স্ত্রীর মামলায় পুলিশের ওসি ক্লোজড

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমানকে তার প্রথম স্ত্রীর অভিযোগে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আক্কেলপুর থানা পুলিশের পরির্দশক (তদন্ত) আব্দুল মালেককে ওসির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রথম স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় জেলা পুলিশের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। অব্যাহতি পাওয়া ওসি সাইদুর রহমান সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার লালুয়া মাঝিরা দিঘী সগুনা গ্রামের প্রয়াত কোরবান আলীর ছেলে।
জানা গেছে, ১৯৯৭ সালের ৩০ জুলাই তাড়াশ উপজেলার তাড়াশ বায়োয়ারি বটতলা গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে আম্বিয়া খাতুনকে বিয়ে করেন সাইদুর রহমান। তাদের সংসারে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু বিয়ের যৌতুকের জন্য স্ত্রীর প্রতি নির্যাতন করতেন সাইদুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ২০১৯ সালের ১২ জুন আম্বিয়া খাতুন বাদী হয়ে তার স্বামী সাইদুর রহমান ও দুই ভাসুরের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ একটি মামলা দায়ের করেন। এ সময় বিবাদীরা বাদীকে শান্তিপূর্ণ ঘর সংসার করার প্রলোভন দেখিয়ে আপোস-মীমাংসা করে নেয়। তখন বাদী মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন।
ওই মামলা প্রত্যাহারের পর আম্বিয়া খাতুনের ওপর আবার শুরু হয় অত্যাচার। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে তিনি আবারও ২০২১ সালের ৮ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় বিজ্ঞ আদালত গত জানুয়ারি মাসে আসামি মো. সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরও তিনি আক্কেলপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্ব পালন করেছেন। মামলা ও গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়টি জানাজানির পর বুধবার (৬ জুলাই) সাইদুর রহমান জামিনের রি-কল তাড়াশ থানায় জমা দেন।
তাড়াশ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম জামিনের রি-কলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে আক্কেলপুর থানা পুলিশের ওসি সাইদুর রহমানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং তাকে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে ওসি সাইদুর রহমানের ব্যক্তিগত ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। ক্ষুদে বার্তা (এসএমএস) পাঠালেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
আক্কেলপুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মালেক বলেন, ‘ওসি স্যার দশ দিনের ছুটিতে আছেন। শুনেছি তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং এই পদে আপাতত আমাকে ওসির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
মামলার বাদী মোছা. আম্বিয়া খাতুন বলেন, ‘আসামি আমার স্বামী হলেও তিনি আমার সঙ্গে অনেক অন্যায় করেছেন। আমাদের ভরণ পোষণ তো দেনই না, উল্টো তিনি আরেকটা বিয়ে করেছেন। আমি দীর্ঘ ১০-১২ বছর হলো আমার বাবার সংসারে আছি। বাবা খুব কষ্ট করে আমার ও আমার ১৬ বছর বয়সী মেয়ের দেখাশোনা করেন।’
বিভি/এনএ
মন্তব্য করুন: