প্রেমের প্রস্তাবে ব্যর্থ, গায়ে আগুন লাগিয়ে কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা

সাতক্ষীরার তালায় সানজিদা আক্তার তুলি নামে এক কলেজ ছাত্রী প্রেমের প্রস্তাবে ব্যর্থ হয়ে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১ মে) বিকালে দগ্ধ কলেজ ছাত্রীকে মুমূর্ষ অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে সে মারা যায়। এর আগে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে তালা উপজেলার ঘোনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় বাড়ির পাশে মসজিদের ইমাম আমিনুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।
নিহত সানজিদা আক্তার তুলি (১৭) ওই গ্রামের মো. কামরুল সরদারের কন্যা ও তালা মহিলা ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী।
স্থানীয়রা জানান, তুলিদের বাড়ির সামনের মসজিদে তিন মাস আগে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার কাঞ্চননগর গ্রামের আমিনুর রহমান নামে এক অবিবাহিত যুবক ইমামতি করতেন। এই যুবকের নিকট প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয় তুলি। এরপর এ ঘটনায় ইমামতি ছেড়ে পালিয়ে যায় ওই যুবক। ঘটনাটি এলাকার অনেকেই জানেন বলে স্থানীয়রা জানান। এরই জেরে বৃহস্পতিবার বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে তুলি বাড়ির সামনে উঠানের শেষ প্রান্তে বসে নিজের শরীরে কেরোসিন ছিটিয়ে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় তার মা অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজে ব্যস্ত ছিলেন এবং তার পিতা খুলনায় রিক্সা চালাতে গিয়েছিলেন।
গায়ে পুরোপুরি আগুন ধরে গেলে তার আত্মচিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তার গায়ের আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। ততক্ষণে তার শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ পুড়ে যায়। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে বিকালে তার মৃত্যু হয়। তবে ওই কলেজ ছাত্রী মৃত্যুর আগে তার হাতে কলম দিয়ে মসজিদের ইমাম আমিনুর রহমানের নাম লিখে গেছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইজাহার আলী বলেন, আমি শুনেছি তাদের বাড়ির পাশের মসজিদের ইমামের কাছে তুলি বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলো। এ কারণে ইমাম কাউকে কিছু না জানিয়ে ১৫ দিন আগে পালিয়ে গেছে। এ কারণে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে তিনি জানান।
ইসলামকাটি ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক গোলাম ফারুক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, আমি শুনেছি স্থানীয় মসজিদের ইমামের সঙ্গে তুলির একতরফা প্রেম চলছিলো। মেয়েটা ভালোবাসলেও ওই ছেলেটি তাকে ভালোবাসেনি। যার কারণে সে পালিয়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে সে কারণে হয়তো মেয়েটি আত্মহত্যা করতে পারে বলে তিনি আরো জানান।
এদিকে, বিষয়টি জানার পর পরই তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. রাসেল, সার্কেল এসপি হাসানুর রহমান, তালা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শেখ সফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শাহিনুর রহমান জানান, বিষয়টি জানার পর পরই আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে বলা যাবে আসলে কি কারণে সে আত্মহত্যা করেছে। তবে, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই ইমামকে থানায় আনা হয়েছে।
বিভি/এসজি
মন্তব্য করুন: