• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

তিন পার্বত্য জেলা

ভোটার তালিকা হালনাগাদ: সময় বৃদ্ধি ও শর্ত বাতিলের দাবি নাগরিক পরিষ

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ১৪:০৬, ৭ জুন ২০২২

ফন্ট সাইজ
ভোটার তালিকা হালনাগাদ: সময় বৃদ্ধি ও শর্ত বাতিলের দাবি নাগরিক পরিষ

ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে পার্বত্য চট্টগ্রামের (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবন)  জন্য দেওয়া অযৌক্তিক শর্ত বাতিল এবং ভোটার তালিকার জন্য সময়সীমা বৃদ্ধির দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে। 

মঙ্গলবার রাঙ্গামাটি শহরের রেইনবো কফি হাউজ এন্ড রেস্টুরেন্টে সাংবাদিক সম্মেলনের পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি কেন্দ্রীয় কমিটি মো. হাবিব আজমের পরিচালনায় এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নাগরিক কমিটি রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. সোলায়মান। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে নাগরিক পরিষদ জেলা শাখার সভাপতি মুহাম্মদ সাব্বির আহম্মেদ উপস্থিত ছিলেন। এসময় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। 

বক্তারা বলেন, নাগরিক পরিষদের এ দাবি মানা না হলে তিন পার্বত্য জেলার সকল গোষ্ঠীর নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, সিইসিকে বলবো এ আইনটি বাতিল করে হালনাগাদ ভোটার তালিকার সময়সীসা বৃদ্ধি করার দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া মানুষের অধিকার আদায়ের দাবিতে আন্দোলনরত সংগঠন “পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ” কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে সংগ্রামী শুভেচ্ছা রইলো। আপনারা জানেন গত ২০মে ২০২২ থেকে আগামী ৯জুন ২০২২ পর্যন্ত সারা দেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু হয়েছে। 

গত ২০ মে থেকে ৯ জুন পর্যন্ত সারা দেশের ন্যায় তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায়ও এ কার্যক্রম চলমান রয়েয়ে। কিন্তু আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে নতুন ভোটার নিবন্ধনের ক্ষেত্রে পার্বত্য এলাকার বাসিন্দাদের জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে আলাদা কিছু শর্ত দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে স্থায়ী বাসিন্দা প্রমাণের জন্য পৌরসভা বা ইউপি চেয়ারম্যানের সনদের বাইরে পাহাড়িদের প্রথাগত নেতৃত্ব হেডম্যান/কার্বারীর সনদ এবং জায়গার সনদ চাওয়া হয়েছে। এ কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর আমরা মাঠ পর্যায়ে খবর নিয়ে জানতে পারি, এ দুটি শর্তের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের বহু মানুষ ভোটার তালিকায় অন্তুর্ভুক্ত হতে পারছে না। কেননা স্থায়ী বাসিন্দার ক্ষেত্রে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সনদ পাওয়া গেলেও বেশিরভাগ মানুষের কাছে নিজস্ব রেকর্ডিয় জায়গা না থাকায় জায়গার সনদ নেই। জায়গা না থাকায় পাহাড়িদের প্রথাগত নেতৃত্ব হেডম্যান কার্বারীরাও এসব বাসিন্দাদের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে প্রত্যয়নপত্র/সনদ দিচ্ছে না। এ অবস্থায় বেশিরভাগ মানুষ নির্বাচন কমিশনের দেয়া এ দুটি শর্ত মানতে পারছে না বিধায় তারা ভোটার তালিকায় অন্তুর্ভুক্ত হতে পারছে না। অথচ বাদ পড়তে যাওয়া এসকল মানুষ ও তাদের আত্মীয় স্বজন দীর্ঘদিন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করে আসছে। এ পরিস্থিতির শিকার বেশিরভাগ মানুষ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত অ-উপজাতি তথা বাঙালি জনগোষ্ঠির। 

আপনারা জানেন, দীর্ঘ বছর ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বন্দোবস্তি বন্ধ রেখেছে সরকার। এ ছাড়াও স্থানীয় বিভিন্ন আইনের কারণে এখানে জমি বেচাকেনাতেও রয়েছে নানা জঠিলতা। এ কারণে এখানে দীর্ঘ সময় ধরে বসবাসরত বাঙালিদের খাস দখলীয় জমি থাকলেও তাদের জমির কোন রেকর্ডপত্র হাতে নেই। এখানে বসবাসরত বেশিরভাগ বাঙালি হতদরীদ্র ও ভূমিহীন। এছাড়াও স্থানীয় পাহাড়িদের নেতৃত্ব হেডম্যান/কার্বারীরা পাহাড়িদের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের চাপের মুখে বাঙালিদের স্থানীয় বাসিন্দার প্রত্যয়নপত্র দিতে রাজি হচ্ছেন না। এ অবস্থায় চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে নতুন করে বহু বাঙালি  বাসিন্দা ভোটার হওয়ার মতো নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয় বাঙালিদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

উল্লেখিত বিষয় বিবেচনা করে, চলমান ভোটর তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য আলাদা করে দেয়া শর্ত বাতিল করে এ অঞ্চলের হাল নাগাদ কার্যক্রমের সময়সীমা কমপক্ষে আরো ১০ দিন বাড়ানোর জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। আমাদের প্রত্যাশা স্বাধীন দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের ভোটার হওয়ার মতো মৌলিক অধিকার রক্ষায় বর্তমান নির্বাচন কমিশন সচেষ্ট হবে। অন্যত্থায় ভোটার হওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত পার্বত্যবাসীকে সঙ্গে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে। পরিশেষে অধিকার বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।

বিভি/এনডি/এইচএস

মন্তব্য করুন: