিন্ন চিত্র। এটি ছিল একটি ভয়ংকর খুন, কিন্তু সাজানো হয়েছিল দুর্ঘটনার মতো করে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, প্রতিশোধ নিতে ওই তরুণকে খুন করেছে তারই প্রেমিকা। আর খুনের ধরণ দেখে চমকে গেছে পুলিশও। নিহতের রাম কেশ (৩২)। তিনি ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার প্রেমিকা অমৃতা চৌহান (২১), অমৃতার সাবেক প্রেমিক সুমিত কাশ্যপ ও বন্ধু সন্দীপ কুমারকে।
এই ঘটনায় পুলিশের উদ্ধার করা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওই ফ্ল্যাটে আগুন লাগার আগের রাতে মুখ ঢেকে দু’জনকে ওই ভবনে ঢুকতে ও কিছুক্ষণ পর একজন পুরুষ ও এক নারীকে বেরিয়ে যেতে। পরে নারীটি শনাক্ত হয় অমৃতা চৌহান হিসেবে, নিহতের প্রেমিকা। অমৃতার মোবাইল লোকেশনও ঘটনাস্থলের আশপাশে পাওয়া যায়। এতে স্পষ্ট হয় আগুন ছিল পরিকল্পিত হত্যার অংশ।
আরও পড়ুন: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ক্ষমতা বাড়ছে
ঘটনার পর অমৃতা ফোন বন্ধ করে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ গত ১৮ অক্টোবর তাকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুলিশকে জানান, তার সঙ্গে রাম কেশের সম্পর্কের শুরু হয় গত মে মাসে। কিন্তু পরে জানতে পারেন রাম কেশ তাদের ব্যক্তিগত মুহূর্তের ভিডিও সংরক্ষণ করেছেন। পরে ভিডিও মুছে দিতে বললেও রাম কেশ রাজি হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অমৃতা তার সাবেক প্রেমিক সুমিত কাশ্যপের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
অমৃতা জানান, সুমিত গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ কোম্পানিতে কাজ করতেন — তিনি জানতেন কীভাবে আগুন লাগালে দুর্ঘটনা মনে হবে। দু’জনে মিলে পরিকল্পনা করেন রাম কেশকে হত্যা করে আগুন লাগিয়ে ‘দুর্ঘটনা’ হিসেবে দেখানোর। আর এই কাজে তাদের সহায়তা করেন বন্ধু সন্দীপ কুমার।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আরও জানান, গত ৫ অক্টোবর গভীর রাতে সুমিত ও সন্দীপ রাম কেশকে পিটিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এরপর মৃতদেহে তেল, ঘি ও মদ ঢেলে দেন যাতে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। রান্নাঘর থেকে গ্যাস সিলিন্ডার এনে মৃতদেহের পাশে রেখে গ্যাসের নল খুলে দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘর ছেড়ে যাওয়ার আগে তারা নিহত রাম কেশের ল্যাপটপ, হার্ডডিস্ক ও কিছু জিনিসপত্র নিয়ে যান। তারা যাওয়ার কিছু সময় পর আগুন ছড়িয়ে পড়ে ও সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। এতে রাম কেশের দেহ সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
পুলিশের দাবি অপরাধীরা খুনকে নিখুঁত দুর্ঘটনা হিসেবে সাজাতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত প্রযুক্তির কল্যাণেই ফাঁস হয়ে গেছে তাদের ষড়যন্ত্র।
বিভি/টিটি




মন্তব্য করুন: