মডেল মসজিদ বানাতেও জমি দখল করেছিল আ. লীগের এমপি!
উদ্বোধনের দুই বছরও হয়নি তাতেই খসে পড়ছে পলেস্তারা। দেয়ালের বিভিন্ন স্থান থেকে ভেঙে পড়ছে টাইলস। নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। কাজ করছে না সোলারও। নির্মাণ হয়নি নিরাপত্তা বেষ্টনি অথচ টাকা উত্তোলন করে লাপাত্তা ঠিকাদার।
এমন নানাবিধ সমস্যার কারণে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার জিয়ানগরে নির্মিত মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। ঠিক একই চিত্র ওই সময় উদ্বোধন হওয়া মানিকছড়ি ও পানছড়ি মডেল মসজিদেরও। মসজিদটির ঈমামের অভিযোগ, সমস্যাগুলো ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে জানালেও কোন ব্যবস্থা ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
মাটিরাঙা উপজেলায় নির্মিত মডেল মসজিদের অবস্থাও ভয়াবহ। নিম্নমানের তার ব্যবহারে সৃষ্ট শটসার্কিটের কারণে ঘটা অগ্নিকাণ্ডে পুড়েছে বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি। ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে হয়ে পড়েছে পুরোপুরি ব্যবহার অনুপযোগী।
জেলার দীঘিনালায় নির্মিত মসজিদটির ঘটনা আরো নাটকীয়। বোরহান উদ্দিন নামে জনৈক ব্যক্তি মসজিদটি নির্মাণে জন্য ৪৩ শতাংশ জমি দান করার পর অনুমোদন দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। কিন্তু স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার প্রভাবে তা বাতিল হয়ে যায়।
পরবর্তিতে প্রশাসনের উপর চাপ প্রয়োগ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের একাধিক পরিবারকে উচ্ছেদ করে দখল করা জমিতে মসজিদ নির্মাণ শুরু করেন। অথচ সেই জায়গার আশাপাশে নেই মুসলামানদের বসবাস। ঐ এলাকার সবাই হিন্দু ও উপজাতীয় সম্প্রদায়ের। এ নিয়ে ক্ষোভ স্থানীয়দের। মসজিদটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার দাবি মুসলিমদের। আলেমরা বলছেন, অন্যের জমি দখল করে মসজিদ নির্মাণ করা শরীয়ত সমর্থন করে না।
অপরদিকে, নামমাত্র কাজ শেষে অতিরিক্ত টাকা উত্তোলন করে গত জুন মাসে উধাও ঠিকাদার। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামনুর রশীদ বলছেন, গণপূর্ত বিভাগের কাছে মডেল মসজিদের নির্মাণ বন্ধ থাকার কারণ জানতে চয়েছেন তিনি।
খাগড়াছড়ি জেলা ঠিকাদার সমিতির সভাপতি মাহবুব আলম সবুজের অভিযোগের তীর সাবেক সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও তার পছন্দের ঠিকাদারদের দিকে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন খাগড়াছড়ির উপ-পরিচালক মোহাম্মদ খলিলুর রহমান বলেন, খাগড়াছড়িতে ১০টি মডেল মসজিদ নির্মাণের কার্যক্রম হাতে নেয় গেল সরকার। এর মধ্যে ৪টি সমজিদ উদ্বোধন করা হলেও এখনও বুঝে পায়নি ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে টানা ৯দিন যোগাযোগ করা হলেও খাগড়াছড়ি গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী অভিজিৎ চৌধুরী নানা অজুহাতে কথা বলতে রাজি হননি।
প্রতিটি মডেল মসজিদের ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১৩ থেকে ১৪ কোটি টাকা। সেখান থেকেও লুটপাট করার অভিযোগ আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি কুজেন্দ্র লালের বিরুদ্ধে।
বিভি/এআই
মন্তব্য করুন: