অসময়ে মেঘনার ভাঙনে হুমকির মুখে ভোলা শহর

মেঘনা নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে ভোলা শহর। অসময়ে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় দিশেহারা এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর অভিযোগ, মেঘনা থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
তাদের দাবি, মেঘনা থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করা হোক এবং কংক্রিটের ব্লক বাঁধ দেওয়া হোক। তবে, পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে ভাঙন ঠেকাতে ইতোমধ্যে তারা কাজ শুরু করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভোলার জেলা শহর সংলগ্ন শিবপুর ইউনিয়নের ভোলার খাল এলাকা থেকে মেদুয়া মাঝির হাট মাছ ঘাট পযন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দেখা দিয়েছে ভাঙন। সম্প্রতি অসময়ে মেঘনা নদীর ভাঙনের মাত্রা বেড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে মেঘনার ভাঙনে মানুষের বসত ভিটা, ফসলি জমি বিলিন হচ্ছে। ভিটিমাটি হারিয়ে অনেক পরিবার বাধ্য হয়ে। বেড়ি বাঁধের উপর আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ। সহায় সম্বল হারিয়ে পথের ভিখারি অনেকে।
এদিকে, অনেকের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। কেউ কেউ বসতঘর ভেঙে নিয়ে রাস্তার পাশে কিংবা অন্যের জমিতে রেখেছে। কেউ কেউ ঝুপড়ির মত চালাঘর তুলে কোনো রকমে বসবাস করছেন। অনেকে আবার এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন অন্যত্র। ভাঙন কবলিত মানুষেরা খুব বিপর্যয়ের মধ্যে জীবন যাপন করছে। তাদের পাশে কেউ নেই। এলাকার মানুষ বর্তমানে দুশ্চিন্তা ও হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন ।
এরই মধ্যে ভাঙন ঠেকাতে ব্লক দিয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন এলাকাবাসী। সম্প্রতি তারা নদীর তীরে মানববন্ধন করেছেন। এসময় এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, প্রভাবশালী কয়েকটি গ্রুপ অপরিকল্পিতভাবে মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে পানির স্রোত তীরে এসে আঘাত হানছে। তাই শুষ্ক মৌসুমেও নদীর ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে গেছে। স্থানীয়দের দাবি অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন বন্ধ করা হোক। পাশাপাশি কংক্রিটের ব্লকবাঁধ নির্মাণ করে নদীর ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
ভোলা পানি উন্নয়ন বিভাগ-১ নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জিয়াউদ্দিন আরিফ বাংলাভিশন প্রতিবেদককে বলেন, ভোলা সদর উপজেলা শিবপুরের ভাঙন সম্পর্কে পানি উন্নয়ন বোর্ড অবগত আছে। ইতিমধ্যেই উক্ত স্থানে জিও ব্যাগ ডাম্পিং এর কাজ শুরু করেছি। প্রটেকটিভ বা সিসি ব্লক এর টেকসই বাঁধ এর জন্য ৬ কিলোমিটার বেরি বাঁধ অন্তর্ভুক্ত করে একটি উন্নয়ন প্রকল্প বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা বলেন, এ শুকনো মৌসুমী মেঘনা যেভাবে ভাঙছে তাতে করে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি যে বর্ষা মৌসুম। গত কয়েক মাসে ৪ থেকে ৫০০ মিটার নদীরগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে আমাদের ঘরবাড়ি সব শেষ হয়ে গেছে। আমরা চাই, দ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ। না হলে ভোলা শহর রক্ষা করা হুমকি হয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, দ্বীপ জেলা ভোলায় চারপাশে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার কংক্রিটের ব্লকবাঁধ হয়েছে।
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: