ফুলে ফুলে সুসজ্জিত টাঙ্গাইলের ৪শ’ বছরের কবরস্থান
মৃত্যুর পর ইসলাম ধর্মের মানুষদের শেষ ঠিকানা কবরস্থান। যেখানে চিরনিদ্রায় থাকতে হবে। সেই কবরস্থানগুলোর বেশি ভাগই অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে থাকে। জন্মে নানা ধরণের আগাছা। তবে টাঙ্গাইলের এক প্রত্যন্তগ্রামের কিছু একদল তরুণ এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে পুরো কবরস্থানজুড়ে বিভিন্ন জাতের ফুল ও বৃক্ষরোপণ করে প্রশসংসায় ভাসছেন। কবরস্থানে এমন সুসজ্জিত ফুলের বাগান নজর কাড়ছে সকলের।
উদ্যোক্তারা বলছে, এই কবরস্থানটি ব্রিটিশ আমলের, ৪শ’ বছর পার করেছে। কবরস্থানটি আরও সুসজ্জিত করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তারা।
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ধুবড়িয়া কবরস্থান। কবরস্থানটি ব্রিটিশ আমলের তবে এটি নতুন করে ১৮৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। সে সময় মাত্র কয়েক শতাংশ জমি নিয়ে কবরস্থান গড়ে উঠলেও সময়ের সাথে সাথে জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। কিন্তু কবরস্থানটির তেমন দেখাশোনার কেউ ছিল না। জরাজীর্ণ অবস্থায় ও অযত্নে পড়ে ছিল। সম্প্রতি বছরখানেক আগে ধুবড়িয়া গ্রামের একদল তরুণ, যুবক এলাকাবাসীর সার্বিক ও আর্থিক সহযোগিতায় ধুবড়িয়া কবরস্থানের সৌন্দর্য বর্ধন করতে ‘সবাই মিলে একসাথে’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ধুবড়িয়া ব্রাদার্স নামে একটি সামাজিক সেচ্ছাসেবী ও সেবামূলক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন এলাকার তরুণ ও যুবকরা। তাদের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে এলাকাবাসীর আর্থিক সহযোগিতা কবরস্থানটি ফুলের গাছসহ প্রায় সাড়ে ৩’শ বৃক্ষরোপন করেন। এরমধ্য রোপন করা ফুলের গাছে ফুল উঠেছে। যা সকলের নজর কারাসহ মুগ্ধ করছে সকলকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কবরস্থানে রয়েছে জানাজার জন্য শেডঘর। এতে রয়েছে অজুখানা, লাইটিং, সিলিং ফ্যান এবং বাঁধানো টাইলস। এছাড়া প্রতি সপ্তাহের ন্যায় শুক্রবার কবরস্থানটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে সেচ্ছাশ্রমে সৌন্দর্য বর্ধনে কাজ করে তরুনরা। মুসুল্লিরা বলেন মৃত্যুর পর কবরস্থান হবে আমাদের আসল ঠিকানা। এখানেই চিরনিদ্রায় থাকতে হবে। তাই আমরা এলাকার একদল তরুণ ও যুবকদের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে কবরস্থানটির সৌন্দর্য বর্ধন করেছি। কবরস্থানটির ফুল বাগানের সৌন্দর্য দেখতে আশপাশসহ দূর-দূরান্তর থেকে অনেক মুসুল্লিরা ছুটে আসে।
ধুবড়িয়া ব্রাদাসের সদস্য ইয়ামিন বলেন, গ্রামের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে ২৪ পরবর্তী তার বন্ধুরা মিলে এই অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া কবরস্থানটির সৌন্দর্য বর্ধনসহ উন্নয়ন করতে এলাকার সকলকে নিয়ে ভালো কাজ করার নিয়ত করেন। এমন পরিকল্পনায় এলাকাবাসীর আর্থিক সহযোগিতা তাদের নেতৃত্ব এই কাজগুলো করা হয়। সৌন্দর্য বর্ধনের মূল কৃতিত্ব এলাকাবাসীর।
ধুবড়িয়া ফোরকানিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ শাজাহান তিনি বলেন এই কবরস্থানটি ব্রিটিশ আমলের। এলাকার তরুণ ও যুবকরা কবরস্থানটির সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করে যাচ্ছেন। এলাকাবাসীরা তাদেরকে সার্বিক ও আর্থিক সহযোগিতা করে আসছেন।
নাগরপুর উপজেলার ধুবড়িয়া গ্রামের এই কবরস্থানের মতো দেশের প্রতিটি কবরস্থান যদি এমনভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সৌন্দর্যবর্ধিত হয়ে ওঠে। তাহলে এটি হবে তরুণদের এক মহৎ উদাহরণ। সেচ্ছাসেবীরা চান- এমন মানবিক ও ইতিবাচক কাজে সমাজের বিত্তবানরাও এগিয়ে আসুক।
বিভি/এজেড




মন্তব্য করুন: