• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

বইপড়া কর্মসূচিতে কৃতিত্বের জন্য ৫ হাজার ১৩৭ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কার প্রদান

প্রকাশিত: ১৫:৫৫, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

আপডেট: ১৬:১০, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

ফন্ট সাইজ
বইপড়া কর্মসূচিতে কৃতিত্বের জন্য ৫ হাজার ১৩৭ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কার প্রদান

ছবি: বক্তব্য রাখছেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ

২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা মহানগরের ৬২টি স্কুলের প্রায় ১৬০০০ ছাত্রছাত্রী বইপড়া কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছে। এসব স্কুলের ৫ হাজার ১৩৭ জন ছাত্রছাত্রী মূল্যায়নপর্বে কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছে, তাদেরকে পুরস্কার প্রদানের জন্য আজ (২৫ অক্টোবর) ও আগামীকাল (২৬ অক্টোবর) বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে একটি বর্ণাঢ্য পুরস্কার বিতরণ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

দুদিনব্যাপী এই পুরস্কার বিতরণ উৎসবে আজ ঢাকা মহানগরের ৩২ স্কুলের ২ হাজার ৫১৬ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সরাসরি মঞ্চ থেকে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে এবং আগামীকাল ২৯টি স্কুলের ২ হাজার ৬১৯ জন  শিক্ষার্থী বিভিন্ন ক্যাটারিতে পুরস্কার প্রদান করা হবে। 

উৎসবে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক জনাব মাহফুজ আনাম, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি, কবি ও সাবেক সচিব জনাব আমিনুল ইসলাম ভুইয়া, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জনাব ইফতেখারুল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জনাব পারভীন মাহমুদ, গ্রামীণফোন লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব ইয়াসির আজমানও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক জনাব শামীম আল মামুন।

জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠাণের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক জনাব শামীম আল মামুন তাঁর স্বাগত বক্তব্যে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সম্মানিত অতিথিদের অভিনন্দন জানান। তিনি আরো বলেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র সবসময় ভালো মানুষ তৈরি করার জন্য নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে এবং আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। দুদিনব্যাপী  উৎসবের এই বিশাল আয়োজন ও পুরস্কারের বই স্পন্সরের জন্য গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।

পুরস্কার প্রদান করছেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ

অতিথিদের শুভেচ্ছা বক্তব্যে ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক জনাব মাহফুজ আনাম পুরস্কারপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, একটা বই, দুইটা বই কিংবা অনেক বই মানুষের জীবন বদলে দেয়। যুগের পর যুগ ধরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ মানুষকে বইয়ের সাথে সংযুক্ত করে রেখেছেন। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ সবসময় বলেন, মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। বড় স্বপ্ন দেখতে হবে, তোমার জন্য পৃথিবীতে যেন ইতিবাচক পরিবর্তন আসে, সেই স্বপ্ন দেখতে হবে। বর্ডারলেস সমাজ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই যুগে শুধু স্কুলের বই পড়লেই হবে না, অন্য বই পড়ার আগ্রহ উৎসাহ সারা জীবন ধরে রাখতে হবে বলে পুরস্কারপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের জানিয়ে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে পর্বে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ পুরস্কারপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের সাথে পুরস্কারের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়ে বলেন, এই পৃথিবীতে সুন্দর প্রাণ থাকার কারণে ৮৬ বছর বয়সে আমি এক যুবক, তোমাদের সামনে দাঁড়িয়ে কচি-কাঁচা হয়ে গেছি। আমরা প্রায় সোয়া ২ কোটি শিক্ষার্থীকে বই পড়িয়েছি। স্কুলের বইয়ের পাশাপাশি এই বই পড়লে যে মন খোলবে, তা মেধা-মননে বিকাশ ঘটাবে। বইয়ে জগতের স্বপ্নগুলো আমরা তোমাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করছি, আমরা ৪৬ বছর ধরে একাজ করে যাচ্ছি, শিঘ্রই আমরা আরো  এক থেকে দেড় কোটি শিক্ষার্থীকে পড়ানোর স্বপ্ন দেখছি।

তিনি বলেন, আমারা চাই তোমরা বড় হও, তোমরা বড় হলে বাংলাদেশও বড় হবে। এইযে কিছুদিন আগে আন্দোলন হয়েছে আমরা সবাই মিলে আন্দোলন করেছি। একটা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার জন্য। বৈষম্যমুক্ত  ও আলোকিত মানুষ তৈরি হলেই আমাদের স্বপ্ন পুরণ হবে। আমাদের স্বপ্নের সারথী হয়ে গ্রামীণফোন সবসময় সহযোগিতা করে যাচ্ছে। 

লেখক, সাবেক সচিব ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি আমিনুল ইসলাম ভুইয়া বলেন, ৭০ বছর বয়সে আজকে তোমাদের মাঝে এসে আমি প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছি, একটু পর তোমরা তোমাদের পুরস্কার পাবে। 

বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জনাব পারভীন মাহমুদ বলেন, আজকে যারা পুরস্কার নিতে এসেছো, তোমাদের অভিনন্দন, অভিনন্দন তোমাদের বাবা-মাকে, বিশেষ করে মায়েদের শুভেচ্ছা। নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি দৃঢ় করতে তাদের  নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাবো- এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

অতিথির বক্তব্যে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এ মুহূর্তে বিজয়ীদের সামনে কথা বলতে পেরে অসম্ভব ভালো লাগছে। মঞ্চে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এর পাশে কথা বলতে পেরে সম্মানিত অনুভব করছি। আমার বাসায় শতশত বই। আগে বাবা পড়তেন, আমি ও আমার সহধর্মিণীও বইপড়ে। এখন আমাদের মেয়েও পড়ে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া কর্মসূচি আমার কাছে স্পেশাল। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সাথে গ্রামীনফোন ২০ বছর ধরে আছে এবং আগামীতেও পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এই পুরস্কার বিতরণ উৎসবে প্রতিটি স্কুলের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের স্বাগত পুরস্কার, শুভেচ্ছা পুরস্কার, অভিনন্দন পুরস্কার ও সেরাপাঠক পুরস্কার শিরোনামের চারটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়। আজকে দিনব্যাপী ঢাকা মহাগরের ৩২টি স্কুলের ২ হাজার ৫১৮ জন ছাত্রছাত্রীকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এরমধ্যে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিতেস্বাগত পুরস্কার পেয়েছে ২০৫৪ জন, শুভেচ্ছা পুরস্কার পেয়েছে ৩৬৮ জন, অভিনন্দন পুরস্কার পেয়েছে ৫৬ জন এবং সেরাপাঠক পুরস্কার পেয়েছে ৪০ জন। বিজয়ী ২ হাজার ৫১৮ জন শিক্ষার্থীকে সরাসরি মঞ্চ থেকে পুরস্কার প্রদান করা হয় এবং আগামীকাল ২ হাজার ৬১৯ জনকে পুরস্কার প্রদান করা হবে।

এরমধ্যে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিতে স্বাগত পুরস্কার পেয়েছে ২১৭৭ জন, শুভেচ্ছা পুরস্কার পেয়েছে ৩৯০ জন, অভিনন্দন পুরস্কার পেয়েছে ২১ জন এবং সেরাপাঠক পুরস্কার পেয়েছে ৩১ জন পুরস্কার পাবে। কর্মসূচির নিয়মানুসারে সেরাপাঠক বিজয়ীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে প্রতি ১০ জনে একটি বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যুগ্ম পরিচালক (প্রোগ্রাম) মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সুমন। দুদিনব্যাপী এই উৎসবের বিশাল  এ আয়োজন ও পুরস্কারের বই স্পন্সর করছে গ্রামীণফোন লিমিটেড।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র গত ছয়চল্লিশ বছর ধরে সারাদেশে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের জন্য নানাবিধ উৎকর্ষ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। দেশভিত্তিক উৎকর্ষ (বইপড়া) কার্যক্রমের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি। বর্তমানে সারাদেশে এই কর্মসূচির আওতায় প্রায় ১৭০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২লাখ ৫০ হাজার ছাত্রছাত্রী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বইপড়াকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে বিপুল সংখ্যক পুরস্কারের ব্যবস্থা।

 

বিভি/এআই

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2