• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

ব্রি’র দাবি, মেধাবি প্রজন্ম গড়বে নতুন উদ্ভাবিত বঙ্গবন্ধু ধান-১০০

মনোজ সাহা, গোপালগঞ্জ 

প্রকাশিত: ১২:৩৩, ২৬ এপ্রিল ২০২২

আপডেট: ১৪:১০, ২৬ এপ্রিল ২০২২

ফন্ট সাইজ
ব্রি’র দাবি, মেধাবি প্রজন্ম গড়বে নতুন উদ্ভাবিত বঙ্গবন্ধু ধান-১০০

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট (ব্রি) বলছে, তাদের উদ্ভাবিত বঙ্গবন্ধু-১০০ ধানের জাতটি পুষ্টিসমৃদ্ধ ও মেধাবী প্রজন্ম গড়ে তুলবে। আগাম জাতের এই ধানে জিংক, প্রোটিনসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এ চালের ভাত খেলে শিশুর গড় উচ্চতা, বুদ্ধিমাত্রা ও স্ট্যামিনা বৃদ্ধি পাবে। গর্ভবতী মায়ের দেহের জিংকের চাহিদা পুরণ করবে। এ ধানের ভাত খেয়ে মেধাবী প্রজন্ম গড়ে উঠবে। 

এ বছর গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও বাগেরহাট জেলায় নতুন জাতের বঙ্গবন্ধু ধানের চাষ করা হয়। এই ধান হেক্টরে সাড়ে ৭ টন ফলন দিয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস। বাম্পর ফলনে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখেও। 

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ব্রি থেকে রিলিজকরা বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতের ধান এ বছর  ৩ জেলার ৩ শ’ বিঘা জমিতে  ৩শ’ টি  প্রদর্শনী প্লটে আবাদ করেছেন কৃষক।  আমরা কৃষককে বীজ, সার সহায়তা ও পরামর্শ দিয়েছি। প্রতি হেক্টরে এ জাতের ধান ৭.৫৯ টন ফলেছে। প্রিমিয়াম, প্রটিন,পুষ্টিগুন ও জিংক সমৃদ্ধ এই ধানে রোগ বালাই তেমন নেই। তাই সেচ, সার ও কীটনাশক খরচ খুবই কম। ধানের ফলন হাইব্রিড ধানের কাছাকাছি। তাই এ ধান চাষ করে কৃষক লাভবান হবেন।

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দীঘলিয়া গ্রামের কৃষক রিতা রানী হালদার বলেন, প্রতিকূল আবহাওয়া সহিষ্ণু এই ধানের আবাদে আমাদের সার, সেচ ও কীটনাশক খরচ হয়েছে অনেক কম। ধানটি সরু। খেতে সুস্বাদু। সেই সাথে প্রচুর পুষ্টিগুণ রয়েছে। এই ধানের চালের চাহিদা এবং বাজার দর প্রচলিত ধানের তুলনায় বেশি পাওয়া যাবে। আগাম জাতের এই ধানের বাম্পার ফলন আমাদের মুখে হাসি ফুঁটিয়েছে। 

একই গ্রামের কৃষক সঞ্জয় হালদার বলেন, এ বছর আমাদের ১ বিঘা  জমিতে বঙ্গবন্ধু-১০০ ধান মেশিনের মাধ্যমে  আবাদ করা হয়। ১টি করে ধান গাছ বেশ ফাঁকে ফাঁকে রোপন করা হয়। এভাবে ধান রোপন করা দেখে আশপাশের কৃষকরা বলেছিলো ধান হবে না। ১৫ দিন পরে ধানের কুঁশিতে মাঠ ভরে যায়। তারপর প্রতিদিনই উৎসুক কৃষক ধানক্ষেত দেখতে এসছে। শেষ পযন্ত প্রতি শতাংশে ১ মন ধান ফলেছে। ভালো ফলন আর পুষ্টিগুণের  কারণে এই ধান চাষের প্রতি আমাদের আশপাশের কৃষকের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। 

কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় বলেন, প্রচলিত ধানে সাধারণত কার্যকরী কুঁশি ১৮ টি থাকে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ধানে কার্যকরী কুঁশির সংখ্যা ৩০টি। এ কারণে এ ধানের ফলন বেশি। এ ধানের আবাদ করে কৃষক পরেব বছরের চাষাবাদের জন্য বীজ সংরক্ষণ করতে পারেন। কোটালীপাড়ায় এ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তাই কৃষক আগামীতে লাভজনক এ ধানের আবাদে ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, ব্রি উদ্ভাবিত ১শ’তম ধানের জাত এটি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে এ ধানটি অবমুক্ত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমতি নিয়ে এ ধানের নাম করণ করা হয় বঙ্গবন্ধু ধান-১০০। মুজিববর্ষ স্মরণীয় করে রাখতে ও মেধাবী  একটি প্রজন্ম গড়ে তুলতেই এ ধানে জিংক, প্রোটিন ও প্রচুর পুষ্টিগুন সংযোজন করা হয়েছে। এ চালের ভাত খেলে শিশুদের গড় উচ্চতা, বুদ্ধিামাত্রা ও স্টেমিনা বৃদ্ধি পাবে। গর্ভবতী মায়ের দেহে জিংক এর চাহিদা পূরন হবে। এরমধ্যে দিয়েই আমরা মেধাবী প্রজন্ম গড়ে তুলতে চাইছি।

ব্রি মহাপরিচালক আরও বলেন, এ ধানের আবাদ সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। এতে কৃষক বঙ্গবন্ধু ধানের ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম পেয়ে লাভবান হবেন। আমরা কৃষককে বাণিজ্যিক কৃষির আওতায় আনতে চাই। কৃষকের আয় দ্বিগুণ করে দিতে চাই। বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ এর আবাদ বৃদ্ধি করলে কৃষক  লাভবান  হবে। এছাড়া পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। 
 

বিভি/কেএস

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2