মান্দায় অসময়ের বৃষ্টিতে কৃষকদের মাথায় হাত; ফসল ক্ষতির শঙ্কা
কার্তিক মাসের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার কৃষকেরা। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত একটানা বৃষ্টিতে নিচু এলাকার আমন ধান ও শীতকালীন সবজির জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ব্যাপক ফসল ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এ সময় সাধারণত আবহাওয়া শুষ্ক থাকে। কিন্তু অপ্রত্যাশিত এই বৃষ্টিতে ক্ষেতের ধান নুয়ে পড়েছে, অনেক জমিতে পানির নিচে তলিয়ে গেছে পাকা ধান। পাশাপাশি সরিষা, ফুলকপি, আলু, গাজর ও পেঁয়াজের বীজতলাও ডুবে গেছে।
এনায়েতপুর গ্রামের কৃষক অমল চন্দ্র সরকার বলেন,“২৫-৩০ বছরেও কার্তিক মাসে এমন বৃষ্টি দেখিনি। কয়েক বিঘা জমির ধান পানির নিচে ডুবে গেছে।”
আরেক কৃষক আব্দুল জলিল জানান, “ধান সবে পাকতে শুরু করেছিল। এখন গাছ নুয়ে পড়ে গেছে। আগের বোরো মৌসুমে ক্ষতি হয়েছিল, এবারও লোকসানের শঙ্কা।”
উপজেলার হাজী গোবিন্দপুর, গাইহানা কৃষ্ণপুর, চককানু ও নবগ্রাম এলাকায় সরিষা, ফুলকপি, পেঁয়াজ ও শীতকালীন সবজির খেতও তলিয়ে গেছে। অনেক স্থানে পেঁয়াজের বীজতলা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় এলাকায় ৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে— যা চলতি মৌসুমে সর্বাধিক এবং গত তিন বছরে একদিনে সর্বোচ্চ। কর্মকর্তারা বলছেন, কার্তিক মাসে এমন বৃষ্টিপাত অস্বাভাবিক।
চলতি মৌসুমে মান্দা উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান এবং প্রায় ৯০০ হেক্টর জমিতে সরিষা, আলু, ফুলকপি, গাজরসহ বিভিন্ন শীতকালীন ফসল আবাদ হয়েছে। হঠাৎ বৃষ্টিতে অন্তত ৫০০ থেকে ৬০০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতির ঝুঁকিতে রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন বলেন, “প্রবল বৃষ্টিতে অনেক খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির হিসাব সংগ্রহ করছেন। কৃষকদের সম্ভাব্য সহায়তার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।”
বিভি/এজেড




মন্তব্য করুন: